Advertisement
E-Paper

জয়েন্টে প্রথম দশেই নেই উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের কোনও পড়ুয়া!

এ দিন ফল প্রকাশ করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয়েন্দু সাহা জানান, পরীক্ষায় বসেছিলেন এক লক্ষ পাঁচ হাজার ৯৭৪ জন। এক লক্ষ পাঁচ হাজার ৮১ জন সফল। তাঁদের মধ্যে ছাত্র ৮১ হাজার ৭২৪ জন। ছাত্রী ২৩ হাজার ৩৫৭ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৮ ০৩:০৫

গত বছরেও ছিলেন। কিন্তু এ বার রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তির জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেধা-তালিকায় প্রথম দশে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোনও পড়ুয়ারই ঠাঁই হয়নি। প্রথম-সহ পাঁচ জন সিবিএসই বোর্ডের। চার জন আইসিএসই-র। এক জন অন্ধ্র বোর্ডের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ভিন্‌ রাজ্যের দুই পড়ুয়াও।

প্রশ্ন উঠছে, কেন অন্য বোর্ডের পড়ুয়াদের এই সাফল্য? উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ছাত্রছাত্রীরা কি পিছিয়ে পড়ছেন? কেন এই অবস্থা?

সিবিএসই বোর্ডের অধীন সল্টলেকের এপিজে স্কুলের ছাত্র দেবজ্যোতি কর জয়েন্টে পঞ্চম স্থান পেয়েছেন। ওই স্কুলের অধ্যক্ষা রীতা চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই সব পরীক্ষায় প্রশ্ন হয় ‘অবজেক্টিভ’ ধরনের। কী পদ্ধতিতে তার উত্তর দিতে হয়, তা জানতে হয় ভাল করে। সিবিএসই বোর্ডের পড়ুয়ারা ছোট থেকেই সেই পদ্ধতি শেখে।

পড়ুয়ারা যাতে এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হন, তার জন্য গত বছর থেকে সহায়িকা বই প্রকাশ করছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও। তাদের অধীন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ায় এখন ভাটার টান। ভাল ছাত্রদের অধিকাংশই এখন পদার্থবিদ্যা, রসায়নের মতো ‘বেসিক সায়েন্স’ পড়তে চান। ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল নম্বর তোলার জন্য অনেকে জয়েন্টে বসতেই অনীহা দেখাচ্ছে। অনেকে ঝুঁকছে ডাক্তারির দিকে,’’ বলেন পরিমলবাবু। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মেধা-তালিকায় নতুনত্ব কিছু দেখছেন না। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘এই পরীক্ষায় কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বরাবর ভাল ফল করে। এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়।’’

এ দিন ফল প্রকাশ করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয়েন্দু সাহা জানান, পরীক্ষায় বসেছিলেন এক লক্ষ পাঁচ হাজার ৯৭৪ জন। এক লক্ষ পাঁচ হাজার ৮১ জন সফল। তাঁদের মধ্যে ছাত্র ৮১ হাজার ৭২৪ জন। ছাত্রী ২৩ হাজার ৩৫৭ জন।

গত বছর পড়ুয়াদের সাফল্যের হার বিচার করা হয়েছিল মাত্র ১০ হাজার সফল পড়ুয়ার মধ্যে। দেখা গিয়েছিল, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তুলনায় সিবিএসই পড়ুয়াদের পাশের হার বেশি। বোর্ড চেয়ারম্যান এ দিন জানান, মাত্র ১০ হাজারের মধ্যে সাফল্য বিচার করা হল কেন, নানা মহলে সেই প্রশ্ন উঠেছিল। তাই এ বার সব সফল পড়ুয়াকেই সাফল্য বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তাতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরীক্ষার্থীদের সাফল্যের হারই বেশি— ৪৭%। সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের সাফল্যের হার ২৮%। বিহার বোর্ডের ১৩%.। আইসিএসই বোর্ডের ৫%। রাজ্যের ভিত্তিতেও সাফল্যের হার বেশি পশ্চিমবঙ্গের— ৬৪%। এর পরে রয়েছে বিহার (২৩.৩০%)। তার পরে ঝাড়খণ্ড (৮.২০%)। যাঁদের ফল নিয়ে প্রশ্ন বা সংশয় আছে, তাঁরা বোর্ডে ৫০০ টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফট দিয়ে আবেদন করলে ‘ক্যালকুলেশন শিট’ দেখিয়ে দেওয়া হবে।

গত বছর থেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড ভর্তির জন্য সফল প্রার্থীদের ‘মক কাউন্সেলিং’ বা কাউন্সেলিংয়ের মহড়ার ব্যবস্থা করেছে। বোর্ড চেয়ারম্যান এ দিন জানান, এ বারেও রাজ্য জুড়ে ৩৩টি কেন্দ্রে মক কাউন্সেলিং চলবে ২৮ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। সব বোর্ডের পরীক্ষা শেষ হলে ৪ জুন ভর্তির আসল কাউন্সেলিং শুরু হবে। আগামী বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হবে ২১ এপ্রিল।

আগে জয়েন্টের ফল বেরোতে ৪৮-৫০ দিন লাগত। শিক্ষা সূত্রের খবর, ফল ঘোষণায় এতটা দেরির জেরে এ রাজ্যের পড়ুয়ারা প্রচুর টাকা খরচ করে আগেই ভিন্‌ রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়ে যেতেন। তাঁরা পরে আর এ রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে আগ্রহ দেখাতেন না। ফলে অনেক আসন খালি থেকে যেত। এ বার বেশ খানিকটা আগে, ৩১ দিনে জয়েন্টের ফল ঘোষণা করা হল। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

JEE WBCHSE জয়েন্ট এন্ট্রান্স
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy