Advertisement
E-Paper

পাতে কালো কচিপাঁঠা জোগান দিতে চুক্তিচাষ

রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, প্রথম ধাপে হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার ২০০ চাষিকে ১০টি করে মাদি ছাগল এবং একটি করে পাঁঠা দেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:২২
Share
Save

স্বাস্থ্যসচেতনতার তাগিদে ‘রেড মিট’ এড়ানোর হিড়িক বাড়ছে ঠিকই। তবে এখনও রবিবারের পাতে কালো কচিপাঁঠার ঝোল না-পেলে অনেক বাঙালিরই রসনা অতৃপ্ত থেকে যায়।

সেই অতৃপ্তি দূর করতে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ বা বাংলার কালো কচিপাঁঠার মাংস ঢালাও জোগান দেওয়ার আয়োজন করছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিগম। অল্পবিস্তর এখনও পাওয়া যায়। তবে তা যথেষ্ট নয়। তাই গ্রামাঞ্চলের চাষি পরিবারের সঙ্গে চুক্তিচাষের মাধ্যমে ওই পাঁঠার জোগান বাড়াতে চাইছে নিগম। তাদের দাবি, আগামী বছর থেকে হরিণঘাটার প্রতিটি বিপণন কেন্দ্রেই ক্রেতারা যত চান, তত পাবেন বাংলার কালো কচিপাঁঠার মাংস।সুস্বাদু তো বটেই। আবার চর্বি কম বলে স্বাস্থ্যসচেতন রসনারসিক বাঙালির কাছে এই পাঁঠার মাংসের কদর চিরকালের। কিন্তু গ্রামবাংলায় এই পশুটি পোষার আগ্রহ কমে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় জোগানে ভাটা চলছে। তাই নিগমকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, পাঁঠার জোগান বাড়াতে চুক্তিচাষে নামতে হবে। পরে সেই পাঁঠা চাষিদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে বিক্রি করা হবে হরিণঘাটার ২২৬টি বিপণন কেন্দ্রে। দাম ঠিক করা হবে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই।

রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, প্রথম ধাপে হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার ২০০ চাষিকে ১০টি করে মাদি ছাগল এবং একটি করে পাঁঠা দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রজনন থেকে বাচ্চা লালনপালনের জন্য খাবার, ওষুধ, টিকা, বিমা— সব কিছুরই ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। আরও বেশ কিছু জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানেও ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ প্রজাতির বাচ্চা দেওয়ার কাজ শুরু হবে, যাতে জোগান আরও বাড়ে।

লম্বকর্ণ ঠিকুজি

• বিচরণ পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওডিশায়।

• চেহারা ছোট, তবে শক্তসমর্থ।

• কালো, সাদা, খয়েরিও হয়।

• পা ছোট, শিং থাকে।

• দুধ ও মাংস পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ।

• চামড়া বেশ দামি।

• প্রতিটি পাঁঠায় মাংস ১১-১২ কেজি।

শুধু মাংস নয়, ‘বেঙ্গল গোট’ প্রজাতির ছাগলের দুধ ও চামড়ার চাহিদা বরাবরই বেশি। সেই জন্য বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিতে গরুর মতোই কদর ছিল এই ছাগলের। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমানের মতো কিছু জেলায় ঘরে ঘরে এই ছাগল পোষা হত। হাঁস-মুরগি পোষার মতো সে অভ্যাসটাই ফিরিয়ে আনতে চাইছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌরীশঙ্কর কোনার জানাচ্ছেন, বাংলার কচিপাঁঠার মাংস জোগান দেওয়ার জন্য হরিণঘাটায় দুই একর জমিতে তিন কোটি টাকা খরচ করে আলাদা পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। সেখানে এক দিনে ৩০০ পাঁঠা কেটে মাংস প্রক্রিয়াকরণের কাজ হবে।

‘রেড মিট’ বিশেষ স্বাস্থ্যবান্ধব নয় বলেই চিকিৎসকদের অভিমত। তবে ডায়েটিশিয়ান রেশমি রায়চৌধুরীর মতে, মানবদেহে ক্ষতি করে, এমন উপাদান (‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’) কচিপাঁঠার মাংসে তুলনামূলক ভাবে কম থাকে বলে তা নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া যেতেই পারে। বিভিন্ন বাজারে এখন বিহার, উত্তরপ্রদেশের বড় রেওয়াজি খাসি (বিতল, যমুনাপারি ইত্যাদি প্রজাতির) বিক্রি হয়। ফলে মোটা চর্বিযুক্ত খাসির মাংস খেতেই বাঙালি অভ্যস্ত। সেই জায়গায় বাংলার মাঠেঘাটে চরে বেড়ানো কচিপাঁঠার মাংস পাতে ফিরিয়ে দিতে চাইছে নিগম। তাদের আশা, এতে বাঙালির রসনাতৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাংলার অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্যও অংশত পূরণ হবে।

State Government Bengal Black Goat Red Meat ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}