Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফেল-জট কাটাতে দুই প্রস্তাব রাজ্যের

ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের বক্তব্য, নতুন নিয়মের ব্যাপারটা তাঁরা জানতেনই না!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৫:৪৩
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় রেকর্ড ফেল নিয়ে কয়েক দিনের বিক্ষোভের পরে সমাধানসূত্র হিসেবে দু’টি প্রস্তাব দিচ্ছে উচ্চশিক্ষা দফতর। প্রথমত, পার্ট-১ পরীক্ষায় যাঁরা ফেল করেছেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হোক। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষার নতুন বিধি চলতি বছরে চালু না-করে আগামী বছর থেকে বলবৎ হোক। এই জোড়া প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে।

বিএ পার্ট ওয়ানে এ বার অর্ধেক পরীক্ষার্থীও পাশ করতে পারেননি। ২০১৬ সালের পরীক্ষায় বিএ-তে পাশের হার ছিল ৭৫ শতাংশ। এ বার সেটা নেমে এসেছে ৪২.৫০ শতাংশে। বিজ্ঞানে পাশের হার ৮৫ থেকে কমে হয়েছে ৭১ শতাংশ। সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ৪০ হাজার। সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার প্রস্তাবে সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। তবে অন্য প্রস্তাব নিয়েও আলোচনার সুযোগ আছে। যদিও শিক্ষা শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, নতুন যে-বিধি অনুযায়ী পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে, সেটির রূপায়ণ এক বছর পিছিয়ে দেওয়া কী ভাবে সম্ভব?

ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের বক্তব্য, নতুন নিয়মের ব্যাপারটা তাঁরা জানতেনই না! ‘‘ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ সম্পর্কিত সব ব্যাপারেই উচ্চশিক্ষা দফতর সহানুভূতিশীল। তবে সর্বত্রই নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা করাটাও সরকারের দায়িত্ব,’’ বুধবার বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্ট ওয়ানের শোচনীয় ফল ঘোষণার পরেই উপাচার্য এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ডেকে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা সূত্রের খবর, অকৃতকার্য পড়ুয়াদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া যায় কি না সেই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কথা হয়েছিল।

পুরনো নিয়মে অনার্সের কোনও পরীক্ষার্থী জেনারেলের দু’টি বিষয়ের মধ্যে একটিতেও পাশ না-করলেও পরের ধাপে তুলে দেওয়া হত। পরে সাপ্লিমেন্টারি দিয়ে পাশ করতে হত সেই পড়ুয়াকে। কিন্তু ২০১৬ সালের নতুন নিয়মে অনার্স পড়ুয়ার জেনারেল বিষয়ে পাশ করা বাধ্যতামূলক। পুরনো নিয়মে জেনারেলের কোনও পড়ুয়া তিনটির মধ্যে একটি বিষয়ে পাশ করলেই তাঁকে পরের ধাপের যোগ্য ধরে নেওয়া হত। পরে দিতে হত সাপ্লিমেন্টারি। কিন্তু নতুন নিয়মে তিনটি বিষয়ের মধ্যে অন্তত দু’টি বিষয়ে পাশ করা বাধ্যতামূলক। এই শর্ত যাঁরা পূরণ করতে পারেননি, তাঁদেরই আটকে দেওয়া হয়েছে। তাই পাশের হার কমেছে ভীষণ ভাবে।

পড়ুয়ারা কেন তিনটি বিষয়েই পাশ করবেন না, আগেই সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। অকৃতকার্যদের পাশ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ভাসিয়ে দেওয়া উচিত নয় বলেই তাঁর অভিমত। কিন্তু যে-অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, বিকাশ ভবন তাতে ভীষণ উদ্বিগ্ন। সেই জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়কে জোড়া প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Pass Fail শিক্ষা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE