Advertisement
০৫ মে ২০২৪
social subsidence

বাড়ি ছেড়েছেন অসিতের স্ত্রী-পুত্র

শনিবার কলকাতায় চলন্ত বাসে স্বমেহন করে খবরের শিরোনামে বৈদ্যবাটী পুরসভার ১৭ ‌নম্বর ওয়ার্ডের এনসি ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা অসিত রাই। এক কলেজছাত্রী মোবাইল-ক্যামেরায় তার স্বমেহনের দৃশ্য রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেন।

অসিত রাই। ফাইল চিত্র।

অসিত রাই। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বৈদ্যবাটী শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

ভর দুপুরে বাসে উঠে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে— শোরগোল রাজ্যজুড়ে! কিন্তু সে খবর জেনে তাজ্জব পড়শিরা। সাধারণ গৃহবধূ থেকে রকে আড্ডা দেওয়া যুবক— কেউই যেন বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না, লোকটা এমন করতে পারে। পাড়ায় যে তার অন্য রূপ!

শনিবার কলকাতায় চলন্ত বাসে স্বমেহন করে খবরের শিরোনামে বৈদ্যবাটী পুরসভার ১৭ ‌নম্বর ওয়ার্ডের এনসি ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা অসিত রাই। এক কলেজছাত্রী মোবাইল-ক্যামেরায় তার স্বমেহনের দৃশ্য রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেন। তার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সেই থেকে কানাঘুষো, হাসাহাসি চলছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। বৈদ্যবাটী স্টেশন থেকে কয়েক মিনিট দূরত্বে অসিতের বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অন্তত বছর ১৫ এখানে থাকে। সঙ্গে থাকেন স্ত্রী-পুত্র। রবিবার বাড়িতে তাঁদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে ঘর তালাবন্ধ। পড়শিরা জা‌নান, শনিবার দুপুরেই ঘরে তালা দিয়ে পাশের বাড়িতে চাবি রেখে স্ত্রী এবং কলেজ পড়ুয়া ছেলে কোথাও চলে গিয়েছেন।

পড়শি এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানতাম না। সকালে পাড়ার দোকানে এক জন মস্করা করে বললেন, ‘কি দাদা, আপনাদের পাশের বাড়ির লোক তো রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাচ্ছেন! তার পরে সব জানলাম।’’ ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরেই তো দেখছি। আমাদের বাড়ির নলকূপ থেকে জল নিতে আসে। কোনও দিন বেচাল কিছু দেখিনি। শুনিওনি।’’

একই কথা বলছেন পাড়ার মহিলারা। এক মহিলা বললেন, ‘‘পরিবারের কেউই তেমন মেলামেশা করে না পাড়ায়। কিন্তু কোনও দিন খারাপ অঙ্গভঙ্গি বা কটূ কথা শুনিনি।’’ বাড়ির খানিক দূরে এক দম্পতি বলেন, ‘‘ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে। এর পরে ওঁর সঙ্গে কথা বলতেই তো অস্বস্তি হবে। তবে ঘটনাটা শুনে অবাক হয়েছি।’’ কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘‘কার মনে কী থাকে, বোঝা দায়!’’

অনেকেই বলছেন, মাঝবয়সি ওই ব্যক্তির কাণ্ড-কারখানায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাঁর স্ত্রী-ছেলেকে। সুতনু চট্টোপাধ্যায় নামে এক যুবকের কথায়, ‘‘আমাদেরই এ প্রসঙ্গে কথা বলতে অস্বস্তি হচ্ছে। স্ত্রী, ছেলের অবস্থাটা ভাবুন তো!’’ পূর্ণিমা চন্দ্র নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘স্ত্রী আর ছেলেটার কথা ভাবছি। ওদের যেন কোনও সমস্যা না হয়। ওঁরা তো কোনও দোষ করেননি।’’ মনোবিদ মোহিত রণদীপের বক্তব্য, ‘‘এটা মানসিক সমস্যাই। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির চিকিৎসা প্রয়োজন।’’

স্থানীয় কাউন্সিলর বাসুদেব চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিন্দনীয় এবং লজ্জাজনক। তবে আমার কাছে কেউ কোনও দিন ওঁর সম্পর্কে নালিশ করেননি। আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি ওঁর কাউন্সেলিং দরকার বলে আমার মনে হয়।’’ প্রয়োজনে তিনি সাহায্য করবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘অসিতের জন্য স্ত্রী বা ছেলেকে যাতে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়, সেটাও দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime social subsidence Public savagery Asit Rai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE