রাজ্য সরকার কয়েকটি ‘হটস্পটে’ সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিলেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ‘আশার আলো’ দেখালেন স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী।
শুক্রবার নবান্নে অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে হারে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা ছড়ায়নি। সংক্রমণের রেখাচিত্র আর সে ভাবে ঊর্ধ্বমুখী নয়। তবে সামাজিক মেলামেশা এখন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। সরকার যেটুকু ছাড় দিচ্ছে সেটি শুধুমাত্র জীবিকার স্বার্থে। তা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লে চলবে না। কয়েক দিন ধরে গেল গেল রব তোলা হচ্ছিল। সেই পরিস্থিতি নেই। আশার আলো দেখা যাচ্ছে।’’ অভিজিৎবাবু জানান, ‘‘উত্তরবঙ্গের প্রস্তুতি দেখেই বলছি, সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছুই সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানকার করোনা রোগীরা ভাল আছেন।’’
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এ দিন নতুন করে কেউ ভর্তি হননি। মোট ১৪ জন করোনা আক্রান্তের নমুনা নেগেটিভ আসে কি না, তা দেখার জন্য পাঠানো হয়েছে। ১৪টির মধ্যে ছ’টি নমুনা গিয়েছে নাইসেডে। আটটি পাঠানো হয়েছে এসএসকেএমে। মধ্যমগ্রামের করোনা আক্রান্ত জনপ্রতিনিধির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। নাগেরবাজার এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের যে নার্স করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পর বাঙুর হাসপাতালে আছেন, চিকিৎসার পর তাঁর প্রথম নমুনা পরীক্ষা নেগেটিভ এসেছে।
প্রসঙ্গত, মুখ্য সচিব রাজীব সিংহ এ দিন নবান্নে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১২টি নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রের খবর, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে হাওড়ার দু’জন, এম আর বাঙুর, আলিপুরের সেনা হাসপাতাল এবং রুবি মোড় সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালের এক জন করে রয়েছেন। একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক জন এবং স্বভূমি সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালের তিন জন রোগীর করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। দুর্গাপুরে ৭৫ বছরের এক চিকিৎসকের দেহে করোনা ধরা পড়েছে। এ ছাড়া, আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই বেসরকারি হাসপাতালে আরও দু’জন করোনা পজ়িটিভের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে ৬৯ বছরের বৃদ্ধের প্রথম দফার নমুনা (চিকিৎসা হওয়ার পর) নেগেটিভ এসেছে বলে খবর। স্বভূমি সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে যে ১৬ জনকে বৃহস্পতিবার এম আর বাঙুরে পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের কোভিড হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত সল্টলেক আমরির অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। আরও তিন জনকে ওই কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হবে।
করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির যে অভিযোগ কেউ কেউ তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে মুখ্য সচিব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী করোনা মৃত্যু খতিয়ে দেখতে অডিট কমিটি তৈরি করেছেন। সেই কমিটির কাছে সব তথ্য দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা জানালে তবেই মৃত্যুর সংখ্যা বলা হচ্ছে।’’ অডিট কমিটির কাছে এমন ক’টি মৃত্যুর ঘটনা যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে? মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য অডিট কমিটির কাছে সব তথ্য পাঠানো, তার পর তাদের দেওয়া রিপোর্ট আপনাদের জানানো।’’