Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জেলে গিয়ে কুণালের বয়ান নিল সিবিআই

নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষকে দফায় দফায় জেরা করেছিল সিবিআই। এ বার জেলে গিয়ে তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করল তারা। পঞ্চমীর দিন আদালতে দাঁড়িয়ে সিবিআইকে আরও তথ্য দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন কুণাল। আদালত তা মঞ্জুরও করেছিল। জেল সূত্রের খবর, সেই মোতাবেক শনিবার দুপুরে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী অফিসার কুণালের বয়ান নথিভুক্ত করেছেন।

সিবিআই অফিসে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সৌমিত্র রায়। —নিজস্ব চিত্র

সিবিআই অফিসে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সৌমিত্র রায়। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০৭
Share: Save:

নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষকে দফায় দফায় জেরা করেছিল সিবিআই। এ বার জেলে গিয়ে তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করল তারা। পঞ্চমীর দিন আদালতে দাঁড়িয়ে সিবিআইকে আরও তথ্য দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন কুণাল। আদালত তা মঞ্জুরও করেছিল। জেল সূত্রের খবর, সেই মোতাবেক শনিবার দুপুরে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী অফিসার কুণালের বয়ান নথিভুক্ত করেছেন।

জেল সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী অফিসার প্রেসিডেন্সি জেলে যান। জেল অফিসের একটি ঘরে কুণালকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কুণাল নিজের বক্তব্য ওই তদন্তকারী অফিসারকে জানান। ওই অফিসারের প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি। সিবিআই সূত্রের খবর, কিছুটা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতেই ছিলেন কুণাল। পঞ্চমীর দিন শুধু সিবিআইকে তথ্য দেওয়া নয়, আদালতের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ারও আর্জি জানান তিনি। আদালত সিবিআইকে সে ব্যাপারে ২১ অক্টোবর রিপোর্ট জানাতে নির্দেশ দিয়েছে।

সিবিআই সারদা তদন্তের ভার নেওয়ার পর কুণাল বারবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়-সহ শাসক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সারদার সম্পর্কের অভিযোগ করেছেন। এ দিন একই অভিযোগ করেছেন সিপিএম নেতা গৌতম দেবও। মুখ্যমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে কৃষ্ণনগরে তিনি বলেন, “মুকুল বাক্স বাক্স টাকা জোগাড় করেছে। সেটা চিটফান্ডের, আপনি জানতেন না?”

গৌতমবাবুর অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের মুখ্য সচেতক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এর আগেও উনি অনেক অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রমাণ করতে পারেননি। উল্টে মানুষ ওদের থেকে দূরে সরে গিয়েছে। তা ছাড়া, সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের বক্তব্যের জবাব দেওয়া যায়। ওঁর কথার কী জবাব দেব!”

এ দিন অবশ্য সারদার ভরাডুবির জন্য কুণালকেই দায়ী করেছেন সারদার প্রাক্তন কর্তা তথা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সৌমিত্র রায়। তদন্তকারীদের তলব পেয়ে এ দিন সকাল দশটা নাগাদ তিনি সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে হাজির হয়েছিলেন। বেলা দু’টো নাগাদ বাইরে এসে সৌমিত্রবাবু বলেন, “২০১২ সালে সারদার পদ থেকে ইস্তফা দিই। তখন সুদীপ্ত সেন আমায় বলেছিলেন, সংবাদমাধ্যম ব্যবসাই তাঁকে ডুবিয়েছে। এর জন্য দায়ী কুণাল ঘোষ।”

মাস কয়েক আগে বিধাননগর পুলিশও সৌমিত্রবাবুকে তলব করেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সে সময় সৌমিত্রবাবু নিজেকে সারদার নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বলে জানিয়েছিলেন। এ দিন অবশ্য এই প্রাক্তন সেনাকর্তা দাবি করেন, সারদা কন্সট্রাকশন্সের সিইও ছিলেন তিনি।

এ দিন নিউটাউনের একটি মামলায় প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খানকে ডেকে পাঠিয়েছিল বিধাননগর কমিশনারেট। কিন্তু আসিফ আসেননি। তাঁর আইনজীবী লোকেশ শর্মা বলেন, “মেয়ের অসুস্থতার জন্য আসিফ হাজির হতে পারেননি। মেয়ে সুস্থ হলেই তিনি হাজির হবেন। তদন্তকারীদের সাহায্যও করবেন।” এ দিন সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল ব্যবসায়ী সজ্জন অগ্রবালের। কিন্তু তিনিও প্রতিনিধি পাঠিয়ে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন।

বস্তুত, সজ্জনবাবুর ছেলে সন্ধিরকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সজ্জনবাবুও সারদার হয়ে সেবি ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো নিয়ামক সংস্থার একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

saradha scam sounitra roy kunal ghosh CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE