আগামী দু’সপ্তাহ সর্ব স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। শনিবার সব জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী কয়েক দিন যে হেতু বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, সে কথা মাথায় রেখে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজে বাড়তি জোর দিতে বলেছে নবান্ন। প্রসঙ্গত, অক্টোবর শুরু হয়ে গেলেও, রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও কমার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। ডেঙ্গি আক্রান্ত বা তাতে মৃত্যুর খবরও আসছে হামেশাই। রাজ্য সরকারের তরফে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা স্পষ্ট করা না হলেও, প্রশাসনের সর্ব স্তরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সূত্রের খবর, এ দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে হওয়া ওই বৈঠকে ছিলেন পুরমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানসচিব ছাড়াও সেচ, বিপর্যয় মোকাবিলা, জনস্বাস্থ্য কারিগরি সচিব, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও কমিশনার, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, বিভিন্ন শাখার এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার-সহ এসডিও, বিডিও এবং থানার ওসি-আইসি-রা। বৈঠক শুরুর পরে ফোন-মাধ্যমে তাতে যোগ দেন মমতা। ডেঙ্গির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পরে মমতা জানান, পরবর্তী দু’সপ্তাহ সব পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের অফিসারদের নজরদারি চালাতে হবে।
ওই বৈঠকে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টিপাত চলতে পারে বলে যে-পূর্বাভাস আছে, তা মাথায় রেখে দেখতে হবে যাতে কোথাও জল না জমে। জল জমার সমস্যা যে সব এলাকায় রয়েছে, সেখানে বাড়তি নজর দিয়ে তা পরিষ্কার রাখতে হবে। শহুরে এবং গ্রামীণ এলাকায় নিয়মিত চালাতে হবে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রতিটি হাসপাতালে রক্তপরীক্ষা এবং চিকিৎসার বন্দোবস্ত যথাযথ রয়েছে কি না, নজরে রাখতে হবে তা-ও। চলতি পরিস্থিতিতে জেলা স্তরে এবং কলকাতা পুরসভায় সর্ব ক্ষণের কন্ট্রোল রুম চালুর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশাকর্মীদেরও কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, স্পেন সফরে থাকাকালীনই গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সব জেলার সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা। তিনি জানিয়েছিলেন, ১৬০টি সরকারি হাসপাতাল এবং ৯৮টি পুরসভা এবং পুরনিগমে ডেঙ্গি পরীক্ষা হচ্ছে। রক্ত এবং প্লেটলেটের পর্যাপ্ত জোগান থাকার দাবিও করেছিলেন তিনি। বিদেশ সফর সেরে কলকাতায় ফেরার পরে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও ডেঙ্গি-বৈঠক করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)