Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
দায় সিপি-র, বলছে পুলিশ

বাবুল নিয়ে লোকসভার দফতরের চিঠি ডিজিকে

টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে তাঁকে অশালীন আক্রমণ করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে দু’বার আলিপুর থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল আলিপুর থানার পুলিশ।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:১২
Share: Save:

টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে তাঁকে অশালীন আক্রমণ করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে দু’বার আলিপুর থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল আলিপুর থানার পুলিশ। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসল লোকসভার অধ্যক্ষের অফিস। এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কেন এ ভাবে ‘হেনস্থা’ করা হচ্ছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থের কাছে তার জবাব চেয়ে পাঠিয়ে চিঠি দিয়েছে অধ্যক্ষের অফিস।

জবাব তলবই শুধু নয়, বাবুলের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে এবং তার গুরুত্ব কতটা, তা নিয়েও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে লোকসভার সচিবালয়ের ‘প্রিভিলেজ অ্যান্ড এথিক্স’ শাখা। নবান্নের খবর, লোকসভার সচিবালয় রাজ্যের পুলিশ প্রধানের কাছে জবাব চাইলেও এর পুরো দায় কলকাতা পুলিশের উপরেই চাপাতে চাইছে রাজ্য পুলিশের সদর দফতর। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘প্রিভিলেজ অ্যান্ড এথিক্স শাখার তোলা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের। কারণ, তাঁর পুলিশই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে আলিপুর থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল।’’ কার্যত, এই যুক্তি সামনে রেখেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে প্রাথমিক জবাব তৈরি করতে বলা হয়েছে বলে নবান্নের খবর।

সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রের বিজেপি সাংসদ কিরীট সোমাইয়া লোকসভার অধ্যক্ষা সুমিত্রা মহাজনের কাছে বাবুলকে থানায় ডেকে পাঠানো নিয়ে অভিযোগ করেন। গত ৪ জানুয়ারি আলিপুর থানায় যে মামলা দায়ের হয়েছে, তার উল্লেখ করে কিরীট অধ্যক্ষকে লেখেন, এক জন সাংসদ তথা মন্ত্রীর সঙ্গে যে আচরণ করা উচিত কলকাতা পুলিশ তা করেনি। সমস্ত রকম ‘প্রোটোকল’ ভেঙে মন্ত্রীকে হেনস্থা করতে বার বার থানায় ডাকা হয়েছে। এটা সাংসদের স্বাধিকার ভঙ্গেরই সামিল। ওই চিঠির ভিত্তিতেই ‘প্রিভিলেজ অ্যান্ড এথিক্স’ শাখা এ রাজ্যের ডিজির কাছে জবাব চেয়েছে। পাশাপাশি বাবুলও লোকসভার অধ্যক্ষার কাছে চিঠি পাঠিয়ে পুলিশের হেনস্থার বিহিত চেয়েছেন।

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘তদন্তের স্বার্থে যে কোনও সময় যে কোনও ব্যক্তিকে থানায় ডেকে পাঠানোর অধিকার রয়েছে তদন্তকারী অফিসারের। তাই এ ক্ষেত্রে অন্যায় কিছু হয়নি।’’ বাবুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কতটা গুরুতর, সেটি আদৌ মামলাযোগ্য কি না, তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে কি না, তা জানতেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই দিল্লিকে জবাব দেওয়া হবে— জানাচ্ছেন ওই শীর্ষ কর্তা।

বাবুল এ দিন বলেন, ‘‘টিভির পর্দায় প্রধানমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছিল। সেই কারণেই বক্তার মানসিক স্থিতির কথা জানতে চেয়েছিলাম। টেলিভিশন বিতর্কে এ সব হামেশাই হয়ে থাকে। তার জন্য মামলা হল এবং থানায় হাজিরা দিতে বলা হল! এর চেয়ে বড় হেনস্থা আর কী হতে পারে?’’ কিন্তু যা-ই হোক, এ বারে তিনি কি করবেন? কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জবাব, ‘‘আমি তদন্তকারী অফিসারকে লিখিত ভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, জেরার জন্য আবার নোটিস পাঠিয়ে আমাকে উনি যেন হেনস্থা না করেন। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি চাই, পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ উর্দির সম্মান রাখুক। দলদাসে যেন পরিণত না হয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha DG Babul Supriyo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE