Advertisement
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জিপিএফের রাশ চেয়ে সিএজিকে চিঠি দিল নবান্ন

এ রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ন্যূনতম ৬ শতাংশ প্রতি মাসে জিপিএফ তহবিলে জমা হয়। সেই তহবিল রক্ষণাবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি)-র দফতর। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সেই তহবিলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৬
Share: Save:

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের (জিপিএফ) নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাত থেকে নিজেদের হাতে নিতে চায় নবান্ন।

এ রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ন্যূনতম ৬ শতাংশ প্রতি মাসে জিপিএফ তহবিলে জমা হয়। সেই তহবিল রক্ষণাবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি)-র দফতর। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সেই তহবিলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য। এজি-র দফতর যাঁর অধীনে, সেই কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) রাজীব মেহর্ষিকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব মলয় দে। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, জিপিএফ তহবিল আরও সুরক্ষিত করতে এবং আরও সুচারু ভাবে চালাতেই এর নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে চাইছে রাজ্য।

কিন্তু ঘটনা হল, মুখ্যসচিবের এই চিঠির খবর জানাজানি হতেই সংশয় ছড়িয়েছে কর্মীমহলে। তাঁদের একাংশের আশঙ্কা, বেতন কমিশন কবে চালু হবে কেউ জানে না, ডিএ-র টাকাও অর্ধেক বকেয়া। এমন অবস্থায় কর্মচারীদের শেষ ভরসা জিপিএফের টাকাও রাজ্য হাতে নিলে তা সুরক্ষিত থাকবে তো? কেন্দ্র যেমন পেনশনের টাকা শেয়ার বাজারে খাটাচ্ছে, রাজ্যও সেই পথে হাঁটবে না তো?

মুখ্যসচিব অবশ্য তাঁর চিঠিতে বলেছেন, অর্থ দফতর ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামে দু’টি ওয়েব-নির্ভর ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে সহজেই কর্মচারীদের জিপিএফের টাকা রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে। এজি-র হাতে থাকায় এখন কর্মীরা সেই সুবিধা পান না।

অর্থ দফতরের দাবি, রাজ্যের হাতে জিপিএফ এলে কোনও কর্মচারীর কাজে যোগ দেওয়ার দিনই অ্যাকাউন্ট খুলে যাবে। এখনকার মতো এক বছর অপেক্ষা করতে হবে না। এখন কর্মীরা জিপিএফের কিছুই জানতে পারেন না। রাজ্যের হাতে এলে যে কোনও সময় কর্মীরা অনলাইনে সঞ্চিত টাকার পরিমাণ, নমিনির নাম বদল, ঋণ বা অগ্রিম নেওয়ার আবেদন জানাতে পারবেন। বছর শেষে কত টাকা সুদ জমা হল, তা সহজেই জেনে নিতে পারবেন। কোনও ভুল দেখলে অনলাইনে শুধরেও নিতে পারবেন।

কিন্তু কর্মীদের খটকা কাটছে না। তাঁদের একাংশ বলছেন, রাজ্যের এখন ভাঁড়ে মা ভবানী দশা। চলতি বছরে ৪৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে। কেন্দ্রীয় অনুদানও কম এসেছে। কমেছে জিএসটি বাবদ আয়ও। সেই কারণেই কি নবান্ন জিপিএফ তহবিলে নজর দিচ্ছে? কারণ, ২০১৮-’১৯ সালের বাজেট অনুযায়ী জিপিএফ তহবিলে ৩৬৩৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা জমা পড়বে। এর মধ্যে গ্রুপ-ডি কর্মীদের জন্য থাকবে ৩৫৩ কোটি। এজি অবশ্য গ্রুপ-ডি কর্মীদের তহবিল দেখে না। সুতরাং রাজ্যের হাতে জিপিএফ এলে নবান্নের কাছে বাড়তি সাড়ে তিন হাজার কোটির ব্যবস্থা হবে।

যদিও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে অর্থ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জিপিএফের টাকা ‘পাবলিক ফান্ডে’ জমা থাকে। সরকার চাইলেও তাতে হাত দিতে পারে না। তা ছাড়া, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, গুজরাত তো ইতিমধ্যেই জিপিএফ নিজেদের হাতে নিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

GPF General Provident Fund State Government Central government Government Employee জিপিএফ জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy