E-Paper

এল আরও ৬৫ কোম্পানি, ধন্দ দ্বিতীয় দফা নিয়ে

পঞ্চায়েত ভোটে কোথায় কত বাহিনী থাকবে, বাহিনীকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে ইত্যাদির প্রাথমিক রূপরেখা এ দিন তৈরি করল কমিশন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ০৭:০৫
Central Force

কেন্দ্রীয় বাহিনীকে স্যালুট খুদের। বীরভূমের দুবরাজপুরের গোহালিয়ারা গ্রামে শুক্রবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

২২ কোম্পানি আগেই এসেছে। কলকাতা হাই কোর্ট অন্তত ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কথা বলার পরে শুক্রবার এল আরও ৬৫ কোম্পানি (গড়ে এক কোম্পানিতে ৮০-১০০ জন করে)।

রবিবারের মধ্যে আরও ২৫০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে এসে যাবে বলে আশা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোটে কোথায় কত বাহিনী থাকবে, বাহিনীকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে ইত্যাদির প্রাথমিক রূপরেখা এ দিন তৈরি করল কমিশন।

পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ২২, ৬৫ ও ২৫০— তিন লপ্তে মোট ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পৌঁছনোর পরেও দেখা যাবে, প্রয়োজনের তুলনায় তা বেশ কম। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় যে ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী কমিশন চেয়েছে, তা কবে আসবে কিংবা আদৌ আসবে কি না, সেই ধোঁয়াশা রাত পর্যন্ত কাটেনি।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্‌হা জানান, বিভিন্ন জেলায় মোট ৬৫ হাজার পুলিশকর্মী আছেন। আরও মোতায়েন করা হবে। বাড়তি কয়েক কোম্পানি বিশেষ বাহিনীও (স্পেশ্যালাইজড ফোর্স) রাজ্য দিচ্ছে।

কমিশন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, তা প্রাথমিক ভাবে এলাকায় টহলদারি, ভোটারদের আস্থা বাড়ানো, নাকা চেকিং, সীমান্ত ও সীমানার চেক-পয়েন্টে নজরদারির মতো বিভিন্ন কাজে মোতায়েন হবে।

এ দিন রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম, এডিজি (সশস্ত্র পুলিশ) তথা রাজ্যের তরফে বাহিনী সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার রাজেশ যাদব এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজীব। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশের সমন্বয়ের বিষয়ে কথা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত কত বাহিনী দিচ্ছে, তা দেখে বুথে মোতায়েন চূড়ান্ত হবে। প্রসঙ্গত, মনোনয়ন-পর্বে হিংসার কারণে ইতিমধ্যেই একাধিক বার আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কমিশনকে। হতে হয়েছে ভর্ৎসিতও। এই অবস্থায় আদালতের আগামী শুনানির আগে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার বার্তা দিল কমিশন। সূত্রের দাবি, ভোটে নজরদারি থেকে নিরাপত্তা— কোনও বিষয়ে যাতে খামতি না থাকে, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনিক মহল জানাচ্ছে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে। জেলাগুলিকে বলা হয়েছে, ভোটের দিনের আগে সেই পরিকাঠামো নিশ্চিত করতে। জেলা প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রেই সিসি-ক্যামেরার নজরদারি থাকবে। কোথাও তা একান্ত বসানো না গেলে, ভোটপ্রক্রিয়া ভিডিয়ো করে রাখা হবে।

এখনও পর্যন্ত যে পরিকল্পনা, তাতে জেলায়-জেলায় মোতায়েন হওয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পথ দেখাবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসন। সে কাজে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে তা নিয়েও। পাশাপাশি, বাহিনীর জওয়ানদের থাকা, যাতায়াতের ব্যবস্থাও রাখতে হবে জেলাগুলিকে।

কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এ বার রাজ্যের ১৫৬৬টি বুথ পুরোপুরি মহিলা পরিচালিত। রাজ্যে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যার (৬১,৬৩৬) প্রায় ২.৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আসা মোট ১৩০০টি অভিযোগের মধ্যে ১২০৬টির নিষ্পত্তি হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘যে বাহিনী এসেছে, তাদের যথাযথ মোতায়েনের তথ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তা হলে কি এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে দাঁড়িয়ে থাকবে?’’

পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দলের আইনজীবী সেলের সভায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর কথায়, ‘‘সাংবিধানিক ব্যবস্থা অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায় না। স্বশাসিত সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন কি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল? তা না হলে, কোন আইন বা সংবিধানের ধারায় সেটি করতে কমিশনকে বাধ্য করা হল? এটা মৌলিক প্রশ্ন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 central force West Bengal State Election Commission

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy