আধার নম্বর তৈরির জন্য নাগরিকদের ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নিতে ডিসেম্বরেই বেশ কিছু স্থায়ী শিবির চালু হবে রাজ্যে। জাতীয় জনগণনা দফতরের কর্তারা তেমনই আশা করছেন।
আধার-এর জন্য নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্য, ছবি, চোখের মণির ছবি, আঙুলের ছাপ ইত্যাদি (বায়োমেট্রিক তথ্য) সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছে জাতীয় জনগণনা দফতর। ২০১০-এর জনগণনা অনুযায়ী যাঁরা যে এলাকার বাসিন্দা, তাঁদের ওই সমস্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় অস্থায়ী শিবির হয়েছে। কিন্তু অনেকেই এখনও শিবিরে ডাক পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। কারও আবার অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহ হলেও আধার কার্ড এখনও পাননি। প্রতিটি এলাকায় দু’বার এই শিবির হওয়ার কথা। দু’বারই সেখানে কেউ ডাক না পেলে তিনি স্থায়ী শিবিরগুলিতে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে পারবেন।
সরকারি সূত্রের খবর, প্রতিটি এলাকায় যেমন দু’বার করে অস্থায়ী শিবির হওয়ার কথা, তা হবে। পাশাপাশি স্থায়ী শিবির হবে জেলার প্রতিটি ব্লক অফিস, জেলাশাসকের দফতর, রাজ্যের ১২৭টি পুরসভার সদর দফতর, কলকাতা পুরসভার সদর দফতর ছাড়াও ১৫টি বরো অফিস এবং হাওড়া পুরসভার সদর দফতর ও তার পাঁচটি বরো অফিসে। কবে থেকে কোথায় শিবির চালু হবে তা চূড়ান্ত না হলেও জনগণনা দফতরের কর্তাদের আশা, আগামী ডিসেম্বর থেকে ধাপে ধাপে তা চালু করা যাবে।
জাতীয় জনগণনা দফতরের বক্তব্য, চারটি জেলা হুগলি, হাওড়া, কলকাতা (মূলত কলকাতা পুরসভা এলাকা) এবং কোচবিহারে ইতিমধ্যেই দু’বার করে ওই শিবির হয়ে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া, বীরভূম ও দার্জিলিঙে এক বার করে শিবির হওয়ার পরে দ্বিতীয় দফায় শিবির চালু হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। এখনও প্রথম রাউন্ডের শিবির চলছে পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান ও বাঁকুড়ায়। নিয়ম অনুযায়ী, সেখানেও দ্বিতীয় রাউন্ডের শিবির হবে। তা সত্ত্বেও যদি কেউ ডাক না পান, তিনি স্থায়ী শিবিরে গিয়ে তথ্য দিতে পারবেন। এটিই সাধারণ নিয়ম, পরিস্থিতি অনুযায়ীও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এক বার বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার পরেও তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁদের আধার নম্বর তৈরি করা যায়নি। এঁদেরও তালিকা তৈরি করে ফের শিবিরে ডাকবে জনগণনা দফতর। আবার অনেকেই হয়তো আগে ডাক পেলেও কোনও কারণে শিবিরে যেতে পারেননি। নতুন শিবিরে ডাক পাবেন তাঁরাও।
আধার নম্বরের ভিত্তিতে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ব্যবস্থা চালু করেছিল কেন্দ্রের পূর্বতন ইউপিএ সরকার। কিন্তু তখন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার নম্বর তৈরি না হওয়া বা শিবিরে ডাক না পাওয়ার মতো অজস্র অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক ক্ষোভ ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় শুধু মাত্র গ্যাসের গ্রাহকদের জন্য ডিলারদের দোকানে স্থায়ী শিবির করার প্রস্তাব উঠলেও শেষ পর্যন্ত আধার ভিত্তিক ভর্তুকির ব্যবস্থা স্থগিত হয়ে যায়। ফলে গোটা বিষয়টিই ধামাচাপা পড়ে যায়।
এখন নরেন্দ্র মোদী সরকার ফের আধার কার্ড তৈরির উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আগামী মার্চের মধ্যে এ রাজ্যে পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিকের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জাতীয় জনগণনা দফতর। সেই লক্ষ্য থেকেই নির্ধারিত অস্থায়ী শিবিরের পাশাপাশি স্থায়ী শিবির চালু করার ভাবনা। নবান্নে রাজ্য ও কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে ইতিমধ্যেই স্থায়ী শিবির চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শনিবার কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গেও একপ্রস্ত বৈঠক করেছেন জনগণনা দফতরের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy