গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
উচ্চ মাধ্যমিকের একাধিক বিষয়ের পাঠ্যক্রম (সিলেবাস) নিয়ে পড়ুয়া থেকে শিক্ষকদের মধ্যে ‘অসন্তোষ’ দেখা গিয়েছিল। নতুন সিমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে সিলেবাস তৈরি করেছিল, তা নিয়ে পড়ুয়ারা অনেক ক্ষেত্রেই অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছিল। শুধু পড়ুয়ারা নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ক্লাসে সিলেবাসের কিছু অংশ বোঝাতে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছিলেন। সেই সব কথা মাথায় রেখেই এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে কিছু পরিবর্তন করল সংসদ। ইংরেজি, বাংলা-সহ মোট ১৯টি বিষয়ের সিলেবাসে বদল আনা হয়েছে।
সংসদের তরফে বলা হয়েছে, ইংরেজির ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় সিলেবাসে যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলগুলিকে বলা হয়েছে তারা যে বিষয়বস্তুগুলো কঠিন মনে করছে সেগুলিকে বাদ দিয়ে এই বিষয়গুলি পড়াতে পারে। প্রশ্নপত্রে সব বিষয়বস্তু থেকেই প্রশ্ন থাকবে। পরীক্ষার্থীরা বাছাই করে উত্তর দিতে পারবে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু পরিবর্তন করেছে সংসদ। তেমনই ইতিহাসে বেশ কিছু বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
যে ১৯টি বিষয়ের সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলি হল, ইংরেজি এ, ইংরেজি বি, অল্টারনেটিভ ইংলিশ, বাংলা এ, হিন্দি এ, হিন্দি বি, ইতিহাস বি, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অ্যাকাউন্টেন্সি, কস্টিং এবং ট্যাক্সেশন, বিজ়নেস স্টাডিজ়, এডুকেশন, সায়েন্স অফ ওয়েল- বিয়িং, স্ট্যাটিস্টিক, দর্শন, পরিবেশ বিদ্যা, ইকনমিক্স, ভূগোল এবং বায়োলজিক্যাল সায়েন্স। সিলেবাস পরিবর্তন প্রসঙ্গে সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন অসুবিধার কথার ভিত্তিতে সিলেবাসের সামান্য কিছু পরিমার্জন করা হয়েছে। যাতে নয়া পদ্ধতিতে সুবিধা হয়।’’
পাঠ্যক্রমে থাকা একাধিক বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, পাঠ্য বইতে এমন কিছু বিষয় বাছা হয়েছে, প্রথম সারির ছাত্রছাত্রীরাও যা পড়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারাচ্ছে। অনেক বিষয়বস্তু আবার প্রাসঙ্গিক না হওয়ায় ক্লাসে পড়াতে সমস্যা হচ্ছে। তার পরই সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ শুরু করে সংসদ। অবশেষে সেই পরিবর্তন কার্যকর করার কথা জানাল সংসদ।
সিলেবাসে বদল করা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, ইংরেজি-সহ বেশ কিছু জায়গায় কোনটা কঠিন কোনটা কঠিন নয়, তা স্কুলগুলিকে বাছাই করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে এমনই নির্দেশ দিয়েছে সংসদ। যার ফলে সারা রাজ্যে পড়ুয়াদের এক সিলেবাস থাকবে না। স্কুল নিজের মতো বাছাই করে পড়াবে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘সিলেবাস পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আমরা লিখিত ভাবে কাউন্সিল সভাপতির কাছে পরিবর্তনের যে সাজেশন রেখেছিলাম, সেগুলির অনেকটাই মান্যতা পেয়েছে। যদিও একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে ইংরেজির বিষয়ে বিদ্যালয়গুলিকে পছন্দ মতো তিনটি টপিক বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে সারা রাজ্যে একই ধরনের সিলেবাস থাকছে না।’’
শিক্ষকমহলের এক অংশের বক্তব্য, দ্বাদশ শ্রেণির একটি নাটক বাতিলের জোরালো দাবি উঠেছিল। পরিবর্তিত সিলেবাসে সেই নাটকটি রাখা হয়নি। তবে তার পরিবর্তে অন্য মনোগ্রাহী নাটক দেওয়া হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন হয়েছে। যদিও তা আশানুরূপ নয়। ইতিহাসের সিলেবাসের বোঝা কিছুটা কমানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy