Advertisement
E-Paper

স্কুল চালাতে কেন্দ্রে টাকার আর্জি রাজ্যের

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রের খবর, রাজ্য শীঘ্রই এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখছে। সেই চিঠিতে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া-পিছু বছরে কমপক্ষে ৯৬০ টাকা বরাদ্দ করার দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রথম চারটি শ্রেণিতে পড়ুয়াদের কাছে থেকে টাকা নেওয়া বারণ। পরের শ্রেণিগুলিতে নেওয়া হয় যৎসামান্য টাকা। ভাঁড়ার শূন্য। অথচ নিত্যনতুন হরেক রকম খরচ বেড়েই চলেছে স্কুলের। এই অবস্থায় স্কুলে পঠনপাঠন চালানোর খরচ জোগাতে কেন্দ্রের কাছে টাকা চাইছে রাজ্য সরকার।

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রের খবর, রাজ্য শীঘ্রই এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখছে। সেই চিঠিতে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া-পিছু বছরে কমপক্ষে ৯৬০ টাকা বরাদ্দ করার দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই টাকা না-পেলে স্কুলের দৈনন্দিন কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা।

ওই দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন এখন পুরোপুরি অবৈতনিক। অর্থাৎ ওই চার শ্রেণিতে পড়ুয়াদের কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়ার উপায় নেই। তবে পঞ্চম শ্রেণি থেকে উন্নয়ন খাতে প্রত্যেক পড়ুয়ার থেকে ২৪০ টাকা নেওয়া হয়।

এ ছাড়া সর্বশিক্ষা খাতে প্রাথমিক স্কুলকে বছরে সাড়ে ১২ হাজার এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলকে সাড়ে ১৪ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। তার ৬০শতাংশ দেয় মধ্যে কেন্দ্র এবং বাকি ৪০ শতাংশ দেয় রাজ্য সরকার। পঠনপাঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে সেই টাকাই বরাদ্দ করা থাকে।

কিন্তু এখন আর শুধু পঠনপাঠনে টাকা খরচ করলেই সমস্যা মিটছে না। ইদানীং পরের পর নানা খাতে খরচ বাড়ছে স্কুল‌ের। সিসি ক্যামেরা বসানো থেকে শুরু করে স্কুলবাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের মতো পরিকাঠামো খাতের খরচও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেই সব খরচ জোগাতে গিয়ে কার্যত কালঘাম ছুটে যাচ্ছে স্কুল-কর্তৃপক্ষের। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, খরচ বেড়ে চলেছে। অথচ স্কুলের আয় বাড়ানোর সমস্ত রাস্তাই বন্ধ। সেই জন্যই কেন্দ্রের কাছে টাকা চাইছে রাজ্য।

আর্থিক টানাটানির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চম শ্রেণি থেকে উন্নয়ন খাতে পড়ুয়া-পিছু যে-দু’‌শো চল্লিশ টাকা নেওয়া হচ্ছে, রাজ্য সরকার সেটাও পক্ষপাতী নয়। সেপ্টেম্বরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁরা এই উন্নয়ন ফি মকুবের কথা ভাবছেন। শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রতিটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন সম্পূর্ণ অবৈতনিক হলেও রাজ্যের নির্দেশে ২০১১ সাল থেকে স্কুলগুলি সর্বাধিক ২৪০ টাকা করে নিয়ে আসছে। কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় এতই কম যে, কাজ চালাতে সমস্যায় পড়ছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ১৮ দফা নির্দেশ জারি করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। তাতে স্কুলে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসানো, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচাগার তৈরি, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। যে-সামান্য টাকা তাঁদের হাতে আসছে, তাতে এই সব নির্দেশ রূপায়ণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, পড়ুয়াদের এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে যে-পরিমাণ অর্থ দরকার, তার সংস্থান নেই।

শিক্ষা সূত্রের খবর, নিরুপায় হয়ে কয়েকটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের কাছে অনুদান চাইতে বাধ্য হচ্ছেন। অর্থাৎ খাতায়-কলমে দেখানো হচ্ছে, স্কুলের আলো, পাখা, কলের জন্য অভি‌ভাবকেরা স্বেচ্ছায় অনুদান দিচ্ছেন। স্কুলের অর্থাভাবই যে এর প্রধান কারণ, সেটা দফতরের অনেকেই জানেন। এই অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্যই এ বার কেন্দ্রের কাছে নিজেদের অবস্থা তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য। দুর্দশার বারোমাস্যারও উল্লেখ থাকছে সেই আবেদনপত্রে।

School Education স্কুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy