Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Weather

আম কুড়োতে গিয়ে মৃত্যু চার বালকের

আম কুড়োতে গিয়েছিল পাঁচ বালক। পুলিশ জানায়, বজ্রপাতে সকলেই গুরুতর জখম হয়। উলুবেড়িয়ার দামোদরপুরের বরডাঙার ঘটনা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় চার জনের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

বিকেলবেলা তিনটে নাগাদ ঝ়ড়বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সঙ্গে ঘন ঘন বাজ। তার মধ্যেই আম কুড়োতে গিয়েছিল পাঁচ বালক। পুলিশ জানায়, বজ্রপাতে সকলেই গুরুতর জখম হয়। উলুবেড়িয়ার দামোদরপুরের বরডাঙার ঘটনা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় চার জনের। মৃতদের নাম শেখ সিরাজুল (১২), শেখ মঞ্জুর (১০), শেখ আশিক (১০) এবং শেখ মারুফ (১১)। আহতদের মধ্যে রয়েছে সিরাজুলের ভাই শেখ সাহিল। ময়না-তদন্তের পরে দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ।

শোকের ছায়া নামে গ্রামে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আসেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায়। তাঁর ফোনে মৃত সিরাজুলের বাবা হাসিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। হাসিবুরকে সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। পরে পুলকবাবু বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারপ্রতি দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছেন। মৃতেরা প্রত্যেকে গরিব পরিবারের সন্তান।’’ হাসিবুরের উলুবেড়িয়া একটি গ্যারাজে আছে। তিনি বলেন, ‘‘কষ্ট করে ছেলেদের মানুষ করছিলাম। এক জন মারা গেল, একজন আহত হল। কী করব, বুঝতে পারছি না।’’

উলুবেড়িয়ার কৈজুড়িতে আবার তিন বন্ধুর সঙ্গে খেলার সময়ে পাঁচিল চাপা পড়ে মারা যায় মোহর আলি (৯) নামে এক বালক। তার বন্ধুরা জখম হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হুগলির খানাকুলের ঠাকুরানিচকে ঝড়বৃষ্টির সময় খেতে কাজ করছিলেন অশোক ভৌমিক (৬০) নামে এক বৃদ্ধ। বাজ পড়ে তিনি মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হুগলিতে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় বেলা ১টার পরে। জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা, তারকেশ্বর, ধনেখালি, পান্ডুয়া, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, কোন্নগর, রিষড়ায় মুষলধারে বৃষ্টি নামে। বিভিন্ন ব্লক অফিস থেকে ভোটের সামগ্রী নিয়ে বুথে রওনা হতে দেরি হয়ে যায় ভোটকর্মীদের। অনেকে আবার রওনা দিয়েও মাঝপথে দাঁড়িয়ে পড়েন। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সকাল থেকেই ভোটকর্মীরা বুথে রওনা হতে শুরু করেছিলেন। রওনা হতে যাঁদের দেরি হয়েছিল, তাঁরাই কিছুটা সমস্যায় পড়েন। তবে ঝড়বৃষ্টি থামলে সর্বত্রই সবাই নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যান।

পান্ডুয়া নিয়ন্ত্রিত বাজারে ওই ব্লকের ভোটকর্মীদের জন্য সামগ্রী সরবরাহ কেন্দ্র করা হয়েছে। দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাজারে ঢোকার মুখে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। সেই জল ডিঙিয়েই ভোটকর্মীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এক ভোটকর্মীর আক্ষেপ, ‘‘শুধু ভোটকেন্দ্রে যেতেই দেরি হল না, বৃষ্টির জন্য দুপুরের খাওয়াটাই হল না।’’

ধনেখালি, ডা‌নকুনি, জনাই, বেগমপুর, শ্রীরামপুর, কোন্নগর-সহ নানা জায়গায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। এর ফলে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বৃষ্টিতে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায়। ডানকুনি থানার কাছে ওই রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে। তাতে রাস্তার কলকাতামুখী লেনে গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়। বড়া তেলিয়ার মোড় থেকে ডানকুনি পর্যন্ত এই রাস্তার অ্যাপ্রোচ রোডে অনেক গাছ উপড়ে যায়। ফলে অ্যাপ্রোচ রোড কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE