Advertisement
০৬ মে ২০২৪

খুনের চেষ্টার ধারা প্রত্যাহার, জামিন দেবাশিসের

যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় অভিযুক্ত দেবাশিস আচার্য জামিন পেলেন। চড় মারার পরে গণপ্রহারে গুরুতর জখম দেবাশিসের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের হয়। তা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও শনিবার তমলুক আদালতে জমা পড়া চার্জশিট থেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এ দিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ ভট্টাচার্য ৭০০ টাকার বন্ডে দেবাশিসের জামিন মঞ্জুর করেন। ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিষেকও।

জামিন পাওয়ার পরে মায়ের সঙ্গে দেবাশিস।  —নিজস্ব চিত্র

জামিন পাওয়ার পরে মায়ের সঙ্গে দেবাশিস। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় অভিযুক্ত দেবাশিস আচার্য জামিন পেলেন। চড় মারার পরে গণপ্রহারে গুরুতর জখম দেবাশিসের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের হয়। তা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও শনিবার তমলুক আদালতে জমা পড়া চার্জশিট থেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এ দিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ ভট্টাচার্য ৭০০ টাকার বন্ডে দেবাশিসের জামিন মঞ্জুর করেন। ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিষেকও।

গত ৪ জানুয়ারি চণ্ডীপুরে প্রকাশ্য সভা-মঞ্চে উঠে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেককে চড় মেরেছিলেন দেবাশিস। তারপর গণপিটুনিতে গুরুতর জখম হয়ে বছর বাইশের ওই যুবকের ঠাঁই হয়েছিল হাসপাতালে। প্রায় দেড় মাস তিনি ভর্তি ছিলেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। কিছুটা সুস্থ হওয়ার গত মঙ্গলবার এসএসকেএম থেকে ছাড়া পান দেবাশিস। ওই দিনই প্রথম তাঁকে তমলুক আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল-হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনার পরেই দেবাশিসের বাবা দেশবন্ধুবাবু ও মা শিবানীদেবী কলকাতায় গিয়ে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে ছেলের হয়ে ক্ষমা চান। ছেলের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আর্জিও জানান।

দেবাশিসকে এ দিন আদালতে হাজির করা হয়নি। সন্ধ্যায় তমলুক জেলা হাসপাতাল থেকেই ছেড়ে দেওয়া তাঁকে। মা শিবানী আচার্যের সঙ্গে তমলুক শহরের মালিজঙ্গলপাড়ার বাড়িতে যাওয়ার আগে দেবাশিস বলেন, “সে দিনের ভুলের জন্য আমি অভিষেকদা আর রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গিয়েছিলাম। তাই ওই কাজ করে ফেলেছি।” তাঁর সংযোজন, “অভিষেকদার সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন জীবনে চলতে চাই। পিসি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র সঙ্গে দেখা করতে চাই। অভিষেকদা যদি চান, তবে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাই।” যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক এ দিন বলেন, “দেবাশিসকে আগেই ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। যে হেতু আদালতের চোখে ও আজ জামিন পেয়েছে, তাই আমি কামনা করি, এ বার ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক।”

আদালতে এ দিন মামলার কেস ডায়েরি ও চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। খুনের চেষ্টার অভিযোগ বাদ পড়লেও চার্জশিটে দেবাশিসের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করা, বাধা দেওয়া, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি কৌঁসুলি সফিউল আলি খান বলেন, “তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক যে চার্জশিট পেশ করেছেন, তাতে খুনের চেষ্টার অভিযোগ নেই। বাকি অভিযোগগুলি নিয়ে মামলা চলতে পারে।” মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২০ জুন।

চার্জশিট থেকে খুনের চেষ্টার মতো ধারা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার অমিতভরত রাঠৌর বলেন, “যে ভাবে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তার ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তে তার প্রমাণ না মেলায় ওই ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।” সরকারি আইনজীবী অবশ্য জানান, ভবিষ্যতে যদি ওই অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ মেলে, তা হলে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট হিসেবে তা জমা দেওয়া হতে পারে।

ছেলে জামিন পাওয়ায় আচার্য দম্পতি খুশি। শিবানীদেবী বলেন, “দেবাশিসের আরও চিকিৎসার প্রয়োজন। আমরা চাই, এসএসকেএম হাসপাতালের নির্দেশ মেনে ওর চিকিৎসা হোক। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখাও করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tamluk debasish acharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE