E-Paper

এসআইআর, ‘বাংলা বাঁচাও’ বুথে নামাচ্ছে সিপিএমকে

বিধানসভা ভোটের আগে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ করে সংগঠনকে চাঙ্গা এবং স্থানীয় স্তরে মানুষের প্রতিক্রিয়া পরখ করতে চেয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫২
‘ বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র পথে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

‘ বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র পথে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

রাজ্য জুড়ে চলছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া। তারই মধ্যে উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জ থেকে কলকাতার কাছে কামারহাটি পর্যন্ত সদ্য হয়ে গিয়েছে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। পাশাপাশি দুই পর্বেই তৃণমূল স্তরে মানুষের সাড়াকে ‘ইতিবাচক’ বলে মনে করছে সিপিএম। দুই পর্বেই দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যে ভাবে সাধারণ মানুষের সংয‌োগ হয়েছে, তাকে পুঁজি করে শীতের উৎসবের মরসুমেই বুথ ধরে বৈঠক, আড্ডার পথে সম্পর্কের বৃত্ত আরও বড় করতে চাইছে সিপিএম।

বিধানসভা ভোটের আগে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ করে সংগঠনকে চাঙ্গা এবং স্থানীয় স্তরে মানুষের প্রতিক্রিয়া পরখ করতে চেয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলে জেলা ও এলাকাভিত্তিক মুখকে সামনে রাখার পরিকল্পনাও ছিল ওই যাত্রায়। কোচবিহারের তুফানগঞ্জে ২৯ নভেম্বর শুরু হয়ে ১১টি জেলার হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে বুধবার রাতে কামারহাটির দেওয়ানপাড়া মাঠে সমাবেশ করে শেষ হয়েছে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। সমাপ্তি সমাবেশে শীতের রাতে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। তার আগে অশোকনগর, গাইঘাটা, বনগাঁ, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া থেকে শুরু করে উত্তর শহরতলির পানিহাটি—নানা জায়গাতেই যাত্রা ঘিরে মানুষের সাড়া সিপিএমকে উজ্জীবিত করেছে। সূত্রের খবর, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া দলের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের প্রথম দিনে সেই মনোভাবই উঠে এসেছে জেলার নেতাদের বক্তব্যে। এসআইআর-এ সহায়তা এবং ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ থেকে জনসংযোগ তৈরি হল, তাকে ভোটের আগে কাজে লাগানোর কথা হচ্ছে বৈঠকে।

সিপিএম সূত্রের খবর, বিশেষত উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র প্রভাব বেশ ভাল। রাজ্য কমিটিতে জেলার নেতাদের রিপোর্টে উঠে এসেছে, তাঁরা যতটা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়ে ভাল ফল মিলেছে। এই সূত্রেই আলোচনায় এসেছে, নানা জায়গায় যে সব বাড়িতে হয়তো দীর্ঘ দিন সিপিএমের যাতায়াত ছিল না, এসআইআর-এর ফর্ম পূরণের সূত্রে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ হয়েছে। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতাও একই সুযোগ এনে দিয়‌েছে। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই অন্তত ১০ হাজার বুথকে প্রাথমিক লক্ষ্য ধার্য করে ঘরোয়া আসর, বৈঠকের মাধ্যমে আরও জনসংযোগের কর্মসূচি নিতে চলেছে সিপিএম। রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষ পর্বে ওই অভিযানের পরিকল্পনা সবিস্তার ব্যাখ্যা করতে পারেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

তবে দলের মধ্যেই প্রশ্ন, যুব সংগঠনের উদ্যোগে ‘ইনসাফ যাত্রা’ রাজ্যে ভাল সাড়া ফেলেছিল। হয়েছিল ব্রিগেড সমাবেশ। কিন্তু তার পরে লোকসভা ভোটে সিপিএম বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। এ বার তাই বাড়তি তৎপরতার দাবি উঠছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘সেই ‘ইনসাফ যাত্রা’ হয়েছিল যুব সংগঠনের সাদা পতাকা নিয়ে, সেই পতাকায় ভোট হয় না। এ বারের পরিকল্পনা সরাসরি দলের। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ আশাতীত সাড়া পেয়েছে। এখন এসআইআর-এর শুনানি-পর্বে আমাদের থাকতে হবে মানুষের পাশে, সেই সঙ্গে বুথ স্তরে যোগাযোগ বাড়িয়ে নিতে হবে।’’

দু’বছরের ব্যবধানে দুই যাত্রাতেই সামনের সারিতে ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এ বারের যাত্রা শেষে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তরুণ সদস্যের মত, ‘‘ইনসাফ যাত্রায় প্রতি জেলায় কিছু সন্ত্রস্ত, মলিন মুখ দেখেছিলাম। এ বার মানুষের চোখে সাহস দেখছি। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে রাগ দেখছি। মানুষ লড়াইয়ে একজোট হচ্ছেন। বাংলা বাঁচাতে তাঁরাই ভরসা।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy