Advertisement
E-Paper

পাসপোর্ট বিধি শিথিল করায় জোড়া সমস্যা

পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে আবেদনকারীর ঠিকুজিকুলুজি পুলিশকে দিয়ে যাচাই করা হয়। দেখা হয়, আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিক কি না।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৯

আবেদনকারীর কাছে ভোটার, প্যান এবং আধার কার্ড থাকলেই তাঁকে পাসপোর্ট দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। পাসপোর্ট দফতরের এক শ্রেণির অফিসার জানাচ্ছেন, এ ভাবে নিয়ম শিথিল করায় মূলত দু’‌টো সমস্যা হচ্ছে। ১) নাগরিক নন, এমন লোকেদের হাতে পাসপোর্ট চলে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। ২) ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (পিসিসি)-এর চাহিদা আচমকাই বেড়ে গিয়েছে। পিসিসি দেয় শুধু পাসপোর্ট দফতরই। ফলে ভিড় বাড়ছে ওই দফতরে।

কী এই পিসিসি?

পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে আবেদনকারীর ঠিকুজিকুলুজি পুলিশকে দিয়ে যাচাই করা হয়। দেখা হয়, আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিক কি না। পুলিশ তদন্ত করে পাসপোর্ট দফতরে অনুকূল রিপোর্ট পাঠালে সেটাকেই বলা হয় পিসিসি। কিছু ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণের সময়েও পিসিসি-র প্রয়োজন হয়। যদি দেখা যায়, আবেদনকারী প্রথম বার তৎকালে পাসপোর্ট নিয়েছিলেন এবং কোনও কারণে তাঁর ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত হয়নি অথবা যদি দেখা যায়, পুনর্নবীকরণের সময়ে আবেদনকারী নিজের ঠিকানা বদল করেছেন, তা হলেও নতুন করে পিসিসি দাখিলের প্রয়োজন হয়।

আগে পাসপোর্ট দেওয়ার আগে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ হত। কিন্তু নিয়ম শিথিল করে কেন্দ্র বলেছে, এ বার থেকে পুলিশি তদন্ত হবে ভোটার, প্যান ও আধার কার্ড দেখে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেওয়ার পরে। খতিয়ে দেখা হবে, আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিক কি না। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এ ভাবে পাসপোর্ট দেওয়ার পরে পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, আবেদনকারীদের অনেকেই আদতে নেপালের বাসিন্দা!

পাসপোর্ট অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, সীমান্তে নিরাপত্তার ফাঁকফোকর দিয়ে বাংলাদেশিরা মাঝেমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়েন। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে ভোটার, আধার বা প্যান কার্ড বানিয়ে নেওয়া জলভাত। পুলিশি যাচাই ছাড়া এই তিনটি নথির উপরে ভিত্তি করে পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়ায় ভারতীয় নন, এমন অনেকের হাতে পাসপোর্ট চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। নিয়ম শিথিল করার পরে এখন পাসপোর্ট নিয়ে বেশ কিছু বিদেশি দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করতে গেলে সেখান থেকে পিসিসি চাওয়া হচ্ছে। তাই পিসিসি-র চাহিদা বাড়ছে।

পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, আবেদনের পরে চটজলদি পাসপোর্ট হাতে পেয়েও তা বিশেষে কাজে লাগছে না। বিদেশযাত্রার জন্য ভিসা চাইতে গেলেই দূতাবাস পিসিসি চাওয়ায় আবেদনকারীকে সেই শংসাপত্রের জন্য দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে। পুরনো নিয়মে পাসপোর্টের আবেদনের পরেই পুলিশি যাচাই হত। তাতে ঝক্কি-ঝকমারি কিছু কম ছিল না। তবে সেই পুলিশি পরীক্ষার পরে পাসপোর্ট পেলে ভিসা পেতে তেমন অসুবিধা হত না। এখন তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট হাতে আসছে ঠিকই। কিন্তু বিদেশ সফর করা যাচ্ছে না। ভিসা অফিস পুলিশি রিপোর্ট চাইছে। অর্থাৎ পাসপোর্ট পেয়েও সেই পুরনো ঝক্কি।

শুধু আবেদনকারীর ঝামেলা নয়। সমস্যা বাড়ছে পাসপোর্ট দফতরেরও। কেননা পিসিসি-র জন্য রোজই সেখানে হত্যে দিচ্ছেন অজস্র মানুষ। এত দিন কলকাতায় ইএম বাইপাসের রুবি মোড়ে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে দৈনিক ১০০টি পিসিসি দেওয়া হত। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসার বিভূতিভূষণ কুমার জানান, সংখ্যাটা বাড়িয়ে ২৫০ করা হয়েছে। ‘‘শুধু কলকাতা নয়, বহরমপুরের পাসপোর্ট কেন্দ্রেও প্রতিদিন একশোর বদলে ২৫০ পিসিসি দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে হয়েছে,’’ বলেন বিভূতিভূষণ।

PCC Passort Rules Police Clearance Certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy