লট ৮ ঘাটে পুণ্যার্থীদের ভিড়। মঙ্গলবার দিলীপ নস্করের তোলা ছবি।
এ বছরের সাগরমেলার বিশেষত্ব হল আলোর বৈচিত্র্য। কপিলমুনি মন্দির বা মন্দির-সংলগ্ন এলাকা এলইডি বা ফ্লাড লাইটে সেজেছে। যে দিকে চোখ পড়ছে আলোর ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই রাস্তার দু’পাশে ত্রিফলা বাতি বসেছিল। তার মধ্যে মেলা উপলক্ষে সৈকতে বসেছে ফ্লাড লাইট। রাস্তা যাতে সব সময়ে আলোকিত থাকে, সে জন্য প্রতিটি থামে বসানো হয়েছে আলো। লাল, হলুদ, নীল, সাদা আলোতে রাতের অন্ধকারেও এক বর্ণময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মেলার পরিবেশ এই আনন্দে জমে উঠেছে ঠিকই। কিন্তু প্রদীপের নীচে অন্ধকার সেই থেকেই গিয়েছে। প্যান্ডালের কাজ যাঁরা করছেন তাঁরা এখনও টাকা পায়নি বলে অভিযোগ।
প্রত্যেক বছরের মতো এ বারেও স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই সাগরের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী যাত্রী নিবাস, হাসপাতাল, এনজিও কর্মী বা সদস্যদের থাকার বাব্যস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড করা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতই শ্রমিক লাগিয়ে এই সব ব্যবস্থা করে থাকে। এ বছর যেমন মুড়িগঙ্গা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত কচুবেড়িয়াতে ৯০ জন শ্রমিক বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি-সহ অন্যান্য কাজ করেছেন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকা। অভিযোগ, সেই টাকা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এখনও পঞ্চায়েতে পৌঁছয়নি। ফলে টাকা পায়নি শ্রমিকেরাও। গত বছরও ২৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত হাতে পেয়েছে মাত্র ১৪ লক্ষ টাকা। এ প্রসঙ্গে এই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুবোধ জানা বলেন, “সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত টাকা পাইনি।”
একই সমস্যায় পড়েছেন গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতও। এই পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এ বছর মেলায় অস্থায়ী ছাউনি-সহ অন্যান্য ব্যবস্থার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা হাতে এসে পৌঁছয়নি। গত বছরেরই টাকা বাকি রয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ।
গত ৫ জানুয়ারি সাগর মেলার সাংবাদিক বৈঠকে জেলাশাসক শান্তনু বসু জানিয়েছিলেন, এ বছর মেলার খরচ ধরা হয়েছে ৪৩-৪৫ কোটি টাকা। গত বছরও কমবেশি ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। তাই যদি হয়, তা হলে কেন পঞ্চায়েতগুলি টাকা পাচ্ছে না? এ বিষয়ে উপপ্রধান সুবোধবাবু জানান, “বিডিও পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, টাকা এলে পঞ্চায়েতের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু কবে সেই টাকা আসবে তা বিডিও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।” গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের প্রধান হরিপদ মণ্ডলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “শ্রমিকদের টাকা বাকি রয়েছে। তবে জেলা পরিষদের থেকে টাকা পেলেই সেই টাকা শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়া হবে।” একই কথা বলেছেন ধবলাট পঞ্চায়েতের প্রধান সজল বারিকও। বিডিও পার্থ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy