Advertisement
E-Paper

জঙ্গি ঠেকাতে এত দিনে বিশেষ বাহিনী রাজ্যের, মদত কেন্দ্রেরও

মুম্বইয়ের জঙ্গি হামলায় টনক নড়েনি। ছ’বছর পরে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ প্রায় ঝুঁটি ধরে হুঁশ ফেরাল রাজ্য সরকারের! জঙ্গি মোকাবিলায় এত দিনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজস্ব আধা-সামরিক বাহিনী গড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। ২০০৮-এ মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পরে নিজেদের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধা-সামরিক বাহিনী গড়ার জন্য রাজ্যগুলিকে প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৩

মুম্বইয়ের জঙ্গি হামলায় টনক নড়েনি। ছ’বছর পরে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ প্রায় ঝুঁটি ধরে হুঁশ ফেরাল রাজ্য সরকারের! জঙ্গি মোকাবিলায় এত দিনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজস্ব আধা-সামরিক বাহিনী গড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ।

২০০৮-এ মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পরে নিজেদের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধা-সামরিক বাহিনী গড়ার জন্য রাজ্যগুলিকে প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। মহারাষ্ট্র-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য তখনই এই ধরনের বাহিনী তৈরি করে। কিন্তু বাম জমানার বাংলা তাতে রাজি ছিল না। রাজ্যে পালাবদলের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও কেন্দ্রের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরে রাজ্য বুঝতে পেরেছে, বড়সড় জঙ্গি হামলা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নিজস্ব বিশেষ বাহিনী থাকা জরুরি। তার পরেই কেন্দ্রের কাছে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজস্ব বাহিনী তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয় কেন্দ্রের কাছে। সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্র। চলতি বছরেই ওই বাহিনী গড়ার কাজ শুরু হবে। পোশাকি নাম হচ্ছে স্পেশ্যাল ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন (এসআইআরবি)।

টাকা আসবে কোথা থেকে?

মেলা-উৎসবের জন্য অর্থ থাকলেও জঙ্গি মোকাবিলায় পুরোদস্তুর একটি বাহিনী তৈরির টাকা রাজের হাতে নেই। মমতার সরকার বাধ্য হয়েই ওই বাহিনী তৈরির জন্য নরেন্দ্র মোদীর সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ আধুনিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ওই বাহিনী গড়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র। তবে এসআইআরবি তৈরির প্রাথমিক খরচই বহন করবে তারা। প্রথম বছরের পর থেকে ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় সহায়তার পরিমাণ কমবে। ১০ বছর পরে ওই বাহিনীর আর্থিক দায়দায়িত্ব পুরোপুরি রাজ্যের উপরে বর্তাবে। তবে প্রয়োজনে ওই বাহিনীকে অন্য রাজ্যে ব্যবহার করতে পারবে কেন্দ্র। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় সাহায্যে এমন বাহিনী গড়ার নজির আছে। “অতীতে কেন্দ্রের সহায়তায় সেন্ট্রাল ইনসার্জেন্সি ফোর্স (সিআইএফ) গড়া হয়েছে এ রাজ্যে। এসআইআরবি তৈরির পরে সিআইএফ-কে তার মধ্যেই মিশিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ভবিষ্যতে ভাবনাচিন্তা করা হবে,” বলেছেন ওই স্বরাষ্ট্র-কর্তা।

এসআইআরবি-র সদর দফতর কোথায় হবে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এখনও তা চূড়ান্ত করেনি। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই সদর গড়া হবে বীরভূম বা জঙ্গলমহলের কোনও জেলাতেই। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে ১১০৭ জনকে নিয়ে এসআইআরবি-র কাজ শুরু হবে। বাহিনীর মাথায় থাকবেন এক জন কম্যান্ড্যান্ট। তাঁর নীচে তিন জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট। তাঁরা সদর দফতর, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে থাকবেন। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে থাকবেন ২৭৫ জন কর্মী। এ ছাড়া সদর দফতর এবং নিরাপত্তা বাহিনীতে থাকবেন যথাক্রমে ১৪৭ এবং ৬৮৫ জন। সেনাবাহিনী এবং এনএসজি-র অধীনে প্রাথমিক ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এসআরআইবি-কে। যাতে তারা মাওবাদী হানা-সহ যে-কোনও বড় ধরনের জঙ্গি হামলা কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব নিতে পারে। নবান্নের খবর, ওই বাহিনীর পোশাক কী হবে, মুখ্যমন্ত্রী তা পছন্দ করে দিয়েছেন। সেনাবাহিনী বা আধা-সামরিক বাহিনীর ধাঁচেই জংলা পোশাক হবে এসআরআইবি-র।

এসআরআইবি গড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের পাঁচটি কমিশনারেটে সাইবার ক্রাইম থানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে এই ব্যাপারে প্রস্তাব পেশ করা হবে। রাজ্যে এখন শুধু কলকাতা পুলিশেরই এমন থানা রয়েছে। তবে সাইবার ক্রাইম থানা খোলার জন্য নতুন কোনও কর্মী নিয়োগ করা হবে না।

militant west bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy