Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কল্যাণী নিয়ে শঙ্কু অভিযোগ তুলতেই তদন্তের পথে পার্থ

টাকার বিনিময়ে বিএড কলেজে ছাত্রভর্তির ঘটনায় নতুন তত্ত্ব খাড়া করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক, কলেজ পরিদর্শক, এমনকী খোদ উপাচার্যই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আচার্যের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভর্তির যে অভিযোগ উঠেছে, তা অবশ্য পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছে টিএমসিপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০৩:৪৬
Share: Save:

টাকার বিনিময়ে বিএড কলেজে ছাত্রভর্তির ঘটনায় নতুন তত্ত্ব খাড়া করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক, কলেজ পরিদর্শক, এমনকী খোদ উপাচার্যই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আচার্যের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভর্তির যে অভিযোগ উঠেছে, তা অবশ্য পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছে টিএমসিপি।

টিএমসিপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভর্তি করার অভিযোগ ওঠার পরে শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টিকে ‘সামান্য ঘটনা’ বলে তার গুরুত্ব হালকা করে দিতে চেয়েছিলেন। শিক্ষা দফতরও কোনও তদন্তের নির্দেশ দেয়নি। মঙ্গলবার কিন্তু টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কু পন্ডা উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ামকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা মাত্রই শিক্ষামন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দেন। এতে রাজ্য সরকারের স্বচ্ছতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীকে দিয়ে টিএমসিপি-র অভিযোগের তদন্ত করানো হবে। সাত দিনের মধ্যে অভিজিৎবাবুকে তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

উপাচার্য রতনলাল হাংলু টিএমসিপি-র সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছেন। ১০ দিনের মধ্যে সেই কমিটি রিপোর্ট দেবে। এই সংক্রান্ত সব নথিপত্র উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরেও এই ধরনের একটি ‘অসম্মানজনক’ অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রী কী ভাবে তদন্তের নির্দেশ দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আগে পার্থবাবু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বার কথা বলে নিলে এ ধরনের প্রশ্ন উঠত না বলেই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।

কেউ এক লক্ষ, কেউ বা দেড় লক্ষেরও বেশি টাকা দিয়ে বিএডে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পরে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নদিয়ার চাপড়ায় ভক্তবালা কলেজে বিএড পড়ানোর অনুমতি বাতিল করেছিলেন। কারণ, অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের নেতা তন্ময় আচার্যের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভর্তি করিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওই কলেজের বেশ কিছু অশিক্ষক কর্মচারী এবং অন্য আধিকারিকও টাকা নিয়ে ভর্তি করানোর চক্রান্তে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু পার্থবাবু প্রশ্ন তোলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন তাঁর সঙ্গে কথা না বলে ভক্তবালা কলেজের বিএড কোর্স বাতিল করেছেন? সেই শিক্ষামন্ত্রীই এ দিন শঙ্কু পন্ডার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই ঘরোয়া আলোচনায় পদত্যাগের ইচ্ছা পর্যন্ত প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব-সহ কয়েক জন। সেখান থেকে বেরিয়ে শঙ্কুদেব বলেন, “কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে পরীক্ষা নিয়ামক, কলেজ পরিদর্শক এবং সিপিএমের একাধিক সংগঠন মিলিত ভাবে সরকার, শাসক দল এবং টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।” ছাত্র নেতা তন্ময় আচার্যকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছে টিএমসিপি।

তন্ময় নিজে কী বলছেন এ নিয়ে? শঙ্কুর সুরেই তিনি এ দিন বলেন, “মূলত বাম জমানায় নিযুক্ত কর্মী-শিক্ষকরা যুক্ত এই চক্রান্তে। আমি এমন কোনও ক্ষমতাশালী ব্যক্তি নই যে টাকা লেনদেন করে ছাত্র ভর্তি করাব। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দল এখনও পর্যন্ত আমাকে কোনও নির্দেশ দেয়নি। দলের নির্দেশ অনুসারে আমি কাজ করছি।”

এর আগে শঙ্কুদেবের আপত্তিতেই স্নাতকে অনলাইন ছাত্রভর্তি থেকে রাজ্য পিছিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি শিক্ষামেলার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা কামানোর অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বকলমে শাসক দলের রাজ্য সভাপতিই শিক্ষা দফতরটা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলুর বিরুদ্ধে শঙ্কুদেবের নালিশ এবং তার পরেই শিক্ষামন্ত্রীর তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় শিক্ষায় ‘শঙ্কুজমানা’ চলেছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যের আসল শিক্ষামন্ত্রী কে, উঠেছে সেই প্রশ্নও।

পার্থবাবু অবশ্য অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকলে টিএমসিপিকে-ও রেয়াত করা হবে না বলে ইঙ্গিত দেন এ দিন। তাঁর কথায়, “শঙ্কুকে মাথায় তুলে নাচতে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কোনও ছাত্র সংগঠনকেই শিক্ষাক্ষেত্রে দাপট চালাতে দেওয়া হবে না।” শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি যে নিরপেক্ষ ভাবেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তা বোঝাতে পার্থবাবু বলেন, “কোন ছাত্র সংগঠন কী বলছে, তা জানার দরকার নেই। কোনও বক্তব্য থাকলে ছাত্র সংগঠন তা তদন্ত কমিটির সামনে বলবে।”

চাপড়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত ৩৯ জনকে টাকার বিনিময়ে ভর্তি করার অভিযোগ ওঠে। নিয়ম অনুযায়ী এঁরা পরীক্ষা দিতে পারেন না। শঙ্কুদেব জানান, শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সব ছাত্রছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি করেন। পরে বিধানসভায় নিজের ঘরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তিনি সব ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “ভর্তির সময় তো আর ছাত্রছাত্রীরা জানতে পারেন না, কারা অতিরিক্ত হবেন। তাই উপাচার্যকে বলেছি, এঁদের সকলকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।” সোমবারই এই পড়ুয়াদের কার্যত কাঠগড়ায় তুলে শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তাঁরা টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছেন।

শঙ্কুদেবের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য তাঁর ঘরে বসিয়ে ছাত্রছাত্রীদের চাপ দিয়ে তন্ময়ের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভর্তি করানোর অভিযোগ লেখান। তাঁর কথায়, “অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্রভর্তির ব্যাপারে সম্প্রতি একটি বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী সতর্ক করেছিলেন উপাচার্যকে। এর পর থেকেই তিনি সরকারকে ফাঁসানো ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন বিভিন্ন সময়। আর সেই জন্যই এমন কাজ করেছেন উপাচার্য।”

এই সব অভিযোগের প্রমাণ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছেন বলে দাবি শঙ্কুদেবের। সেই প্রমাণের মধ্যে আছে একটি অডিও সিডি। তাঁর দাবি, তাতে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাস এবং ছাত্রনেতা তন্ময়ের কথোপকথন আছে। সিডি-তে শোনা যাচ্ছে, একটি কণ্ঠস্বর (যা বিমলেন্দুবাবুর বলে দাবি করছে টিএমসিপি) ৩৯টি অতিরিক্ত আসনে ছাত্রভর্তি ও টাকার বিনিময়ে ওই পড়ুয়াদের ভর্তি করার অভিযোগ জানানোর জন্য কাঠগড়ায় তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক সুব্রত রায়কে। ওই ছাত্রছাত্রীদের সকলেই পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেও আশ্বাস দিচ্ছে ওই কণ্ঠস্বর।

কিন্তু এটি যে বিমলেন্দুবাবুরই গলা, তার প্রমাণ কী? শঙ্কুদেবের জবাব, “তদন্ত করে দেখা হোক।” পরীক্ষা নিয়ামক ও কলেজ পরিদর্শক দু’জনেই সিপিএম-ঘনিষ্ঠ এবং বিমলেন্দুবাবু আবার প্রয়াত বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের আত্মীয় বলেও এ দিন জানান শঙ্কুদেব।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপ আসছে উপাচার্যের উপর। দিন দুয়েক আগে ভক্তবালা কলেজ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার ‘অভিযোগে’ শঙ্কুদেব উপাচার্যকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে দলবল নিয়ে ভাঙচুর চালানোর হুমকিও দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় উপাচার্য দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, ভাঙচুর করলে ইস্তফা দিয়ে চলে যাবেন। মঙ্গলবারও ঘনিষ্ঠ মহলে সেই বার্তাই দিয়েছেন উপাচার্য।

• তবে ছাত্ররা উপাচার্যের উস্কানিতে দুর্নীতির অভিযোগ করে চিঠি লিখেছেন বলে শঙ্কুদেব অভিযোগ তোলায় ক্ষুব্ধ ভক্তবালা বিএড কলেজের ভুক্তভোগী পড়ুয়ারা। বাড়তি ছাত্র ভর্তির কারণে যে ৩৯ জন পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করাতে পারছেন না, তাঁদের মধ্যে মনু রায়, রূপা বিশ্বাস, স্বরূপ সরকার, অদিতি বড়াল-সহ বেশ কিছু পড়ুয়া এ দিন জানান, গত ১৬ জুন তাঁরা মোট ১৭ জন মিলে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলেন। উপাচার্য জানতে চান, কী ভাবে তাঁরা ওই কলেজে ভর্তি হলেন। টাকা দিয়ে অবৈধ ভাবে ভর্তির কথা জানতে পেরে, গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানোর পরামর্শ দেন উপাচার্য। ছাত্ররা প্রত্যেকে আলাদা অভিযোগপত্র জমা দেন।

• ওই ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তাঁদের অভিযোগ পেয়ে উপাচার্য বলেন, তিনি ওই সব অভিযোগের একটা করে কপি কলেজের পরিচালন সমিতির সম্পাদককে দেবেন। তার পর যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি স্থানীয় পুলিশের কাছে অভিযোগ করবেন, যাতে অভিযুক্তদের থেকে টাকা আদায় করে ছাত্রদের ফিরিয়ে দেওয়া যায়।

চাপড়া ভক্তবালা বিএড কলেজের ছাত্রী মনু রায় বলেন, “উপাচার্য আমাদের উপর কোনও চাপ সৃষ্টি করেননি। আমাদের অভিযোগ ছিল তন্ময় আচার্য-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।” ওই বিএড কলেজের আর এক ছাত্র তেহট্টের বাসিন্দা সিরাজ খান বলেন, “কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে কোনও অভিযোগ আমরা করিনি। জমি, বাড়ি বন্ধক দিয়ে পড়াশোনা করে শুধু পরীক্ষা দিতে পারার অধিকারটুকু পেতে চেয়েছি।” ওই কলেজের আর এক ছাত্রী কল্যাণীর রূপা বিশ্বাস বলেন, “আমরা সোমবারেও উপাচার্যের দেখা না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অফিসার অলোক ঘোষের কাছে সকলেই লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি।”

• তন্ময় আচার্যকে কে কত টাকা দিয়েছিলেন? উপাচার্যের কাছে জমা দেওয়া চিঠিতে তেহট্টের বাগাখালির বাসিন্দা স্বরূপ সরকার উল্লেখ করেছেন, তিনি বিএড কলেজে ভর্তির জন্য তন্ময়কে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দেন। রানাঘাটের অদিতি বড়াল ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, নদিয়ার নৃসিংহপুরের বাসিন্দা রুমা বিশ্বাস ১ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা দেন। এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন চাকদহের দেবাশিস শর্মা।

• শুধু তন্ময় নন, টাকা নিয়ে অবৈধ ভাবে ভর্তি করানোয় নাম জড়িয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মচারী প্রবীর কাহারের। তিনি মনু রায়, রূপা বিশ্বাসদের ভক্তবালা বিএড কলেজে টাকা নিয়ে ভর্তি করান। রূপাদেবী বলেন, ‘‘প্রবীরবাবু আমাদের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তিনি তন্ময়ের ভাল বন্ধুু। ওঁর কথা মতো আমি তন্ময়কে টাকা দিই।” এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক প্রবীর প্রামাণিকের নাম জড়িয়েছে। তিনিও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভক্তবালা বিএড কলেজে ভর্তি করান বলে অভিযোগ।

শঙ্কুদেব বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তাঁরা সকলেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু বলেন, “এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। এখন এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। পরীক্ষা নিয়ামক এবং কলেজ পরিদর্শক দু’জনেই অভিজ্ঞ এবং দায়িত্বশীল। তাঁদের বিরুদ্ধে যে কথা বলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।” পরীক্ষা নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তার প্রতিবাদ করছি এবং প্রমাণ করার দাবি জানাচ্ছি।” কলেজ পরিদর্শক সুব্রত রায়, জনসংযোগ আধিকারিক নীলাদ্রি বিশ্বাস মন্তব্য করতে রাজি না হলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সুখেঞ্জয় চৌধুরী দাবি করেন, “এগুলো সাজানো অভিযোগ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE