E-Paper

‘কন্যাশ্রী’-দের ফর্ম পূরণ, রিপোর্ট তলব রাজ্যের

জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, সমাজকল্যাণ দফতরকে দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ‘কন্যাশ্রী’ বা নাবালিকাদের ফর্ম পূরণে সাহায্য করার বিষয়ে জেলা প্রশাসন নির্দেশ দেয়নি। শিক্ষিত মেয়েরা স্থানীয় স্তরে পরিজন, পড়শিদের সাহায্য করছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি মন্তব্য করতে চাননি।

সৌমেন দত্ত , সুদিন মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:৩০

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) গণনাপত্র পূরণে সাহায্যের জন্য নাবালিকা ‘কন্যাশ্রী’-দের কাজে লাগানো নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চাইল রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতর। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দফতরের সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ এ নিয়ে বিশদ রিপোর্ট চান। জেলা প্রশাসন তা পাঠিয়েছে। তবে এ দিনও ভাতারের দু’-একটি এলাকায় ‘কন্যাশ্রী’-দের এসআইআর ফর্ম পূরণে বাসিন্দাদের সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে। আবার অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, প্রশাসনের তরফে এ দিন ছাত্রীদের এ কাজে না পাঠানোর মৌখিক নির্দেশ এসেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, সমাজকল্যাণ দফতরকে দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ‘কন্যাশ্রী’ বা নাবালিকাদের ফর্ম পূরণে সাহায্য করার বিষয়ে জেলা প্রশাসন নির্দেশ দেয়নি। শিক্ষিত মেয়েরা স্থানীয় স্তরে পরিজন, পড়শিদের সাহায্য করছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “কেউ যদি স্বেচ্ছায় ফর্ম পূরণ করে দেন ও ভোটারের যদি তাতে আপত্তিনা থাকে, সমস্যার কিছু নেই। শিক্ষিত ছেলেমেয়ে, প্রতিবেশীরাই তো সাহায্য করবেন। তবে কমিশনের নিয়ম যাতে লঙ্ঘন না হয়, সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক ইআরও, এইআরও-কে।”

তবে ভাতারের আমারুন ১ পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামে এ দিন দুপুরেও চার ‘কন্যাশ্রী’ ছাত্রীকে নিয়ে দুই শিক্ষককে ফর্ম পূরণে সহায়তায় বেরোতে দেখা যায়। শিক্ষকদের দাবি, তখনও তাঁদের কাছে ছাত্রীদের এ কাজে নিয়ে না যাওয়ার নির্দেশ আসেনি। গ্রামের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে ফর্ম পূরণ করে ছাত্রীরা। এলাকাবাসী জানান, গ্রামে প্রায় দু’হাজার ভোটার। দু’জন বিএলও এবং দু’জন বিএলএ-র পক্ষে সবাইকে সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে না। এলাকার মন্দিরা কাজি, মনোয়ারা বিবিদের কথায়, “৫ দিন ধরে ফর্ম পূরণের জন্য ঘুরেছি। স্কুলের মেয়েরা করে দেওয়ায়, চিন্তামুক্ত হলাম।”

ফর্ম পূরণে সাহায্যে বেরোনো দুই ছাত্রীর অভিভাবকের দাবি, “মেয়েরা উপযুক্ত হয়েছে বলেই স্কুল ও ব্লক প্রশাসন তাদের কাজে লাগিয়েছে। নাবালিকা বিয়ে বন্ধ-সহ সামাজিক নানা কাজেও তো ওদের সাহায্য নেওয়া হয়।” প্রশাসন সূত্রে খবর, ভাতার ব্লকে গত বছরে প্রায় একশো নাবালিকার বিয়ে রোখা হয়েছে। তারমধ্যে ৬০টির খবর দিয়েছে ‘কন্যাশ্রী’রা।১৪টি ক্ষেত্রে তারাই পুলিশের সঙ্গে গিয়ে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করিয়েছে।

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, “যাদের নিজেদেরই ভোটাধিকার হয়নি, সেই নাবালিকাদের গণনাপত্র পূরণের কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকার রাজনৈতিক স্বার্থপূরণের চেষ্টা করছে।” জেলা তৃণমূলেরনেতা দেবু টুডুর পাল্টা দাবি, “জনজাতিপ্রধান এলাকায় লেখাপড়া না জানা কাউকে যদি পড়শি মেয়েটি সাহায্য করে, সেটা কি রাজনীতি? কন্যাশ্রী বা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সাহায্য করতেই পারেন। পরস্পরের পাশে না দাঁড়ালে এত কম সময়ে এত বড় রাজ্যে এসআইআর হবে কী ভাবে!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision Bardhaman School students Social Welfare Department

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy