—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সিলিকোসিস শনাক্তকরণ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রাজ্যের নির্দিষ্ট কিছু এলাকাতেই বসত সরকারি শিবির। সেই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল রাজ্যের বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং আক্রান্তদের একাংশ। এ বার গোটা রাজ্যে, এমনকি উত্তরবঙ্গেও এই বিষয়ে নজর দেবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরেও বসানো হবে শিবির। এই নিয়ে মানুষকে সচেতন করবেন আশা কর্মীরা।
সিলিকোসিস হল বায়ুবাহিত রোগ। পাথর খাদান বা মার্বেলের কারখানায় যাঁরা কাজ করেন, মূলত তাঁদের হয় এই সিলিকোসিস। ফুসফুসে সিলিকা জমার ফলে হয় এই রোগ। এর ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কিডনি-সহ দেহের বিভিন্ন যন্ত্র বিকল হতে পারে। সাধারণত যেখানে খাদান থাকে, সেখানে এই রোগ বেশি ছড়ায়। সে কারণে, পুরুলিয়া, আসানসোল, বীরভূম, রামপুরহাট, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম এলাকায় শিবির করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেই শিবিরে আক্রান্তদের রোগ শনাক্তকরণের পাশাপাশি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পেনশন-সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির দাবি, রাজ্যের যে সব এলাকা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা খাদান বা মার্বেল কারখানায় কাজ করতে যান, তাঁদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ যথেষ্ট বেশি। যেমন দুই ২৪ পরগনা, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। এ সব জায়গা থেকে অনেকেই রাজস্থানে মার্বেল কারখানায় কাজ করতে যান। ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরাও আক্রান্ত হন সিলিকোসিসে। ওই এলাকাতেও নজর দেওয়ার দাবি তুলেছেন সংগঠনের সদস্যেরা।
এই রোগ এবং আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির দাবি ছিল, রাজ্যের সব জায়গাতেই স্বাস্থ্য শিবির করতে হবে। এই সংক্রান্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টে ওঠে। হাই কোর্টের নির্দেশেই বুধবার রাজ্যে স্বাস্থ্য, শ্রম এবং পরিবহণ দফতরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মামলাকারীরা। সেই দলে ছিলেন শান্তি, গণতন্ত্র, সংহতি মঞ্চের চার জন, গ্রামবাসীদের সংগঠন সিলিকোসিস আক্রান্ত সংগ্রামী শ্রমিক কমিটির চার জন, মামলাকারীদের আইনজীবী শামিম আহমেদ, নন্দিনী মিত্র। এ ছাড়াও ছিলেন আরও একটি মামলার আবেদনকারী পরিবেশ দূষণ পর্ষদের প্রাক্তন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। সেখানেই বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল, রাজ্যের সর্বত্র সিলিকোসিস রোগীদের জন্য শিবির করা হবে। এখন সাতটি জেলায় হয় শিবির। এর পর উত্তরবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যে হবে শিবির। মৃতদের পরিবারের ও জীবিত আক্রান্তদের, যাদের আবেদনপত্র এক বছর আগেই জমা করা রয়েছে, তাঁদের পেনশন আগামী এক মাসের মধ্যে শ্রম দফতর চালু করার বন্দোবস্ত করবে। সিলিকোসিস পরিচয়পত্র থাকা প্রতিটি শ্রমিকের নিখরচায় যাতায়াতের বন্দোবস্ত পরিবহণ দফতর করবে। বৈঠকের খসড়া সকল পক্ষকে পাঠানো হবে। সকলের মতামত সাপেক্ষে সেটি চূড়ান্ত করা হবে এবং আদালতে জমা হবে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্য অভিযান অনুদান দিচ্ছে। সেই টাকা এলেই কাজ শুরু হবে। আশা কর্মীরাও এই রোগ নিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy