Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
minakhan

ভোটের আগে কি ভয় দেখাতে বোমা মজুত

বুধবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার চাঁপালি পঞ্চায়েতের বকচোরা গ্রামে আবুর বাড়িতে বোমা ফেটে মারা যায় তার ভাগ্নি, তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সোহানা খাতুন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নির্মল বসু 
মিনাখাঁ শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩১
Share: Save:

বিস্ফোরণ কাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার করা হল মৃত শিশুটির মামা আবু হোসেন গাইনকে। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় আবু তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। এই ঘটনায় জখম আরও দুই শিশুর চিকিৎসা চলছে স্থানীয় হাসপাতালে। আবুর বাড়িতে কেন বোমা মজুত করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। স্থানীয় একটি সূত্রের খবর, ভেড়ি এলাকায় কাঁচা টাকার উপরে দখলকে কেন্দ্র করে অতীতেও গোলমাল বেধেছে। তৃণমূলের এক গোষ্ঠীকে চাপে রাখতেই অন্য গোষ্ঠী এখন অস্ত্র মজুত করছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

আবু তাঁদের দলের কেউ নন বলে এর মধ্যেই দাবি শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের। বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান বলেন, ‘‘হত্যাকে কোনও মানুষ সমর্থন করেন না। প্রশাসন রং এবং দল না দেখে তদন্ত করছে।’’

বুধবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার চাঁপালি পঞ্চায়েতের বকচোরা গ্রামে আবুর বাড়িতে বোমা ফেটে মারা যায় তার ভাগ্নি, তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সোহানা খাতুন। মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল সে। তারই সঙ্গী, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রহিমা পরভিন ও পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া আনিসা খাতুনও জখম হয়েছে। পুলিশের দাবি, আবুর বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় বোমা-গুলি ছোড়া, গাড়ি জ্বালানো-সহ একাধিক অভিযোগ আছে। ২০১৬ সালে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেফতারও হয় সে। মিনাখাঁর এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবুকে দেবীতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দুই ভাইয়ের খোঁজ চলছে।’’ তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, ভয় দেখানোর জন্য কমজোরি বোমা মজুত হয়েছিল। শক্তিশালী বোমা হলে বিস্ফোরণের অভিঘাত আরও বেশি হত।

ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার পৃথক ভাবে এলাকায় মিছিল করে সিপিএম এবং তৃণমূল। তৃণমূল নেতা ফরিজুল মোল্লা বলেন, ‘‘দলের এক নেতার মদতেই দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত।’’ সিপিএম নেতা প্রদ্যোৎ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের মধ্যে গোলমাল বাধাতেই বোমা-অস্ত্র মজুত করছে।’’ থানার সামনে এ দিন সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের। এক পুলিশকর্তার দাবি, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ অভিযান চালায়।

বোমা-সন্ধান অবশ্য এখানেই শেষ নয়। বুধবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে মাঠে পড়ে থাকা বোমাকে নারকেল ভেবে কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল দুই শিশু। এক জন তা দেখতে পেয়ে বোমা জলে ফেলে দেন। গত ছ’মাসে ভাঙড় ও কাশীপুর থানা এলাকা থেকে বেশ কিছু বোমা উদ্ধার হয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে ভাঙড় কেন্দ্রে তৃণমূলকে হারায় আইএসএফ। তার পর থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও নতুন নয়। আবার বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে বুধবারই কুলপির গ্রামে দুই নাবালক জখম হয়েছিল। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৩ দুষ্কৃতী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

minakhan bomb TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE