Advertisement
০২ মে ২০২৪

কর্মী ও চালকের অভাব, ফাঁপরে দমকল দফতর

যথেষ্ট সংখ্যায় কর্মী নেই। গাড়ির চালকেরও অভাব। স্বভাবতই সঙ্কটে রাজ্যের দমকল দফতর। সময়ে সময়ে কেনা হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। কিন্তু নিয়োগ বহু দিন বন্ধ। ফলে সমস্যায় পড়েছেন দমকল অধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, প্রতিটি দমকলকেন্দ্র থেকে চালক এবং ফায়ারম্যান নিয়োগ করার জন্য দমকলের সদর দফতরে আর্জি জানানো হয়। সম্প্রতি ১৮৭ জন চালকের নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিটিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০৩:০০
Share: Save:

যথেষ্ট সংখ্যায় কর্মী নেই। গাড়ির চালকেরও অভাব। স্বভাবতই সঙ্কটে রাজ্যের দমকল দফতর। সময়ে সময়ে কেনা হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। কিন্তু নিয়োগ বহু দিন বন্ধ। ফলে সমস্যায় পড়েছেন দমকল অধিকারিকেরা।

সূত্রের খবর, প্রতিটি দমকলকেন্দ্র থেকে চালক এবং ফায়ারম্যান নিয়োগ করার জন্য দমকলের সদর দফতরে আর্জি জানানো হয়। সম্প্রতি ১৮৭ জন চালকের নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিটিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দমকলের বেশ কিছু উচ্চ পদও খালি। দমকলের এক কর্তা জানান, একটা এডিজি পদে দীর্ঘ দিন কেউ নিযুক্ত হননি। খালি রয়েছে অধিকর্তার তিনটি পদ, ডেপুটি ডিরেক্টরের ছ’টি পদ, পাঁচটি অফিসার ও আটটি ডিভিশনাল অফিসারের পদ। ৩৭০ জন চালকের পদ খালি রয়েছে। খালি রয়েছে প্রায় ২৫০০ মতো ফায়ারম্যানের পদ।

সম্প্রতি ক্যাবিনেট বৈঠকে ১৫৭২টি পদে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের অনুমোদন মিলেছে। ইতিমধ্যেই ১১৫০-এর উপরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকদের ২ মাসে আগুন নেভানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ফায়ারম্যানদের সাহায্য করবেন। কিন্তু, দমকলের মতো এমন জরুরি পরিষেবা দফতরে নিয়োগের ক্ষেত্রে জরুরি কোনও পদক্ষেপ নেই কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দফতরেরই বহু কর্মী এবং অফিসারদের মধ্যে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দমকল দফতরের দায়িত্ব রয়েছে জাভেদ খানের হাতে। মন্ত্রীর কথায়, “১৮৭ জন চালককে নিয়োগ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। স্টাফ সিলেকশন কমিটির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” ফায়ারম্যান কম, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে জাভেদ খান বলেন, “চুক্তির ভিত্তিতে সিভিল ডিফেন্সে প্রশিক্ষিত যুবকদের আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করতে নিয়োগ করেছি।” দমকলের এক কর্তা বলেন, “চুক্তিতে প্রায় ১১৫০ জনকে এ পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক নেওয়া হয়েছে। এঁরা মাসে ২২ দিন কাজ করেন। দৈনিক ৩৩৯ টাকা করে ভাতা পান।” স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করলে খরচ বেশি। তার থেকে কম পয়সায় স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে দুর্ঘটনা হলে স্বেচ্ছাসেবকদের ক্ষতিপূরণের কোনও বন্দোবস্ত নেই। মন্ত্রী অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন, চুক্তিতে নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের বিমার ব্যবস্থা করার। তবে এখনও তা হয়নি। ওই কর্তা বলেন, প্রস্তুতি চলছে।

দমকল সূত্রের খবর, রাজ্যে দমকলকেন্দ্রের সংখ্যা ১১৪টা। দমকলের গাড়ির সংখ্যা প্রায় ১৫০-র উপরে। চালক কম থাকায় গাড়ি প্রয়োজনের তুলনায় কম চালানো হচ্ছে। ওই কর্তা বলেন, “বড় বড় দমকলকেন্দ্রে গাড়ির সংখ্যা বেশি। যেমন, গড়িয়া দমকলকেন্দ্রে ৩টি গাড়ি, কালীঘাটে ২টি, ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের সদর দফতরে ৮টি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ৭টি গাড়ি আছে। চালকের অভাব থাকায় দুর্ঘটনা হলেও বেশি গাড়ি বার করা যাচ্ছে না।” এক ফায়ার অফিসারের কথায়, “শহরে দিন-দিন বহুতল বাড়ছে। শহরের এলাকাও বেড়ে গিয়েছে। তাই দমকলে কর্মী ও চালকের অভাব জরুরি ভিত্তিতে পূরণ করা প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

firebrigade insufficientstaffs somnathchakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE