Advertisement
E-Paper

মোদীকে পরপর ৩টি চিঠি, মমতার দাবি ১০ হাজার কোটি

একটা সময় ছিল, যখন মাসুল সমীকরণ নীতি প্রত্যাহারের দাবিতে সরব ছিল বামফ্রন্ট। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলতেন অশোক মিত্র থেকে অসীম দাশগুপ্ত।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ০৩:৫৮
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বঞ্চিত পশ্চিমবঙ্গ।

একটা সময় ছিল, যখন মাসুল সমীকরণ নীতি প্রত্যাহারের দাবিতে সরব ছিল বামফ্রন্ট। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলতেন অশোক মিত্র থেকে অসীম দাশগুপ্ত। রাজ্যের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ ছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মস্ত রাজনৈতিক হাতিয়ার।

এখন সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ রাজ্যের প্রাপ্য ৯৯৫৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পরপর তিনটি চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, প্রাপ্য টাকা অবিলম্বে দেওয়া হোক পশ্চিমবঙ্গকে। কিছু দিন আগে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দিল্লি এসেছিলেন। তিনি তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করে দ্রুত ওই টাকা দেওয়ার আর্জি জানান। অমিত বলেন, ‘‘এমনিতেই কেন্দ্রের সার্বিক আর্থিক বঞ্চনার নীতি রয়েছে। রাজস্ব সংগ্রহের কাঠামো পরিবর্তনের দাবিও তুলেছি। কিন্তু এখন যে ৯ হাজার ৯৫৮ কোটির দাবি তোলা হচ্ছে, সেটি হল প্রকল্পভিত্তিক প্রাপ্য টাকা।’’

এই না-পাওয়ার তালিকাটি ১৬টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন, রাজ্যের কাজ (পারফরম্যান্স)-এর ভিত্তিতে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ ৬০৯ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। সর্বশিক্ষা অভিযানের ৩ হাজার ৮৩০ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। মিড ডে মিলের ৭৯০ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা।
একই ভাবে জাতীয় শহর জীবিকা মিশন থেকে খাদ্যের ভর্তুকি, স্বচ্ছ ভারত, শিশু সুরক্ষা বা অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন— টাকা দেওয়া হয়নি অধিকাংশ খাতেই।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর স্বীকার করে নিয়েছে, অর্থ কমিশনের সুপারিশ মাফিক টাকা পায়নি অনেক রাজ্যই। কিন্তু ওই টাকা নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে তার নিষ্পত্তি না হওয়ায় টাকা আটকে রয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ প্রাপ্য টাকা প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রেই রাজ্যগুলির কাছ থেকে খরচের শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) না মেলায় পরবর্তী পর্যায়ের টাকা পাঠাতে সমস্যা হয়। এ নিয়ে বিতণ্ডা বেধেছিল তেলুগু দেশমের সঙ্গেও। অমিত মিত্র যদিও বলেছেন, ‘‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমস্ত অর্থ খরচের শংসাপত্র নিয়মিত পাঠায়।’’

এটা স্পষ্ট যে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা বড় হাতিয়ার হতে চলেছে মমতার। মমতা যখন এনডিএ মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছিলেন, তখন জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য আর্থিক প্যাকেজ দাবি করেছিলেন মমতা। তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রমোদ মহাজন এবং প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের অধিকর্তা সুধীন্দ্র কুলকার্নি ‘বেঙ্গল প্যাকেজ’ তৈরি করেন। তার পরে ব্রিগেডের সভায় বেঙ্গল প্যাকেজের ঘোষণা করেছিলেন মহাজন। এ বার মমতার দাবি প্রায় দশ হাজার কোটি। ২১ জুন তৃণমূলের কোর গ্রুপের বৈঠক। তার পরে রয়েছে ২১ জুলাইয়ের জনসভা। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে মমতা সে দিন চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিতে চলেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

State Government Mamata Banerjee Finance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy