Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চোখ নষ্ট অ্যাসিড আক্রান্তের

ডান চোখটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর বাঁ চোখের আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব হলেও তা বেশ সময়সাপেক্ষ। মঙ্গলবার রাতে আসানসোলের চিত্তরঞ্জন স্টেশনে অ্যাসিড হানায় দগ্ধ রানাঘাটের মহিলাকে পরীক্ষা করার পর এমনটাই জানাচ্ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও অবশ্য মূল অভিযুক্ত রিপন দাসকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০৩:৪৬
Share: Save:

ডান চোখটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর বাঁ চোখের আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব হলেও তা বেশ সময়সাপেক্ষ। মঙ্গলবার রাতে আসানসোলের চিত্তরঞ্জন স্টেশনে অ্যাসিড হানায় দগ্ধ রানাঘাটের মহিলাকে পরীক্ষা করার পর এমনটাই জানাচ্ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও অবশ্য মূল অভিযুক্ত রিপন দাসকে ধরতে পারেনি পুলিশ। যদিও রিপনের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ হয়েছে। চিত্তরঞ্জন জিআরপি-র দাবি, রানাঘাটে তল্লাশি চালিয়েও রিপনকে খুঁজে পায়নি তারা। যদিও রানাঘাট থানা থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। রিপনের পরিবারও জানিয়েছে, পুলিশ যায়নি সেখানে।

রানাঘাটের বিবাহ-বিচ্ছিন্না ওই মহিলার সঙ্গে রিপনের পরিচয় বহু দিনের। একই পাড়ায় পাশাপাশি থাকতেন তাঁরা। মাস তিনেক আগে রানাঘাট থানায় রিপনের বিরুদ্ধে তাঁকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ করেন ওই মহিলা। মঙ্গলবার রাতে চিত্তরঞ্জন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ওই মহিলার মুখে রিপন অ্যাসিড ছোড়ে বলে অভিযোগ। বুধবার বিকেলে নীলরতন সরকার হাসপাতালে পাঠানো হয় মহিলাকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি (আরআইও)-তে রেফার করা হয়। আপাতত সেখানেই ভর্তি তিনি।

আরআইও-র চিকিৎসকেরা জানান, চোখের আঘাত খুব গভীর হওয়ায় ভিতরের অংশ পুরো শুকিয়ে গিয়েছে। সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে চোখের পাতা। তাই চোখ খুলতে পারছেন না তিনি। ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাঁ চোখের অবস্থাও খারাপ। মুখের ডান দিকটা ঝলসে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, মহিলার প্লাস্টিক সার্জারি প্রয়োজন। তাই আরআইও থেকে তাঁকে প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, ক্ষত আরও খানিকটা না শুকোলে তাঁরা অস্ত্রোপচার করতে পারবেন না।

তবে এত বড় কাণ্ডের পরেও রিপন ধরা না পড়ায় ওই মহিলার পরিবার ক্ষুব্ধ। মহিলার বাবা বলেন, “রিপনকে পুলিশ ধরেনি। আমাদের বাড়িতেও থানা থেকে খোঁজ নেয়নি কেউ। আমি একা আছি। ভয় লাগছে রিপন এসে হামলা না করে।” চিত্তরঞ্জন জিআরপি-র ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শশিভূষণ সিংহের অবশ্য দাবি, “জিআরপি-র একটি দল বুধবার রানাঘাটে গিয়ে স্থানীয় থানার সঙ্গে যৌথ ভাবে রিপনের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছিল। রূপনারায়ণপুর ও চিত্তরঞ্জনেও তল্লাশি চলছে।”

কিন্তু রানাঘাট থানা দাবি করেছে, তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “ওরা চাইলে সাধ্যমতো সাহায্য করব।” রিপনের বাড়ির লোকেরাও জানান, পুলিশ তাদের কাছে আসেনি বা ফোন করে ছেলে কোথায় আছে জানতে চায়নি। রিপনের বাবা বীরেন্দ্র দাস তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার ছেলে বহরমপুরে গিয়েছে। অ্যাসিড ছুড়েছে অন্য কেউ। ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

acid attack chittaranjan station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE