Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি-যুদ্ধে সেনা আশা-কর্মীরাও

ওঁরা আশা-কর্মী। পঞ্চায়েত এলাকায় ডেঙ্গি রুখতে ওঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বছরের মোট ডেঙ্গি-আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২১

গ্রামের ফি-বাড়িতে স্বাস্থ্য পরিষেবার খুঁটিনাটি তথ্য পৌঁছে দেন ওঁরা। সন্তানসম্ভবা ঠিকঠাক আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছেন কি না, নবজাতকের টিকাকরণ হচ্ছে কি না— কিছুই ওঁদের নজর এড়ায় না। ডেঙ্গি-যুদ্ধে তাই এ বার ওঁরাই সৈনিক!

ওঁরা আশা-কর্মী। পঞ্চায়েত এলাকায় ডেঙ্গি রুখতে ওঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বছরের মোট ডেঙ্গি-আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা কুড়ি ছোঁয়ার আগে স্বাস্থ্য দফতরে খবর পৌঁছয়নি। ফলে রোগ মোকাবিলার কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তাই এ বার প্রথম থেকে জ্বরের খবর দেবেন আশা-কর্মীরা। এ কাজে সাহায্য করবেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বনির্ভর প্রকল্পে যুক্ত মহিলারা।

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, পুর এলাকায় বাড়ি ঘুরে নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে নির্ভুল খবর পেতে সফটওয়্যারকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি ঘুরে নজরদারি হয় না। কী ব্যবস্থা নিতে হবে, পঞ্চায়েতের কর্মীরা বাসিন্দাদের এক জায়গায় ডেকে সেই বিষয়ে পরামর্শ দেন। তাতে তেমন কাজ হচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন কেন দরকার, গত বার উত্তর ২৪ পরগনার ডেঙ্গি পরিস্থিতি দেখে সেটা বোঝা গিয়েছে।

কী ভাবে ডেঙ্গির মোকাবিলা করবেন প্রশিক্ষিত আশা-কর্মীরা?

টিকাকরণ-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য গ্রামের সব বাড়িতে আশা-কর্মীরা যাতায়াত করেন। তাই কোন বাড়িতে কে জ্বরে ভুগছেন, সেই খবর তাঁরা দ্রুত পাবেন। একই পাড়ার তিন জন জ্বরে আক্রান্ত হলে পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খবর দেবেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আশা-কর্মীদের সঙ্গে মোবাইলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

জ্বর হলেই তো ডেঙ্গি নয়। আশা-কর্মীরা তফাত করবেন কী ভাবে?

স্বাস্থ্য ভবনের এক শীর্ষ কর্তা জানান, গত বছর ডেঙ্গি ২ ও ৪ প্রভাব ফেলেছিল। এ বছরও সেই প্রভাব চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে ডেঙ্গি-সংক্রমণের বিষয়টি প্রথম দিকে জানা যায় না। হঠাৎ পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। তাই আশা-কর্মীরা রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। জ্বরের খবর পেলেই স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাবেন তাঁরা। যাতে সেই এলাকায় আগাম নজরদারি শুরু করা যায়। তার পরে স্বাস্থ্যকর্মীরাই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেঙ্গি-আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘জনস্বাস্থ্যে প্রথম পর্বেই মোকাবিলা জরুরি। তবে তার জন্য দফতরের কাছে নির্ভুল তথ্য থাকা দরকার। তাই তথ্য পেতে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বনির্ভর প্রকল্পের মহিলাদের কাজে লাগানোর হবে। জ্বরের খবর সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গি রুখতে সচেতনতা-প্রচারও চালাবেন তাঁরা।’’

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, বাড়িতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে এ রাজ্যের আশা-কর্মীরা দেশের কাছে উদাহরণ। বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে আগেও সফল হয়েছেন তাঁরা। তাই ডেঙ্গি মোকাবিলাতেও তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে। ‘‘আশা করছি, আশা-কর্মীদের হাত ধরে মানুষ এ বার ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতন হবে। আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা দ্রুত তথ্য দিলে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজটাও সহজ হবে,’’ বলেন অজয়বাবু।

Mosquito Dengue ASHA Worker Awareness Campaign ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy