Advertisement
E-Paper

ঘুরপথে গুটখা বিক্রি রুখতে উদ্যোগী রাজ্য

গুটখা তথা জর্দা মেশানো পানমশলার ব্যবহার আটকাতে কেন্দ্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কবেই। তবু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ব্যবসা চলছে। গুটখা বিক্রি বন্ধ। তাই বাজারে আলাদা করে বিকোচ্ছে পানমশলা ও জর্দার প্যাকেট। উপাদানগুলো কিনে, তার পর তা মিশিয়ে গুটখা বানাচ্ছেন ক্রেতারাই। সেই গুটখা মুখে পুরছে বাচ্চা থেকে বুড়ো। তাই লাফিয়ে বাড়ছে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যাও। সমীক্ষা বলছে, ফি দিন ৫ হাজার ব্যক্তি নতুন করে এই নেশার শিকার হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৪

গুটখা তথা জর্দা মেশানো পানমশলার ব্যবহার আটকাতে কেন্দ্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কবেই। তবু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ব্যবসা চলছে। গুটখা বিক্রি বন্ধ। তাই বাজারে আলাদা করে বিকোচ্ছে পানমশলা ও জর্দার প্যাকেট। উপাদানগুলো কিনে, তার পর তা মিশিয়ে গুটখা বানাচ্ছেন ক্রেতারাই। সেই গুটখা মুখে পুরছে বাচ্চা থেকে বুড়ো। তাই লাফিয়ে বাড়ছে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যাও। সমীক্ষা বলছে, ফি দিন ৫ হাজার ব্যক্তি নতুন করে এই নেশার শিকার হচ্ছেন। যাঁদের একটি বড় অংশই ছাত্রছাত্রী।

ছবিটা বদলাতে এ বার নড়েচড়ে বসছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সরকারি ভাবে এ রাজ্যে গুটখা বিক্রি নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে ২০১৩-র পয়লা মে থেকেই। চোরাপথে গুটখা খাওয়া আটকাতে আগামী দিনে সব ধরনের পানমশলা বিক্রি বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনাও করেছে তারা। রাজ্যের এই ইতিবাচক পদক্ষেপে খুশি কেন্দ্রও।

আসলে মাস দুয়েক আগে সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এ বিষয়ে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখেছিলেন। তাতে বলা হয়, সুগন্ধী, জর্দাযুক্ত বা জর্দাহীন সব ধরনের সুপারি, খৈনির মতো বস্তুর ব্যবহার বন্ধ করুক রাজ্যগুলি। কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তকেই সমর্থন জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কথায়, “আইনের ফাঁক দেখিয়ে সুপারি ও জর্দা আলাদা ভাবে বিক্রি চালু রয়েছে। এতে যে উদ্দেশ্য নিয়ে গুটখা বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটাই ধাক্কা খাচ্ছে।” পশ্চিমবঙ্গের মতো দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক-সহ অধিকাংশ রাজ্যেই ঘুরপথে গুটখার বাজার ধরে রাখতে এই কৌশল নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাই সব ধরনের পানমশলা বিক্রি বন্ধের কথা ভাবছে কেন্দ্র। হিমাচলপ্রদেশে বছর খানেক আগেই সব ধরনের পানমশলা বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রও একই পথে হেঁটেছে। কেন্দ্র চাইছে বাকি রাজ্যেও ওই আইন আসুক।

কী করতে চায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার? জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই গুটখা ও পানমশলা ব্যবহারের প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করবে রাজ্য। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখছে রাজ্য। প্রথমত, গুটখা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রোজগারের বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা। দ্বিতীয়ত, রাজ্য মনে করছে খাপছাড়া ভাবে একটি বা দু’টি রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে সমস্যার সমাধান হবে না। সে ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে চোরাপথে গুটখা-পানমশলা ঢুকতে থাকবে এ রাজ্যে। তাই গোটা দেশে যদি একসঙ্গে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়, তবেই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি আনার জন্যও দিল্লিকে অনুরোধ করেছে রাজ্য।

স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষা বলছে, পশ্চিমবঙ্গের মোট ক্যানসার আক্রান্তের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভুগছে মুখের ক্যানসারে। যার অন্যতম কারণ তামাকজাত পদার্থ সেবন। গোটা দেশের ছবিও আশাব্যঞ্জক নয়। এই অবস্থায় রাজ্যের নয়া সিদ্ধান্তে কী বলছে চিকিৎসক মহল? তাঁদের মতে, ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা না বাড়ালে লাভ নেই। ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় যেমন বলেন, “জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া অসম্ভব। মানুষ সচেতন হলেই ক্যানসার রোখা সম্ভব হবে। তবে এই নয়া উদ্যোগকে স্বাগত।”

ban on gutkha zarda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy