Advertisement
E-Paper

শোকে শান্তি খুঁজে শ্রাদ্ধেই রক্তদান

তমলুক জেলা হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের কাছে রক্ত নেই। কাঁদতে কাঁদতে ভোলানাথবাবু বলেছিলেন, ‘‘আমি কি রক্ত পাব না!’’ পরিচিতেরা রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি তখনকার মতো সামাল দেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০৪:০২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কার্ড ছিল। তবু ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে। মৃত্যু হয় পরিবারের কর্তার। তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে পূর্ব মেদিনীপুরের পতি পরিবার। আজ, শুক্রবার শিবির হওয়ার কথা।

পাকস্থলীতে ক্যানসারের জেরে ২০ মার্চ মৃত্যু হয় পাঁশকুড়ার সাহড়দার বাসিন্দা ভোলানাথ পতির। রাজারহাটের একটি হাসপাতালে গত অক্টোবরে তাঁর ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু হয়। প্রথম কেমোথেরাপির পরে রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নামতে থাকে। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় কুমোরপুর হটেশ্বর হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক ভোলানাথবাবুর। ৬৮ বছরের বৃদ্ধকে রক্ত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক ঘুরেও রক্ত মেলেনি। তমলুক জেলা হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের কাছে রক্ত নেই। কাঁদতে কাঁদতে ভোলানাথবাবু বলেছিলেন, ‘‘আমি কি রক্ত পাব না!’’ পরিচিতেরা রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি তখনকার মতো সামাল দেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি।

রক্তের জন্য অভিভাবকের অন্তিম আর্তি বারবার কানে বেজেছে পতি পরিবারের। ভোলানাথবাবুর স্ত্রী ঋতরানি পতির কথায়, ‘‘শ্মশানেই সকলে সিদ্ধান্ত নেয়, ওঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে রক্তদান শিবির করা হবে। আমারও ইচ্ছে ছিল। রক্তের জন্য মেদিনীপুরের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত দৌড়তে হয়েছে আমাদের। প্রিয়জনের জন্য মানুষের আর্তির মানেটা বুঝি।’’ ভোলানাথবাবুর রক্তের গ্রুপ ছিল বি+। সহজলভ্য গ্রুপের রক্ত জোগাড় করতে যে-ভাবে বেগ পেতে হয়েছে তাঁর পরিবারকে, তাতে আরও বেশি করে রক্তদানের প্রয়োজন অনুভব করছেন পুত্রবধূ জয়ন্তী পতি।

আজ সাহড়দা গ্রামে পতি বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আচারের পাশেই চলবে রক্তদান। শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের দুই প্রক্রিয়া মিলেমিশে যাবে এ ভাবেই। জয়ন্তীদেবী বললেন, ‘‘শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের পাশাপাশি রক্ত দেবেন গ্রামবাসীরাও। সব মিলিয়ে ৫০ জন রক্ত দিতে পারেন। রক্ত যে-কোনও পরিস্থিতিতেই দান করা যায়, সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে মানুষের কাছে।’’ পতিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রতিনিধি মৌসম মজুমদার। যিনি পতিদের আপনজন। ভোলানাথবাবুর চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

Blood রক্ত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy