অভিজিৎ সাঁতরা
ফুলটস পেয়ে সপাটে ব্যাট চালিয়েছিলেন বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়। ক্যাচ ধরতে দৌড় লাগিয়েছিলেন দুই খেলোয়াড়। নিজেদের মধ্যে ধাক্কা লেগে দু’জনেই মাঠে পড়ে যান। পরে মারাও গেলেন এক জন। রবিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার বড় গোপীনাথপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত অভিজিৎ সাঁতরা (২০) রায়নার শ্যামসুন্দর কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি স্থানীয় কৈয়র গ্রামে। কিছু দিন আগেই, বর্ধমান শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সময় অসুস্থ হয়ে মারা যান বাস্কেটবল খেলোয়াড় অনিমেষ সাহা (১৮)।
এ দিন বড় গোপীনাথপুরে ম্যাচ ছিল। খেলা দেখতে গিয়েছিলেন অভিজিতের ভাই সুরজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে ব্যাট করে আমাদের দল নির্ধারিত ওভারে ৭০ রান তোলে। বড় গোপীনাথপুরের ক্লাবের ব্যাটসম্যান শুরুতেই ফুলটস পেয়ে মেরেছিল। ক্যাচ ধরতে গিয়ে দাদার সঙ্গে আর এক ফিল্ডারের ধাক্কা লাগে। দু’জনেই ছিটকে পড়ে। আমরা সবাই ছুটে যাই। দাদা যন্ত্রণায় ছটফট করছিল।” প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অভিজিতের বুকে অন্য ফিল্ডারের কনু্ইয়ের সজোর ধাক্কা লেগেছিল। গ্রামেই প্রাথমিক শুশ্রূষার পরে রায়নার সেহেরাবাজারে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অভিজিৎ মারা যান। চিকিৎসকদের অনুমান, বুকে জোর ধাক্কা লাগার ফলে হৃদযন্ত্রের কোনও শিরা ছিঁড়ে গিয়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া সঠিক ভাবে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।
অভিজিতের মৃত্যুতে গোটা কৈয়র গ্রামে শোক নেমেছে। সংসার চালানো ও পড়ার খরচ তোলার জন্য অভিজিৎ বর্ধমান শহরে একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে কাজ করতেন। খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ বলেন, “চিকিৎসকেরা মৃত বলার পরেই অভিজিতের দেহ গ্রামে নিয়ে চলে আসে পরিবার। আমরা পরিবারকে ময়নাতদন্ত করার জন্য বলেছি। পুলিশকেও জানানো হয়েছে।” অভিজিতের বাবা অশোক সাঁতরা দিনমজুর। মা কৃষ্ণা সাঁতরা আশাকর্মী। তাঁরা বলেন, “খেলতে গিয়ে এ ঘটনার জন্য কাকে আর দোষারোপ করব?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy