Advertisement
E-Paper

Waterlogged: চার ভাগ জলে যুদ্ধে দমদম পার্ক, অসহায় প্রশাসন

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের দমদম পার্কের ছবি বর্ণনার থেকেও জটিল ও সঙ্গিন। তিন দিন জলবন্দি মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৩৫
দুঃসহ: জল জমে তিন দিন ধরে। অগত্যা এ ভাবেই যাতায়াত। বুধবার, দমদম পার্কে।

দুঃসহ: জল জমে তিন দিন ধরে। অগত্যা এ ভাবেই যাতায়াত। বুধবার, দমদম পার্কে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

দৃশ্য ১: একতলায় জল। তাই বছর ৮০-র অসুস্থ নিয়তি সিংহরায়কে নিয়ে যাওয়া হল কাছেই মেয়ের ফ্ল্যাটে। রিকশাচালকের সাহায্যে এক কোমর জল ডিঙিয়ে তাঁকে নিয়ে যেতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা।

দৃশ্য ২: সোফার স্থান টেবিলে। বিদ্যুৎ নেই। যেটুকু জল ছিল, তা-ও প্রায় তলানিতে। ‘জল কোথায় পাই’? সেই খোঁজ রাখতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। আতঙ্কিত গৃহকর্ত্রী আলো বিশ্বাসের কথায়, ‘‘খড়দহের একটা পরিবার আর দমদমের দুই কিশোরী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শেষ হয়ে গেল! আমরাও তো জলেই বাস করছি।”

দৃশ্য ৩: বাড়িতে জল হাঁটুর উপরে। কিনতে হচ্ছে পানীয় জল। বিপদ এড়াতে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ। গৃহকর্তা রাজেশ গুপ্তের কথায়, “তিন দিন হয়ে গেল। আর কত দিন লাগবে জানি না।”

দৃশ্য ৪: একতলায় জল। মিটার বক্সেও জল ছুঁইছুঁই। টানা দু’দিন বিদ্যুৎহীন। রূপক দাসের অসহায় জিজ্ঞাসা, “এ ভাবে আর কত দিন?”

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের দমদম পার্কের ছবি বর্ণনার থেকেও জটিল ও সঙ্গিন। তিন দিন জলবন্দি মানুষ। বিপদ এড়াতে কোথাও বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। নেই পর্যাপ্ত জল। খাবার, ওষুধ বা জরুরি জিনিসের পরিষেবা পাওয়াও অসম্ভব। তিন নম্বর ট্যাঙ্ক এলাকায় হাঁটুজল, চার ও পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্কে জল কোমর সমান।

মঙ্গলবার দীর্ঘ ক্ষণ বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু এত জল আসছে কোথা থেকে? বাগজোলা খালের জলেই ভাসছে এলাকা। দক্ষিণ দমদম পুরসভা জানিয়েছিল, বৃষ্টি না হলে বুধবারের মধ্যে জল নেমে যাবে। সেই আশায় জল ঢেলে দিল মঙ্গলবার রাত ও বুধবার দুপুরের বৃষ্টি। বাগজোলা খাল সংলগ্ন ১৫-২০টি ওয়ার্ড জলমগ্ন ঠিকই, তবে দমদম পার্কের অবস্থা জটিল।

খাল টইটম্বুর। বাসিন্দাদের কথায়, এলাকায় জলাশয় কমে নগরোন্নয়ন হচ্ছে, তারই ফল মিলছে। বেশির ভাগ জায়গায় পাম্প, মিটার বক্স জলের নীচে। কোথাও ঝুলতে থাকা তারে আতঙ্ক বাড়ছে। খারাপ হওয়ার আতঙ্কে ট্যাক্সি বা গাড়ি ঢুকছে না। এর মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কী হবে? সেটা ভাবতে পারছেন না বাসিন্দারা।

এ দিন সকাল থেকেই দমদম পার্কে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। ছিলেন বিধাননগরের মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ পণ্ডা এবং পুলিশের আধিকারিকেরা। দমকলের দু’টি পাম্প চালিয়ে এবং লকগেট খুলেও কাজ হয়নি। মন্ত্রীর দাবি, অল্প সময়ে অতিবৃষ্টি হয়েছে। বাগজোলা খালের অবস্থান দমদম পার্কের থেকে উঁচুতে। ফলে খালের জল ঢুকেছে। বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা চলছে। শীতে যাতে কেষ্টপুর এবং বাগজোলা খালের সংস্কার হয়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্ত্রীর দাবি।

দমদম পার্ক, কালিন্দী ছাড়াও দক্ষিণ দমদমের মাঠকল, বেদিয়াপাড়া, মধুগড়, পূর্ব সিঁথি, জ’পুর-সহ ১৫-২০টি ওয়ার্ডে খালের জল ঢুকেছে। সঙ্গে বৃষ্টির জল। নিকাশি ব্যবস্থার কাঠামোই হল খাল। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, সেগুলি কেন সংস্কার হয়নি? দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর এক সদস্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মানছেন, নালা রুদ্ধ হলে এত জল জমে না। বাগজোলা-সহ বিভিন্ন খাল সংস্কার না হওয়ায় এই জটিল সমস্যা। দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বলছেন, ‘‘খালের জলে ভাসছে এলাকা। পাম্প চালিয়েও বেরোচ্ছে না। অসহায় লাগছে।’’

Dum Dum Park Waterlogged Heavy Rain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy