সকালে বেরিয়েছিল তৃণমূলের বিজয় মিছিল। বিকেলে সেই গ্রামেরই কিছু বাসিন্দা প্রশ্ন তুললেন, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করেও কেন তাঁরা মজুরি পাচ্ছেন না! সেই ক্ষোভে তৃণমূলের বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্যকে হেনস্থা হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্ষোভের মুখে পুলিশও।
ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি। সোমবার বিকেলে স্থানীয় দিয়াশি গ্রামে বিদায়ী তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বিমল সরেনকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে কিছু গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। রাতে গ্রামে গিয়ে দু’জনকে আটক করে পুলিশ। তখন পুলিশের গাড়ি ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারী মহিলারা আটক দু’জনকে ছাড়িয়েও নেন। গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের গাড়ি আটকে চলে বিক্ষোভ। শেষে গ্রামবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাসে পুলিশ ঘেরাওমুক্ত হয়।
বেলপাহাড়ি-সহ ঝাড়গ্রামের কিছু এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে তুলনায় খারাপ ফল করেছে তৃণমূল। তবে যে দিয়াশিতে সোমবার গোলমাল বাধে, সেখানে এ বারও তৃণমূল জিতেছে। ওই এলাকা যে গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন, সেই ভেলাইডিহাও তৃণমূলের দখলে এসেছে। শাসকের এমন খাসতালুকেও গ্রামবাসীর হাতে তৃণমূলের বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য বিমল সরেনের ( এ বার অন্যজন জিতেছেন) হেনস্থায় তাই প্রশ্ন উঠছে।
ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া বিমল। তাঁর মোবাইল বন্ধ। তৃণমূলের বেলপাহাড়ি ব্লক কার্যকরী সভাপতি বিকাশ সিংহের অভিযোগ, “বিরোধীরাই পরিকল্পিত ভাবে গোলমাল পাকাচ্ছে।” বাম-বিজেপি সেই অভিযোগ মানেনি।
গত কয়েক দিন ধরেই ঝাড়গ্রামের নানা প্রান্তে বিভিন্ন অভিযোগকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধছে। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্ষোভের নিশানায় তৃণমূল ও পুলিশ। ক’দিন আগে গোপীবল্লভপুরের শাসড়ায় যেমন তৃণমূল সমর্থককে মারধরে অভিযুক্ত দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করতে গিয়ে একাংশ গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল পুলিশ। সে দিনও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়, পুলিশকর্মীরা মার খান। সোমবার লালগড়েও অশান্তি হয়েছে। মাঝিপাড়ায় প্রস্তাবিত দমকলকেন্দ্রের জমি পরিষ্কারের সময় ঠিকাদারের লোকজন শালগাছ কেটে নিয়েছে, এই অভিযোগে ধুন্ধুমার বাধে। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হয় তৃণমূল নেতাদের।
তৃণমূল সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলে তুলনামূলক খারাপ ফলের কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, একাংশ নেতার স্বজনপোষণ ও দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এমন অবস্থায় বিরোধীরা অশান্তি উস্কে দিচ্ছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। শাসকদলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, “বিজেপি ও বিরোধীরা বাইরে থেকে দুষ্কৃতী ও অস্ত্র আমদানি করে এলাকায় উগ্রপন্থাকে মদত দিচ্ছে।” পরপর গোলমালে উদ্বিগ্ন পুলিশ-প্রশাসনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy