গানের বিভাগে প্রথম তিন জন। নিজস্ব চিত্র
সকলেরই গানের হাতেখড়ি ছোট্ট থাকতেই। কারও বাবার হাত ধরে আবার কাউকে গান চিনিয়েছেন মা-ঠাকুমা। প্রথাগতভাবে গানের তালিম শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে তিনজনেরই প্রথম প্রেম গান। রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে অতুলপ্রসাদী হোক কিংবা নজরুল গীতি থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। তালিম চলেছে সবকিছুতেই। পড়াশোনার ফাঁকে সময় করে রেওয়াজ চললেও বাধা পড়েছে অনেক সময়েই। কিন্তু সবার মাঝে আলো ঝলমলে মঞ্চেও যে তাঁরা গান গাইতে পারেন সে কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের জন্য সেই মঞ্চই এনে দিয়েছিল পিসি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকার ‘অদ্বিতীয়া’। শনিবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়া সিটি সেন্টারে হয়েছে সেই অনুষ্ঠান।
শনিবার ‘অদ্বিতীয়া’র শিলিগুড়ির আঞ্চলিক পর্বে গানের বিভাগে প্রথম হয়েছেন শিলিগুড়ির চন্দ্রতপা ভট্টাচার্য। শহরের পূর্ব বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা চন্দ্রতপা সঙ্গীতে স্নাতকোত্তর করেছেন রবীন্দ্রভারতী থেকে। ছোটবেলায় মার্গারেট স্কুল তারপরে শিলিগুড়ি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক তিনি। বর্তমানে গবেষণার প্রস্তুতি নেওয়া চন্দ্রতপার গানে হাতেখড়ি হয়েছিল তিন বছর বয়সে ঠাকুমার কাছে। তিনি জানালেন, ঠাকুমার কোলে বসে তাঁর গানের শুরু। এখন বাবা ভাস্কর ভট্টাচার্য এবং মা পলি ভট্টাচার্য অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, ‘‘এখন বর্ণালী বসুর কাছে গান শিখি। সব ধরনের গানই গাই। অদ্বিতীয়া’র কথা জানতে পেরে, ভিডিয়ো পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি কী হয়, এই ভেবেই গিয়েছিলাম। আঞ্চলিক পর্বে প্রথম হব ভাবিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অদ্বিতীয়া একটা স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। সবার আশা বেড়ে গিয়েছে। কলকাতার মূল পর্বে গান করব ভেবেই ভাল লাগছে।’’
শিলিগুড়ির আঞ্চলিক পর্বে গানে দ্বিতীয় হয়েছেন শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি হাতিমোড়ের বাসিন্দা দেবস্মিতা সরকার। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্ক নিয়ে স্নাতকোত্তরের পরে শিলিগুড়ির একটি স্কুলে চাকরি করছেন তিনি। তিনি জানান, বাবা দুলাল গোবিন্দ সরকার সরকারি চাকরির ফাঁকে গানও করতেন। বাবার হাত ধরেই চার বছর বয়সে তাঁর গানের শুরু। তিনি বলেন, ‘‘এখন বর্ণালী বসুর কাছে গান শিখি। মা উৎসাহ দেন। অদ্বিতীয়া’র কথা শুনে এগিয়ে গিয়েছিলাম। প্রথম তিনজনের মধ্যে থেকেছি। ভাল লাগছে। অদ্বিতীয়ার মঞ্চ উৎসাহ বাড়িয়ে দিল। আর যাই করি, গান আমার সঙ্গে সারাজীবন থাকবে।’’
পড়াশোনার পাশাপাশি গান ধরে রেখেছেন জলপাইগুড়ির মোহন্তপাড়ার শ্রীতপা মিত্র মজুমদারও। শনিবার রাতে প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান পেয়েছেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে শ্রীতপা পড়াশোনা করেছেন বিশ্বভারতীতে। চার বছর আগে কলকাতায় বিয়ে হয়েছে তাঁর। স্বামী সন্দীপ মিত্র ইছাপুরে কর্মরত। এখন জলপাইগুড়িতেই একটি স্কুলে পড়ান শ্রীতপা। সংসার, পড়াশোনা এবং বেলেঘাটায় শ্বশুরবাড়ির আসা যাওয়ার ফাঁকে গানের চর্চায় মাঝে মাঝে কিছু ছেদ সময় পড়লেও ভালাবাসা হারাননি। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় একটি এফএম চ্যানেলের অনুষ্ঠানে প্রথম হয়েছিলাম। মা মঞ্জুরীদেবী সবসময় পাশে থেকেছেন। সোশ্যাল সাইট থেকে অদ্বিতীয়া’র কথা শুনে এসেছিলান। পুরস্কার পাব ভাবিনি। অদ্বিতীয়া’র মঞ্চ নতুন করে গানের প্রতি ভালবাসাকেও আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy