Advertisement
E-Paper

বাঁকুড়ার ‘নিখোঁজ’ যুবক ওড়িশার জেলে

ভুবনেশ্বরের স্পেশাল জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বছর চল্লিশের রবি সেখানে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুশীল মাহালি

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেড় দশক ধরে নিখোঁজ যুবক বেঁচে আছেন কি না, ধন্দ ছিল মা-র। তবে আশা ছাড়েননি স্ত্রী। হঠাৎ নতুন নড়াচড়া। নিজস্ব সূত্রে খবর পেয়ে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানার পুলিশ বুধবার রাতে গেল ছোট সারেঙ্গা গ্রামে রবি দুলের বাড়িতে। জানাল, ওড়িশার ভুবনেশ্বরে ১২ বছর ধরে জেলবন্দি রয়েছেন রবি। সে খবর পেয়ে রবির স্ত্রী প্রতিমা দুলে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক স্বামীকে ফিরে পেতে চাই।’’ সিমলাপাল থানায় গিয়ে এ দিনই জামাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে পুলিশের কাছে লিখিত আর্জি জানান প্রতিমার বাবা বিদ্যাধর দুলে।

ভুবনেশ্বরের স্পেশাল জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বছর চল্লিশের রবি সেখানে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন। জেলের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে রবি ধরা পড়েন। কবে তা জানি না। ওড়িশার গজপতি জেলার পারালাখেমুণ্ডি আদালত থেকে তাঁকে এ জেলে পাঠানো হয়।’’

রবির মা মায়ারানি দুলে জানাচ্ছেন, তিন ছেলের মধ্যে বড় রবি ও মেজো ছেলে চাঁদ দু’জনেই দীর্ঘদিন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘রবি খেপে উঠে পড়শিদের, আমাদের মারধর করত। কিছু দিনের জন্য বাড়ি থেকে উধাও হত। ফিরত। কিন্তু বছর পনেরো আগে বেরিয়ে আর ফেরেনি। ধরে নিই, খারাপ কিছু হয়েছে।’’ সে সময় তাঁরা থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করেননি, তা-ও জানান মায়াদেবী। স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পরে, রবির স্ত্রী প্রতিমা দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ওঠেন সিমলাপালের বাপের বাড়িতে। নিজে খেতমজুরি করে দুই ছেলে-মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন প্রতিমা। ফোনে স্বামীর খবর শুনে বলে ওঠেন, ‘‘সবাই বলত, ‘ও মারা গিয়েছে’। বিশ্বাস করিনি। তাই আজও শাঁখা-সিঁদুর পরি। আমার বিশ্বাসই সত্যি হল।’’ রবির দুই ছেলেমেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তারা বলে, ‘‘ছোট থেকে শুনেছি, বাবা নেই। বাবার খবর পেয়ে বলে বোঝাতে পারব না কেমন লাগছে।’’ প্রতিমার আর্তি, ‘‘যেমন করে হোক, স্বামীকে ঘরে ফেরাতে চাই।”

ভুবনেশ্বর জেলের ওই কারা-কর্তা জানাচ্ছেন, রবি এখনও বিচারাধীন। তিনি বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত কেউ জেলে রবির সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। তবে পরিজনেরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে ওঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।’’

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “একটি সূত্রে খবর এসেছিল, রবি ভুবনেশ্বরের জেলে রয়েছেন। পরিবার চাইলে আইনি সহায়তা দিতে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।” জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “ওই ব্যক্তির পরিবার সাহায্য চাইলে, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তা দেওয়া হবে।’’

Youth Bankura Jail Odisha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy