Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Durga Puja 2022

Durga puja 2022: দুর্গাপুজোর পাট চুকিয়ে ফেলছে রাজ্য বিজেপি, নিয়মরক্ষায় তৃতীয় বারের পুজোই শেষ অঞ্জলি

বিধানসভা ভোটের আগে ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হয়। গত বছরেও অনেক বিতর্কের শেষে হয়েছিল পুজো। তবে এ বার আর বিতর্ক চাইছে না গেরুয়া শিবির।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র। শাটারস্টক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ১৬:১৬
Share: Save:

পুজো হবে। তবে নমো-নমো করে। বাংলায় নমো (নরেন্দ্র মোদী)-র দলের দুর্গাপুজো এ বার শুধুই রীতি রক্ষার জন্য। এমনটা জানা গিয়েছে বিজেপি সূত্রে। উমাকে ঘিরে উৎসব নয়, ধর্মীয় রীতি মেনে তৃতীয় বারের উমা আরাধনা যে করা হবে, সে সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তবে সে ভাবে প্রস্তুতি শুরু হয়নি। এ প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পুজো হবে। তবে তা নিয়ে এখনও আমরা আলোচনা করিনি। সাংস্কৃতিক সেলের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলে সব ঠিক করা হবে।’’

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আসলে কিছুটা ‘বাধ্যবাধকতা’ থেকেই দুর্গাপুজোয় উদ্যোগী হতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। হিন্দু লোকাচারে এমন রীতি চালু রয়েছে যে, কোনও ব্রত বা পুজো এক বার পালন করলে পর পর তিন বার করতে হয়। এটাকে ‘উদ্‌যাপন’ বলা হয়। হিন্দুত্বের রাজনীতি করা বিজেপি শিবির সেই রীতি ভাঙতে চাইছে না। তাই এ বার পুজো হলেও তা উৎসবের মেজাজে নয়, হবে উদ্‌যাপনের রীতি পালনের তাগিদে।

পুজোর শুরুটা হয়েছিল ২০২০ সালে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপিতে তখন কোনও কিছুতেই উৎসাহের অভাব ছিল না। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সে বার পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে স্বপ্নপূরণ না হওয়া বিজেপি ২০২২ সালেই নমো-নমো করে পুজো সারে। সেটুকু হওয়া নিয়েও একটা সময় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। অনেক বিতর্কও হয়। সব শেষে বিতর্ক চাপা দিতেই পুজো হয়।

আসলে পুজোর শুরুতে যাঁরা উদ্যোগী হয়েছিলেন তাঁদের তিন জনই এখন রাজ্য বিজেপিতে অনুপস্থিত। প্রধান উদ্যোগী ছিলেন তখন বিজেপিতে থাকা সব্যসাচী দত্ত এবং মুকুল রায়। দু’জনেই বিধানসভা ভোটের পর পরই তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। ওই দুই নেতাকে পুজো করার ছাড়পত্র দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির তৎকালীন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সম্প্রতি তিনিও ‘দায়িত্ব মুক্ত’ হয়েছেন। তাঁর জায়গায় আসছেন কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল।

গত বছর পুজোর সময়েও কৈলাস বাংলার দায়িত্বে ছিলেন। তবে সেটা খাতায়কলমে। ভোটে ভরাডুবির পরে সে ভাবে আর তাঁকে রাজ্যে দেখা যায়নি। যে বার পুজো শুরু হয়, সে বার তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পুজোর বিপক্ষে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, পুজোর আয়োজন করা রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। তিনি চেয়েছিলেন, উৎসবের সময় সমাজের সঙ্গে মিশে থাকুন নেতারা। তবে সেই ‘কৈলাস-যুগ’-এ দিলীপের কথা গুরুত্ব পায়নি। বরং, ঢাকঢোল পিটিয়ে পুজো হয়। ভোটের আগে বাঙালির মন জয় করতে বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (ইজেডসিসি)-এ সেই পুজোয় দিলীপ ছাড়া প্রথম সারির সব নেতাকেই দেখা গিয়েছিল। ভিড় লেগেছিল পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সময়। কেউ ঢাক বাজিয়েছিলেন, কেউ আরতিতে অংশ নিয়েছিলেন।

গত বার পুজোর আগে বিজেপি শিবির খুবই বিমর্ষ ছিল। ভবানীপুর-সহ বিভিন্ন উপনির্বাচনে হারের পর পরই ছিল পুজো। নতুন সভাপতি হয়ে আসেন সুকান্ত। পুজো হবে কি হবে না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত পুজো হয়েছিল। প্রথম বার পুজোর সঙ্কল্প করা হয়েছিল তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। ২০২১ সালেও তাই হয়। কিন্তু এখন প্রতাপও রাজ্য কমিটিতে নেই। এ বার তাই প্রতাপের নামেই সঙ্কল্প হবে কি না, তা-ও এখনও ঠিক হয়নি। আসলে এখনও কোনও প্রস্তুতিই শুরু হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE