পূর্ণ অধিবেশনেই কাটছাঁট হয়। এ বার এক দিনের জরুরি অধিবেশনেও বিধানসভায় থাকছে না প্রশ্নোত্তর পর্ব। এক দিনের অধিবেশনে সোমবার ৬ ঘণ্টায় চারটি বিল পাশ করাতে চাইছে সরকার পক্ষ। বিরোধীদের প্রশ্ন, যে তৃণমূলের সরকার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর এড়িয়ে চলতে চায়, তারাই আবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর হাজিরা এবং প্রশ্নের জবাব দেওয়া নিয়ে সরব হয় কোন মুখে?
বিধানসভায় শুক্রবার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সিলেক্ট কমিটি থেকে এনে কৃষি বিপণন সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে আড়াই ঘণ্টা আলোচনা হবে সোমবার। সিলেক্ট কমিটির কাজ এ দিনই শেষ করে দেওয়া হয়েছে। বামেরা সেখানে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়ে বিলটির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। কৃষি বিপণন সংক্রান্ত বিলের পরে অধিবেশনে আরও দু’টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিল অ্যামিটি ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে দেড় ঘণ্টা করে আলোচনা হবে। শেষে আধঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা হয়েছে পুরসভা সংক্রান্ত একটি বিলের জন্য। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বিলটি বিধায়কদের হাতে পৌঁছয়নি। তাই পুরসভা সংক্রান্ত ওই বিল শেষ পর্যন্ত এক দিনের অধিবেশনে আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। কিন্তু প্রশ্নোত্তর পর্ব যে নেই, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই!
কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ দিন এসইউসি-র তরুণ নস্কর দাবি তুলেছিলেন, তিনি নতুন বিধায়ক। বিধানসভায় কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ পেলে ভাল হয়। স্পিকার জানান, এই অধিবেশনে প্রশ্ন জমা নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় ছিল না। তরুণবাবু বলার চেষ্টা করেছিলেন, সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনেরই তো আরও একটা অংশ হচ্ছে এটা। আগের বারের জমে থাকা প্রশ্নই নেওয়া যেতে পারে। সরকারি তরফে বলা হয়, আগের প্রশ্নের জন্য মন্ত্রীরা যে সব উত্তর তৈরি করেছিলেন, সে সব এখন আবার খুঁজে পাওয়া মুশকিল! কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবের দাবি ছিল, অধিবেশন হোক ৭ দিনের। নচেৎ অন্তত দু’দিন রাখা হোক।
এক দিন বিল পাশের পরে একটা দিন বিধায়কদের প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু কোনও দাবিই গৃহীত হয়নি।
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “প্রশ্ন করতে গেলে অন্তত ১৮ দিন সময় রাখতে হয়। এই অধিবেশনের আগে এতটা সময় তো ছিল না। তাই প্রশ্নোত্তর রাখা যায়নি।” বিরোধীরা অবশ্য বলছে, সরকার চাইলে সেই সময়টুকু রেখেই অধিবেশন ডাকতে পারত। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “এ তো নতুন কিছু নয়! এই সরকারের আমলে বারবার একই জিনিস হচ্ছে!”
অধিবেশন ডাকা নিয়েও জটিলতা দেখা দিয়েছে। শীতকালীন অধিবেশন শেষে ধন্যবাদজ্ঞাপন পর্ব হয়ে বিধানসভা অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি হয়েছিল। বিরোধীদের বক্তব্য, তার পরেও পরিষদীয় কার্যবিধির যে ধারা প্রয়োগ করে অধিবেশন ডাকা হয়েছে, তার মানে দাঁড়ায় আগের অধিবেশনেরই সম্প্রসারণ হচ্ছে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য, “এখানে যা হচ্ছে, বিধানসভার নিয়ম-কানুন এত দিন যা বুঝেছিলাম, সব গুলিয়ে যাচ্ছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy