Advertisement
E-Paper

বিদায় ‘খেয়াল খাতা’, নতুন পাতায় মোদী

নতুন খাতার সূচনাও অবশ্য মোদীর হাতে হয়নি। এ বার তাঁর সঙ্গে ছিলেন পড়শি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সমাবর্তনের আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে দিল্লির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বার্তা আসে, নয়া খাতার পয়লা পাতাটা রাখতে হবে শেখ হাসিনার জন্য।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৩:৩০
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নাম লিখতে লিখতে কাগজ ছেঁড়েনি। তবে ছেঁড়ার উপক্রম। বিশ্বভারতীর পরম্পরাগত ‘খেয়াল খাতা’য় তাই নাম থাকল না নরেন্দ্র মোদীর!

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং মান্যগণ্য অতিথিদের সফরের স্মারক হিসেবে সই ও মন্তব্য রেখে দেওয়ার রেওয়াজ বহু কালের। জওহরলাল নেহরু থেকে ইন্দিরা-রাজীব বা ইন্দ্রকুমার গুজরাল, যিনিই শান্তিনিকেতনে এসেছেন, ‘ভিজিটর্স বুকে’ সই করেছেন। অল্প কথায় লিখে রাখা হয়েছে তাঁদের অভিজ্ঞতা। অবন ঠাকুরের নকশা করা সেই জাব্দা খাতার আদরের নাম ছিল ‘খেয়াল খাতা’। দীর্ঘ দিনের ব্যবহারে সেই খাতার পাতা জীর্ণ হয়ে এসেছিল বেশ কয়েক বছর আগেই। এ বার শান্তিনিকেতনে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আগে এনে রাখা হয়েছিল আনকোরা খাতা। তাতেই সই করেছেন আচার্য মোদী।

নতুন খাতার সূচনাও অবশ্য মোদীর হাতে হয়নি। এ বার তাঁর সঙ্গে ছিলেন পড়শি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সমাবর্তনের আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে দিল্লির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বার্তা আসে, নয়া খাতার পয়লা পাতাটা রাখতে হবে শেখ হাসিনার জন্য। সেই মতোই শান্তিনিকেতনে পৌঁছে রবীন্দ্র ভবন ও ‘উত্তরায়ণ’ ঘুরে দেখার পরে অতিথি-খাতার প্রথম পাতায় বাংলায় মন্তব্যের নীচে সই করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। পরের পাতায় হিন্দিতে মন্তব্যের নীচে সই মোদীর।

নতুন খাতায় মোদীর সই।

এখনকার নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিধিনিষেধের শর্ত অনুযায়ী, ব্যস্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের আর স্বহস্তে মন্তব্য লেখা হয় না। তাঁদের দফতরের কেউ লিখে দেন, তাঁরা সই করে দেন। হাসিনা ও মোদী দু’জনের ক্ষেত্রেই দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিনিধিরা মন্তব্য লিখেছেন। মোদী যেমন সেখানে বলেছেন, ‘আমার প্রার্থনা, গুরুদেবের ভাবনা অনুযায়ী শান্তিনিকেতনের উত্তম পরম্পরা থেকে নির্ভীক, মানবিক ও বিনম্র হওয়ার শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেশ নির্মাণে নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিরন্তর প্রয়াসী হবে’। হাসিনা অবশ্য রবীন্দ্র ভবন ও উত্তরায়ণে কবিগুরুর স্মৃতি ও সৃষ্টি সংরক্ষণের উদ্যোগে তাঁর মুগ্ধতা ব্যক্ত করেছেন।

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, মোদী নতুন খাতায় এলেন ঠিকই। তবে তাঁর পূর্বসুরি মনমোহন সিংহও ‘খেয়াল খাতা’য় নাম তুলতে পারেননি। মনমোহন সমাবর্তনে এসেছিলেন ২০০৮ সালে। সে বার তিনি সমাবর্তনের আগে রবীন্দ্র ভবনে ঢোকেননি, খাতাও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। অন্য অনুষ্ঠানের ফাঁকে একটি ক্যানভ্যাসে মার্কার দিয়ে সই করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। আর এখন তো পুরনো খাতাই বিদায় নিয়েছে। রবীন্দ্র ভবনের আধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘পুরনো খাতাটার পাতা শেষ হয়নি। কিন্তু ওটায় যে লেখা এবং স্মৃতি আছে, তার সংরক্ষণ প্রয়োজন। তাই সেটার আর ব্যবহার সম্ভব নয়।’’

নতুন খাতা তো হল, শান্তিনিকেতনের হৃদয়ে নাম লিখতে পারলেন কি আচার্য মোদী? সমাবর্তনের আসরে সে দিন ‘মোদী মোদী’ চিৎকার অনেকের কাছেই হৃদয় বিদারক হয়ে আছ়ড়ে পড়েছে। আর স্বয়ং মোদী ফিরে গিয়ে টুইটে মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ছেলেমেয়েদের ভালবাসা আমার কাছে চির উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।’’

Visva-Bharati Narendra Modi Sheikh Hasina
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy