Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আঙুল কি জুড়বে? শিশুটিকে আনা হচ্ছে কলকাতায়

কাটা আঙুল আদৌ কি জুড়বে? চিকিত্সকদের একাংশ বলছেন, না। কেননা, যে পদ্ধতিতে আঙুলটির কাটা অংশটিকে সংরক্ষণ করা উচিত ছিল তা হয়নি। ফলে, নয় দিনের শিশুর বুড়ো আঙুলের কাটা অংশটি ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের মত। কিন্তু, শেষ চেষ্টা করতে ক্ষতি কোথায়!

শিশুটিকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতার পথে রওনা হলেন ওই দম্পতি।—নিজস্ব চিত্র।

শিশুটিকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতার পথে রওনা হলেন ওই দম্পতি।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ১৩:৩১
Share: Save:

কাটা আঙুল আদৌ কি জুড়বে? চিকিত্সকদের একাংশ বলছেন, না। কেননা, যে পদ্ধতিতে আঙুলটির কাটা অংশটিকে সংরক্ষণ করা উচিত ছিল তা হয়নি। ফলে, নয় দিনের শিশুর বুড়ো আঙুলের কাটা অংশটি ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের মত। কিন্তু, শেষ চেষ্টা করতে ক্ষতি কোথায়!

তাই, মঙ্গলবার তড়িঘড়ি আঙুল কাটা শিশুটিকে কলকাতা পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে। শিশুকন্যাটির বাবা-মাকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেন নগদ ১০ হাজার টাকা। একটি বাতানুকুল অ্যাম্বুল্যান্সে এক জন ডাক্তার এবং এক জন নার্স-সহ ওই দম্পতি তাঁদের শিশুকন্যাকে নিয়ে রাজ্যের একমাত্র সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। শেষ চেষ্টা!

কিন্তু, কাটা অংশটি নষ্ট হয়ে গেলে কী ভাবে জোড়া হবে আঙুল? চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, যে হেতু শিশুটি সদ্যোজাত তাই তার বৃদ্ধি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। সে ক্ষেত্রে রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি করে এক বার শেষ চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।


অ্যাম্বুল্যান্সে শিশুটি।

বিষয়টি নিয়ে এ দিনই মুখ কুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযুক্ত নার্সের চাকরি যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলার আগে পর্যন্ত দায় এড়ানোর চেষ্টা করছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ঘটনাটিকে হাসপাতালের আংশিক গাফিলতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নার্সের গাফিলতি ছিল ওই ঘটনায়। তা হলে ‘আংশিক’ কেন? সেই জবাবও এ দিন দেন হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস। তিনি জানান, স্যালাইনের চ্যানেল কাটার দায়িত্ব নার্সদের নয়। এই কাজটা চিকিৎসকরাই করে থাকেন। কিন্তু, বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসকদের সংখ্যা কম থাকায় মাঝে মাঝে নার্সদের দিয়ে এ ধরনের কাজ করানো হয়।

হাসপাতাল সুপারের জবাবে অবশ্য বিতর্ক থামছে না। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও পরিবারটিকে ফিরিয়ে দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব এই অভিযোগ তুলেছেন। অন্য দিকে, ঘটনায় পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই তিনি দু’বার ফোন করেছেন পরিবারটিকে। বলেছেন, “আমার বাড়িতে চলে এসো। এখানেই থাকবে। শিশুটির চিকিৎসার সব দায়িত্ব আমি নেব।”

মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত মণ্ডল পরিবার অবশ্য রূপার আশ্বাসে কোনও রকম সান্ত্বনা খুঁজে পায়নি। শিশুটির পিতা বাবলা মণ্ডল জানান, “আমরা শারীরিক ও মানসিক— দু’ দিক থেকেই ভেঙে পড়েছি। এক বার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দৌড়াদৌড়ি করে যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE