গভীর রাতে আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে গিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা দেখেন, গ্রিলের গেটের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছেন স্বামী। ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে বধূর দেহ। সেখানেই পড়ে রক্তমাখা হাতুড়ি এবং একটি পাইপগান। বিছানায় ঘুমোচ্ছে দম্পতির চার বছরের মেয়ে। রবিবার রাতে বর্ধমানের কুলটিতে এই ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
সন্তোষ বাউড়ি নামে ওই ব্যক্তি আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস সোমবার বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। বিশেষ অগ্রগতি হয়নি।’’
কুলটির লোকনাথপল্লিতে বছর দু’য়েক আগে বাড়ি ভাড়া নেন সন্তোষবাবু। স্ত্রী অণিমা বাউড়ি (৩৫) ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। পুলিশ জেনেছে, সন্তোষবাবু ইট-বালি সরবরাহ ও জমি কেনাবেচার মধ্যস্থতার কাজ করেন। পড়শিরা জানান, রবিবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ সন্তোষবাবুর ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে ছুটে যান তাঁরা। গেটের কাছে ছটফট করতে করতেই সন্তোষবাবু তাঁদের জানান, দুষ্কৃতীদের মারে জখম হয়ে তাঁর স্ত্রী ঘরে পড়ে রয়েছেন। এর বেশি তিনি কিছু বলতে পারেননি। পুলিশ দু’জনকেই আসানসোল হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে বধূটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সন্তোষবাবুকে পরে সরানো হয় দুর্গাপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অণিমাদেবীর ঘাড়, গলা ও বুকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সন্তোষবাবুর পেটের বাঁ দিকে গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলে মেলা হাতুড়ির আঘাত ও পাইপগানের গুলিতেই তাঁরা জখম হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। দম্পতির মেয়ের কাছ থেকে প্রাথমিক ভাবে কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ।
কমিশনারেটের এক পুলিশ-কর্তা জানান, জমি কেনাবেচা নিয়ে সন্তোষবাবুর সঙ্গে কারও বিবাদের জেরে এমন ঘটনা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু হামলা চালানোর পরে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত পড়শিরা কোনও শব্দ পেলেন না কেন, আততায়ীরা হামলার দু’টি অস্ত্রই বা ঘটনাস্থলে কেন ফেলে গেল—তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। এডিসিপি (পশ্চিম) জানান, সন্তোষবাবু কথা বলার অবস্থায় এলেই তাঁকে জেরা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy