Advertisement
E-Paper

‘খুনখারাপি’ হয়ে যাবে, হুঙ্কার বিজেপি নেতার

নিজের জামিন নাকচ হতেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন। তার পরেই খবর এল, আর এক মামলায় ধৃত তৃণমূল কর্মী জামিন পেয়েছেন। এজলাস থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠার মুখেই তাই হুঙ্কার দিয়ে বসলেন সদাই শেখ, “খুনখারাপি হয়ে যাবে!” বুধবার সিউড়ি আদালত চত্বরে মাখড়া-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত পাড়ুইয়ের বিজেপি নেতা সদাই শেখের ওই হুঙ্কার অবশ্য শাসকদলের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৯
সিউড়ি আদালত চত্বরে বিজেপি নেতা সদাই শেখ।—নিজস্ব চিত্র।

সিউড়ি আদালত চত্বরে বিজেপি নেতা সদাই শেখ।—নিজস্ব চিত্র।

নিজের জামিন নাকচ হতেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন। তার পরেই খবর এল, আর এক মামলায় ধৃত তৃণমূল কর্মী জামিন পেয়েছেন। এজলাস থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠার মুখেই তাই হুঙ্কার দিয়ে বসলেন সদাই শেখ, “খুনখারাপি হয়ে যাবে!”

বুধবার সিউড়ি আদালত চত্বরে মাখড়া-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত পাড়ুইয়ের বিজেপি নেতা সদাই শেখের ওই হুঙ্কার অবশ্য শাসকদলের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, সদাইয়ের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, দুষ্কৃতীদের দিয়ে পাড়ুই দখলের ছক কষছে বিজেপি। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “বোঝাই যাচ্ছে পাড়ুইয়ে বিজেপি কাদের নেতা করেছে! ওদের প্রশ্রয়েই সদাইয়ের মতো সমাজবিরোধীরা প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দেওয়ার সাহস পাচ্ছে।” সম্প্রতি রামপুরহাটে দলীয় সভায় ‘তৃণমূল কর্মীদের হাত কেটে নেওয়ার’ হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলও।

এ দিন তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে সেই দুধকুমারের মন্তব্য, “যে দলের নেতা অনুব্রত মণ্ডল, তাদের মুখে এ সব কথা মানায় না! মানুষ ভুলে যাননি, অনুব্রত পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার সভায় কী হুমকি দিয়েছিলেন। তার পরেই পাড়ুইয়ের বাঁধনবগ্রামে কে খুন হয়েছিলেন!” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “পুলিশকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল জেলায় অসংখ্য বিজেপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করেছে। সদাই শেখের ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তা প্রমাণিত হবে।”

গত ২৪ অক্টোবর পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিৎ দত্তের উপরে হামলা এবং তার পরে পরেই মাখড়া গ্রামে দুই তৃণমূল কর্মী খুন-সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত চৌমণ্ডলপুরের বাসিন্দা সদাই শেখ। গত ২৩ নভেম্বর সাঁইথিয়া থেকে পুলিশ তাঁকে ধরে। আপাতত তিনি জেল হাজতে। এখনও দু’টি খুনের মামলায় তিনি জামিন পাননি। সিউড়ির সিজেএম আদালতে এ দিনও সদাইয়ের জামিন নাকচ হয়। অভিযুক্তকে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি হাজির করানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ঋ

ষি কুশারি। ঘটনাচক্রে এ দিনই আদালতে জামিন পান মহম্মদ ওয়াসিক নামে পাড়ুইয়েরই এক তৃণমূল কর্মী। এই খবর জেনেই বেজায় চোটে যান বিজেপি নেতা সদাই। এজলাস থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠার পথেই সংবাদমাধ্যমকে দেখে তিনি বলে ওঠেন, “একটা লোকের (বিজেপি কর্মী) বোমায় হাত উড়ে গেল। লোকটা এখন পিজি-তে ভর্তি। কী করে ওর (মহম্মদ) জামিন হল! সে তৃণমূল করে, তাই বলে? আমরা বিজেপি করি বলেই দোষ? অবাস্তব ব্যাপার!” এর পরেই ‘খুনখারাপি হয়ে যাবে! খুনখারাপি হয়ে যাবে!’ বলতে বলতে প্রিজন ভ্যানে উঠে যান সদাই।

গত ১৩ জানুয়ারি পাড়ুইয়ের বেলপাতা গ্রামে বোমার ঘায়ে জখম হন বাবর আলি নামে এক বিজেপি কর্মী। ওই ঘটনায় পুলিশে ৫১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিজেপি। ১৭ জানুয়ারি তৃণমূল কর্মী মহম্মদ ওয়াসিক ধরা পড়েন। বিজেপির অভিযোগ, ওই ঘটনায় খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়ার বদলে পুলিশ তুলনায় লঘু ৩০৭ (মারাত্মকভাবে আঘাত করা) ধারা দেয়। তাদের আরও দাবি, এ দিন হাসপাতালের সঙ্গে যোগসাজশ করে পুলিশ জখম বিজেপি কর্মীর আঘাতকেও ‘লঘু’ দেখিয়েছে। মহম্মদ ওয়াসিকের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ যদিও বলছেন, “বাইরে কে কী বলেছেন জানি না। তবে, ১৭ তারিখ আদালতে আমার মক্কেলকে হাজির করানোর সময়ই আমি বিচারককে বলেছিলাম, এটি রাজনৈতিক ঘটনা। তা ছাড়া ৫১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোনও এক জনের বিরুদ্ধে নয়। সে দিনই বিচারক জখম ব্যক্তির ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ দেখতে চান।” তিনি জানান, এ দিন রিপোর্ট দেখার পরেই বিচারকের মনে হয়েছে, ওই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ বা ৩২৬ ধারার বদলে ৩২৩ ধারা প্রয়োগ করাই সঠিক। তার পরেই বিচারক তৃণমূল কর্মীর জামিন মঞ্জুর করেন বলে ওই আইনজীবীর দাবি।

সদাইয়ের আইনজীবী নির্মল মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের জামিনের জন্য তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। এ দিন যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।

sadai seikh bjp leader parui
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy