Advertisement
০২ মে ২০২৪

পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, কিন্তু মানতে নারাজ বাড়ি

অভিযোগ, প্রতিবেশী এক যুবক তাকে ধর্ষণ করে খুন করে। তার পরে মেয়েটির পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪৪
Share: Save:

কাজের সূত্রে বাবা থাকেন ভিন রাজ্যে। মা এবং ছোট ভাইও সেখানেই থাকতেন। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মেয়েটি থাকত কোচবিহারের সুটকাবাড়ি আঠারোকাঠা গ্রামে দিদিমার কাছে, আর এক ভাইয়ের সঙ্গে। অভিযোগ, প্রতিবেশী এক যুবক তাকে ধর্ষণ করে খুন করে। তার পরে মেয়েটির পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়।

গ্রামের মানুষের অভিযোগ, আট দিন আগের এই ঘটনা ঘটে গেলেও তদন্তের জন্য পুলিশ এখনও পর্যন্ত এক বারও গ্রামে আসেনি। তাই ক্ষোভে ফুঁসছে কোতোয়ালি থানার গ্রামটি। যদিও পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তদন্ত চলছে। তাদের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

গত ৯ এপ্রিল স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার কিছু ক্ষণ পরে নিজের ঘরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যাওয়া যায় সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পরেই কেরোসিন ঢেলে মেয়েটিকে জ্বালিয়ে দেন ওই যুবক। তখন তাঁর স্ত্রীও সেখানে ছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর ভাই ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলতে দেখে চিৎকার শুরু করে। এর পরেই প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

বাড়ির লোকজনের দাবি, ছাত্রীর ছোট ভাই ঘটনার পরে অভিযুক্তদের ঘর থেকে বের হয়ে যেতে দেখেছে। মেয়েটির বাবার দাবি, অভিযোগ দায়ের করতে থানায় ঘোরাঘুরি করলেও তাঁকে প্রথমে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “পুলিশ বারবার আত্মহত্যার কথা বলেছে।’’ তাঁর কথায়, পরে অভিযোগপত্র নেওয়া হলেও তার কোনও ‘রিসিভড কপি’ দেওয়া হয়নি।

অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর স্ত্রী ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন পড়শিরা। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে ওরা গ্রেফতার হবে।” এর মধ্যে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।” পুলিশের আরও দাবি, ইতিমধ্যেই খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।

তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ময়নাতদন্তের পরে যে রিপোর্ট তাঁরা পেয়েছেন, তাতে যৌন নির্যাতনের কোনও উল্লেখ এখনও নেই। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের সন্দেহ, অভিযুক্ত ওই যুবকের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। তা নিয়েই ওই যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে তার বচসা হয়।
তখন ওই যুবক নিজের স্ত্রীর পক্ষ নিয়েই মেয়েটির উপর চড়াও হয়। উপায় না দেখে সে আত্মহত্যা করে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। মেয়েটির বাড়ির লোক অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Murdered ধর্ষণ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE