Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coromandel Express accident

রাতভর আতঙ্কে কাটিয়ে হাওড়ায় পা যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের, শুশ্রূষায় তৎপর কেন্দ্র-রাজ্য

রাজ্য সরকার এবং পুলিশের তরফে এই যাত্রীদের বাড়ি ফেরানোর জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। করা হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাও। হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ডিসিপি (নর্থ) অনুপম সিংহ।

Yesvantpur express carrying near about 1000 passengers reached Howrah after facing devastating accident with Coromandel Express

হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনোর পর চিকিৎসা চলছে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ১৫:২৬
Share: Save:

চোখের সামনে মৃতদেহের স্তূপ দেখে মনে ভয় ঢুকেছিল। কী করে বাড়ি ফিরবেন, তা নিয়েও তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত অবস্থায় রাতভর কেটেছে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায়। সারা রাত বালেশ্বর স্টেশনে আটকে থাকার পর হাওড়া পৌঁছলেন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের প্রায় হাজার জন যাত্রী। যাত্রীদের জন্য আগে থেকেই চিকিৎসকের দল প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। ব্যবস্থা করা হয়েছিল অ্যাম্বুলেন্সেরও। তবে যাঁরা যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে করে হাওড়া পৌঁছেছেন তাঁদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত নন বলে জানিয়েছেন রেল আধিকারিকেরা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একই সঙ্গে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে একটি মালগাড়িও (যদিও রেলের তরফে জানানো হয়েছে দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল)। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরাগুলি। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অনেকের। করমণ্ডলের পাশাপাশি, ক্ষতির মুখে পড়ে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দু’টি কামরা। আহত হন সেই ট্রেনের বহু যাত্রী। তার পর থেকেই সেই ট্রেনের যাত্রীরা বালেশ্বর স্টেশনে আটকে ছিলেন। শনিবার দুপুরে সেই যাত্রীদের নিয়ে হাওড়া ফিরল ট্রেনটি।

এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এসডিজিএম বিনীত গুপ্ত বলেন, ‘‘প্রথমে যে ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছয়, সেটি উদ্ধারকারী ট্রেন ছিল। সেই ট্রেনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের প্রায় ২০০ জন যাত্রী হাওড়া ফেরেন। এর পর প্রায় হাজার জন যাত্রীকে নিয়ে যশবন্তপুর এক্সপ্রেস হাওড়া পৌঁছয়। দুর্ঘটনার কবলে পড়া কামরা দু’টি সেখানেই রেখে বাকি ট্রেন ফিরে এসেছে। যাত্রীদের জন্য আগে থেকেই চিকিৎসকের দল তৈরি রাখা হয়েছিল। তাঁদের শুশ্রূষা চলছে। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’ হাওড়া রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষের তরফে ট্রেনের যাত্রীদের জন্য স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

তবে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের অভিযোগ, সারা রাত তাঁরা খাবার এবং জল ছাড়ায় বালেশ্বর স্টেশনে রাত কাটিয়েছেন। রেলের তরফে তাঁদের জন্য খাবার বা জলের ব্যবস্থা করা হয়নি। খড়্গপুরে এসে তাঁরা নিজের নিজের উদ্যোগে খাবারের ব্যবস্থা করেন বলেও যাত্রীদের একাংশ জানিয়েছেন।

রাজ্য সরকার এবং পুলিশের তরফে যাত্রীদের বাড়ি ফেরানোর জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। করা হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাও। হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ডিসিপি (নর্থ) অনুপম সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে হাওড়ায় আগত যাত্রীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের বাড়ি ফেরার জন্য ছোট-বড় গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। যদি কারও অবস্থা গুরুতর হয়, তা হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।’’

পাশাপাশি, হাওড়ার চিফ মেডিক্যাল সুপার চিকিৎসক দেবাশিস গুহ বলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকে সব ব্যবস্থাই করা হয়েছিল। কিন্তু যাঁরা এই ট্রেনে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ খুব একটা গুরুতর আহত হননি। তবে অনেকেরই চোট লেগেছে।’’

প্রসঙ্গত, ওড়িশার বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন সকাল ৮টা নাগাদ। তার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই সকাল ১১টায় রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় শনিবার সকাল পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ২৬১ জন। আহতের সংখ্যা ৬৫০।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE