E-Paper

‘দাপট’ জাল লটারির, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমে দিকে ঝাড়খণ্ড থেকে জাল লটারির টিকিট জেলায় ঢুকত। তবে এখন জেলার অনেকেই এতে হাত পাকিয়েছেন।

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৭
মুরারই থানায় মাসখানেক আগে আটক হওয়া জাল টিকিটের ছবি। নিজস্ব চিত্র

মুরারই থানায় মাসখানেক আগে আটক হওয়া জাল টিকিটের ছবি। নিজস্ব চিত্র

বৈধ লটারির থেকে টিকিটের থেকে দাম কম। প্রথম পুরস্কারের অর্থমূল্য বৈধ লটারির থেকে অনেক কম হলেও পরের ধাপের পুরস্কারগুলির অর্থমূল্য বেশি। পাশাপাশি, বিক্রেতাদের কমিশন বৈধ লটারির প্রায় দ্বিগুণ। এ সব কারণে নলহাটি-সহ জেলা জুড়ে অবৈধ লটারির টিকিট বিক্রি বাড়ছে বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ প্রশাসন থেকে জানান হয়েছে, নিয়মিত অবৈধ লটারির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়।

লটারির টিকিট বিক্রেতারা জানান, স্থানীয় ভাষায় অবৈধ লটারিকে ‘এটিএম’ বলে। বৈধ লটারির মতোই একই ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে অবৈধ লটারির টিকিট ছাপানো হয়। সরকার অনুমোদিত লটারির দিনে তিনটি খেলা হয়— দুপুর ১টা, সন্ধ্যা ৬টা ও রাত ৮টা। সেই খেলার ফলাফল দেখে অবৈধ লটারির পুরস্কারও দেওয়া হয়।

স্থানীয়েরা জানান, বৈধ লটারির সর্বোচ্চ পুরস্কার এক কোটি টাকা হলেও অবৈধ লটারির সর্বোচ্চ পুরস্কার কুড়ি হাজার টাকার মতো। তবে এর পরের ধাপের পুরস্কারগুলি বৈধ লটারির থেকে বেশি অর্থমূল্যের। সাধারণত, এ ধাপেই বেশি সংখ্যায় লোক পুরস্কার পান। ফলে, অবৈধ লটারির টিকিট কিনলে বেশি অর্থমূল্যের পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর সঙ্গে বিক্রেতাদের দ্বিগুণ কমিশনের ‘টোপ’ও দেওয়া হচ্ছে।
ফলে, অবৈধ লটারির টিকিট বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর বিরুদ্ধে কয়েক বার পুলিশি অভিযানও হয়েছে। তাই অবৈধ লটারির বিক্রেতারা কৌশল বদলে ফেলেছেন বলে অভিযোগ।

প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমে দিকে ঝাড়খণ্ড থেকে জাল লটারির টিকিট জেলায় ঢুকত। তবে এখন জেলার অনেকেই এতে হাত পাকিয়েছেন। জেলায় অবৈধ লটারির টিকিট ছাপা হচ্ছে বলে অভিযোগ। নির্দিষ্ট সময়ে গোপনে বিক্রেতাদের হাতে জাল লটারির টিকিট তুলে দেওয়া হচ্ছে। নানা হাত ঘুরে বিক্রেতারা জাল লটারির টিকিট পাচ্ছেন। পুরস্কারের অর্থও অন্যদের হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।

পুলিশের দাবি, ধরপাকড়ের ফলে প্রকাশ্যে আর জাল লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। গোপনে চেনা ক্রেতার কাছেই জাল লটারির টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। গত দু’মাসে মুরারই, পাইকর, নলহাটি-সহ জেলার বেশ কয়েকটি থানা জাল লটারি বিক্রেতাদের গ্রেফতার করেছে। তার পরে অনেকেই সতর্ক হয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নভেম্বরে মুরারই থানায় জাল লটারির টিকিট বিক্রির অভিযোগে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে এতেও জাল লটারির টিকিট বিক্রি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।

লটারি বিক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, যে সমস্ত বিক্রেতারা জাল লটারি বিক্রি করছেন না তাঁদের টিকিট বিক্রি অর্ধেক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাল টিকিটে বেশি পুরস্কার জুটছে বলে অনেকেই কিনছেন। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব ক্ষতিও হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দিন কয়েক আগেও মুরারই থানা এক টিকিট বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে। জেলা জুড়ে জাল টিকিট বন্ধের জন্য অভিযান চলছে। ঝাড়খণ্ড সীমানায় বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy