ছেলেমেয়ের সামনেই মায়ের গলায় ভোজালি ধরে তাঁকে ধর্ষণ করে পালাল এক দুষ্কৃতী। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় মহিলা বসিরহাট থানায় প্রতিবেশী বাচ্চু তরফদারের বিরুদ্ধে খুনের হুমকি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন শনিবার। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বসিরহাটের চাঁপাপুকুর এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলার বছর পাঁচেকের একটি ছেলে ও দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। স্বামী কলকাতায় কাজ করেন। ঘটনার রাতে মহিলার শ্বশুর-শাশুড়ি-সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যরা এক আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়েছিলেন। পুলিশকে মহিলা জানান, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ লোডশেডিং হয়। প্রচণ্ড গরমের জন্য বাচ্চারা ঘুমোতে চাইছিল না। রাত ১২টা নাগাদ তিনি মেয়েকে কোলে নিয়ে বাইরে বেরোন। ছেলে ঘরে ছিল। বারান্দায় ঘুরে ঘুরে মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। হঠাৎ সেখানে হাজির হয় প্রতিবেশী বাচ্চু। মহিলার কথায়, ‘‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই ও আমার গলায় ভোজালি ধরে খুনের হুমকি দিয়ে ঘরে যেতে বাধ্য করে। ভিতরে ঢোকার পর দরজার ছিটকিনি আটকে দিয়ে বাচ্চু অত্যাচার শুরু করে। বাধা দিতে গেলে ছেলেমেয়েকে খুনের হুমকি দেয়। ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।’’
তবে বাচ্চু চলে যাওয়ার পর তিনি প্রতিবেশীদের ডেকে সমস্ত ঘটনা জানান বলে মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন। খবর পেয়ে তাঁর স্বামী শুক্রবার বাড়ি ফেরেন। শ্বশুর-শাশুড়িও নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে ফিরে আসেন। সমস্ত ঘটনা তাঁরা স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যকে জানান। তাঁর পরামর্শে শনিবার, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থানায় গিয়ে মহিলা বাচ্চুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বছর চারেক আগে ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি একই ধরনের ঘটনা ঘটে বর্ধমানের কেতুগ্রামে। কাটোয়া-আমোদপুর ন্যারোগেজ লাইনে ডাকাতির সময় নাবালিকা মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তার বিধবা মাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় সাতজন ধরা পড়লেও একজন এখনও ফেরার। মামলা চলাকালীন দু’জনের মৃত্যু হয়। সরকার পক্ষ উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ জোগাতে না পারায় ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর কাটোয়া আদালতে বেকসুর খালাস হয় অভিযুক্তরা। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার হাইকোর্টে যাওয়ার কথা বললেও সেই মামলা এখনও হাইকোর্টে ওঠেনি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, পেশায় ভ্যানচালক ৪৫ বছরের বাচ্চু তরফদারের স্বভাব-চরিত্র ভাল নয়। তার তিনটি বিয়ে। বর্তমানে এক স্ত্রী বাড়িতে থাকলেও বাকি দু’জন তার অত্যাচারে আগেই বাড়ি ছেড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মহিলার উপরে কিছু দিন ধরেই তার কুনজর ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকায় এবং লোডশেডিংয়ের সুযোগেই সে এই কাণ্ড ঘটায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy