জলছবি: বৃষ্টি ভেজা বালুরঘাট। শুক্রবার। ছবি: অমিত মোহান্ত।
কালিদাস মেঘ-সমাগমের সুবাদেই আষাঢ়স্য প্রথম দিবসকে ‘মেঘদূত’-এর সূচনায় অমর করে গিয়েছেন। কিন্তু বাংলার পোড়া কপাল! আষাঢ়ের প্রথম দিনে আকাশে তেমন মেঘই নেই। অথচ মৌসম ভবন বলছে, সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে বর্ষা!
গত সোমবার দিঘা হয়ে রাজ্যে ঢুকে সোজা উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিল মৌসুমি বায়ু। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, তার পাঁচ দিনের মাথায়, শুক্রবার বর্ষা ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের বাকি এলাকায়, সেই সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের একাংশেও। কিন্তু আমজনতার প্রশ্ন, বর্ষা যদি এসেই থাকে, আকাশে মেঘের ঘটা কই? টানা বৃষ্টি তো দূরের কথা, কলকাতার বিভিন্ন এলাকা এবং জেলার অনেক অঞ্চলে বৃষ্টির মুষ্টিভিক্ষাও যে মিলছে না। ফলে খাতায়-কলমে বর্ষা ঢুকলেও বৃষ্টি নিয়ে হাহুতাশ কিন্তু কাটেনি।
ব়ৃষ্টি একেবারেই হচ্ছে না, এ কথা মানতে রাজি নন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) স়ঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। খাস আলিপুরে ওই দিন সন্ধ্যায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। বর্ষা আসার পরে তাপমাত্রাও অনেকটা নেমে গিয়েছে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বাঁকুড়ায় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বিকেলে বৃষ্টি হয়েছে নদিয়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার একাংশে।
কিন্তু বর্ষা বলতে যে-অঝোর ধারার বৃষ্টি বোঝায়, সেটা হবে কবে?
হাওয়া অফিসের বক্তব্য, বর্ষার আগমন থেকে তীব্রতার ওঠাপড়া পর্যন্ত সবই নির্ভর করে নিম্নচাপের উপরে। পশ্চিমের ছিনতাইবাজ নিম্নচাপ এ বার বর্ষাকে টেনে নিয়ে চলে যাওয়ার পরে বঙ্গোপসাগরের পাল্টা এক পরাক্রান্ত নিম্নচাপই মৌসুমি বায়ুকে উদ্ধার করে বাংলায় পৌঁছে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মেই ক্ষমতা খুইয়েছে সেই উপকারী নিম্নচাপ। আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, টানা বৃষ্টি হতে গেলে নিম্নচাপের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে মৌসুমি বায়ুকেও জোরালো হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু আপাতত তেমন কোনও পরিস্থিতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, অঝোরে না-হলেও আগামী কয়েক দিনে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহের গোড়ায় উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়তে পারে। দিন তিনেক পরে মৌসুমি বায়ুর জোর বা়ড়ার সম্ভাবনা আছে। তখন বাকি পূর্ব ভারতেও বর্ষা ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন আলিপুরের বিজ্ঞানীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy