Advertisement
E-Paper

রানিকাহিনি! বিপাকে চিরঞ্জিৎ

বৈঠক শেষে প্রেক্ষাগৃহ থেকে চিরঞ্জিৎ বের হতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন কলোনির লোকজন। জানতে চান, ভোটে প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেন উন্নয়ন হল না? কেন স্টেডিয়াম, আর্ট গ্যালারি নিয়ে না বলে গরিব মানুষের সামান্য প্রয়োজনের কথা তিনি তুলে ধরলেন না!

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮
বিধায়ককে ঘিরে মহিলাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

বিধায়ককে ঘিরে মহিলাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

এক রানি গরিব মানুষকে রুটির বদলে কেক খেতে বলে ইতিহাস গড়েছিলেন। আর এ রাজ্যের ‘রানি’ কুঁড়ে ঘরে থেকেও সকলের হাঁড়ির খবর রাখেন।

এই সুরে ভাষণ শুরু করে হাততালি কুড়িয়েছিলেন বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। প্রশাসনিক বৈঠকে বসে এত স্তুতিবাক্য শুনে রাজ্যের ‘রানি’র মুখেও তখন অপ্রস্তুত হাসি।

সভা ছেড়ে বেরিয়ে বিধায়ককে অবশ্য যে পরিস্থিতিতে পড়তে হল, তাতে ফের উঠল রুটি-কেকের প্রসঙ্গ। বিধায়কের মুখ থেকে তাঁদের ছোট ছোট দাবি-দাওয়াগুলোর কথা মুখ্যমন্ত্রীর দোরগোড়ায় পৌঁছবে মনে করে যাঁরা টিভির সামনে বসেছিলেন, তাঁরা হতাশ। সভা শেষ হতেই রবীন্দ্রভবন-লাগোয়া ইন্দিরা কলোনি থেকে বেরিয়ে এসে মানুষজন ঘিরে ধরলেন বিধায়ককে। মন্তব্য উড়ে এল, ‘‘রুটি-কেকের কথা তো অনেক শোনালেন। আমাদের ঘরে সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমছে, সে কথাটা কি বলতে ভুলে গেলেন?’’ আর একজনের গলা পাওয়া গেল, ‘‘স্টেডিয়াম, আর্ট গ্যালারি নিয়ে না বলে শৌচালয় নিয়ে ভোগান্তির কথাটা দিদির কানে তুলতে পারতেন।’’

সপ্রতিভ ভঙ্গিতে সেই গুগলি সামলাতে গিয়ে ঢোঁক গিলতে হল অভিনেতা-বিধায়ককে। কোনও রকমে গা়ড়িতে উঠে এলাকা ছাড়লেন।

আরও পড়ুন: গরু আসছে বিজেপির দুই রাজ্য থেকেই

মঙ্গলবার চিরঞ্জিৎ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় শুরুটা করেছিলেন দিব্যি। ম্যাডামের মেজাজ কখন তিরিক্ষি হয়, সেই ভয়ে যখন মন্ত্রী-সান্ত্রি-বিধায়কেরা জড়োসড়ো, তখন উঠে দাঁড়ালেন চিরঞ্জিৎ। মুখে এক চিলতে হাসি। মাইক হাতে ভরাট গলায় শুরু করলেন, ‘‘একটা গল্প বলি, সকলে শুনুন। ভাল লাগবে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মুখেও হাসি। চিরঞ্জিৎ বলে চললেন, ফ্রান্সের রানি মারি আঁতোয়ানেতের কথা। রাজপ্রাসাদের সামনে ভুখা মিছিল থেকে যখন রুটির দাবি উঠছে, তখন রানি বিস্মিত হয়ে নাকি বলেছিলেন, রুটি নেই তো কী, ওরা কেক খেলেই পারে!

দাবি পেশের সময়ে বারাসত স্টেডিয়ামের আধুনিকীকরণের কথা বললেন চিরঞ্জিৎ। ক্রীড়া দফতর থেকে সেই টাকা মিলবে, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। আর্ট গ্যালারির দাবি মিটবে সাংসদ কোটার টাকায়, তা-ও কথা দিলেন। বিধায়ক চাইলেন, উন্নতমানের একটি প্রেক্ষাগৃহ। বারাসতে রবীন্দ্রভবন আছে। সেখানেই হয়েছে এ দিনের সভা। ধৈর্য হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ বার বললেন, ‘‘একটা আছে, ফের চাইছেন? আমার বাবার টাকা নাকি? সরি টু সে, পাবলিকের টাকা এ ভাবে নষ্ট করা যায় না।’’ এরপরেও মিউজিয়ামের আবদার। পাত্তা দিলেন না মমতা।

বৈঠক শেষে প্রেক্ষাগৃহ থেকে চিরঞ্জিৎ বের হতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন কলোনির লোকজন। জানতে চান, ভোটে প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেন উন্নয়ন হল না? কেন স্টেডিয়াম, আর্ট গ্যালারি নিয়ে না বলে গরিব মানুষের সামান্য প্রয়োজনের কথা তিনি তুলে ধরলেন না!

বিধায়ক পরে বললেন, ‘‘ওঁরা বোধহয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। না পেয়ে আমাকেই সে সব বলেছেন। ওই এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। আলোচনায় মিটিয়ে ফেলা যাবে।’’

Chiranjeet Chakraborty MLA Barasat Development Administrative Meeting Mamata Banerjee চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy