Advertisement
E-Paper

চোরাশিকারে অধরা পান্ডারা, পিছনে কি কিছু বনকর্তাই?

জালে চুনোপুঁটি ধরা পড়ছে আকছার। কিন্তু রাঘববোয়ালেরা বেমালুম রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। কোন মন্ত্রে সম্ভব হচ্ছে এটা? গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত অপরাধ দমনের খতিয়ান দেখে এই প্রশ্ন জাগছে প্রশাসনেরই অনেকের মনে।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায় ও শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৬

জালে চুনোপুঁটি ধরা পড়ছে আকছার। কিন্তু রাঘববোয়ালেরা বেমালুম রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। কোন মন্ত্রে সম্ভব হচ্ছে এটা? গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত অপরাধ দমনের খতিয়ান দেখে এই প্রশ্ন জাগছে প্রশাসনেরই অনেকের মনে।

প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, গত দু’বছরে উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা বেড়েছে। ধরপাকড়ের অভিযান যে চলছে না, তা নয়। চলছে। কিছু কিছু চুনোপুঁটি ধরাও পড়ছে। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হল, চোরাশিকারের মূল চক্রের কোনও হদিসই করে ওঠা যায়নি। কেন করা যায়নি? এই প্রশ্নের সদুত্তর মিলছে না। তাই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি এই ধরনের অপরাধ দমনে যুক্ত কোনও কোনও বনকর্তাই ঘুরপথে মদত দিচ্ছেন অপরাধীদের?

একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি গরুমারায় গন্ডার-হত্যার তদন্তে চোরাশিকারিদের মদতদাতা হিসেবে বন দফতরের এক আধিকারিক এবং অন্য কয়েক জন কর্মীর নাম সন্দেহের তালিকায় উঠেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সেই সব নাম প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না তদন্তকারীরা। শুক্রবার গরুমারায় যান রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ। তিনি নিজে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে বনমন্ত্রী বিনয় বর্মণকে রিপোর্ট দেবেন। বিনয়বাবু বলেন, ‘‘প্রধান মুখ্য বনপালের সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ গরুমারার গন্ডার-হত্যার তদন্তে জলপাইগু়ড়ি জেলা পুলিশকে সাহায্য করছে সিআইডি।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরে উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত অপরাধ দমনে এক বনকর্তার ভূমিকা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ উঠছিল। চক্রের ছোটখাটো সদস্যদের ধরে মাথাদের রেহাই দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ভুয়ো গ্রেফতারির ঘটনাও আছে। তদন্তকারীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে গ্রেফতারির সব তালিকাই খতিয়ে দেখা হবে। গন্ডারের খড়্গ এবং হাতির দাঁত পাচারের অভিযোগে গত ৫ জানুয়ারি তিন জন ভুটানি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বন্যপ্রাণ শাখার প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত পরে অবশ্য জানান, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ওই সব খড়্গ ও দাঁত আসল নয়।

উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে চোরাশিকারিদের নতুন কোনও দল তৈরি হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মেদলা ওয়াচটাওয়ারের অদূরে জলঢাকা নদীর চরে গন্ডার-হত্যার পরেই তড়িঘড়ি তিন জন প্রাক্তন চোরাশিকারিকে পাক়ড়াও করা হয়। তাঁরা পুনর্বাসন পেয়ে বনকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু ওই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তার পরে সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ওখানে আগে কোনও দিন চোরাশিকারের ঘটনা ঘটেনি। কার্তুজের বদলে বিষপ্রয়োগে গন্ডার খুনের পদ্ধতিও অভিনব। বন দফতরের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ না-থাকলে ওই এলাকায় শিকার সম্ভব নয় বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’

Crime Poaching Forest Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy