সকাল থেকেই কালো মেঘে ঢেকে ছিল আকাশ। রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলাতেই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে শনিবার। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। টানা তাপপ্রবাহের পরে হালকা বৃষ্টি জনজীবনে স্বস্তির ছোঁওয়া দিলেও এ দিন দক্ষিণবঙ্গে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের, আহত দশ। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে ঝড়ের সময়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের, জখম হয়েছেন সাত জন।
শনিবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির উত্তর গোপালনগরের মুসলিমপাড়ায় জমিতে কাজ করার সময়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় হাসিম সর্দার (২৪) ও তাঁর বোন পাপিয়া বিবির (২০)। গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে স্থানীয় বাণেশ্বরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।
এ দিন সকালে পুরুলিয়ার কাশীপুরের কুলডি গ্রামে বাড়ির উঠোনে কাজ করার সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয় সালেহিম আনসারির (৩২)। ওই সময়েই পুরুলিয়া মফস্সল থানার বালিগাড়া গ্রামে সব্জি বাগানে কাজ করার সময় বজ্রাপাতে মারা যান বিমল মাহাতো (২৪) নামে এক যুবক। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে বাজ পড়ে আহত হন পাড়া থানার কাল্লা গ্রামের বাসিন্দা বাদল মাহাতো (২৪)। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
শনিবার সকাল থেকেই আকাশ কালো করে মেঘ জমেছিল বীরভূমেও। দিনমজুরের কাজ করতে বেরিয়ে খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর গ্রামের সনাতন থান্ডার (৩৫) বজ্রাঘাতে মারা যান। ওই সময়েই বাজ পড়ে মারা যান দুবরাজপুর থানার অমুরী গ্রামের শেখ সাদ্দাম হোসেন (২৩)। বর্ধমানের মেমারির পাহারহাটিতে এ দিন সকালে মাঠে চাষের কাজ করার সময় বাজ পড়ে আহত হন ১০ জন। তাঁদের পাহারহাটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়কামাত এবং জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নগর বেরুবাড়ির গোয়ালডাঙা গ্রামে বাজ পড়ে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। মৃতদের নাম কান্তেশ্বর বর্মণ (৫২) এবং ছানুরাম সরকার (৬৫)। দুপুরে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে একই ভাবে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। মৃতদের নাম সহিদুল হক (৩০) ও মইনুল হক (৩৫) ও সুধাংশু দাস (৬৫)। সহিদুল ও মইনুল হক তুফানগঞ্জের বালাভূত এলাকার বাসিন্দা। সুধাংশু দাসের বাড়ি ওই থানার মারুগঞ্জের ভেলাকোবা এলাকায়। কোচবিহার কোতোয়ালি থানা এলাকায় বজ্রপাতে জখম হন মাকচু বিবি, অঞ্জু বিবি ও সালেমা বিবি মাকচু।
এদিনই সকালে মাঠে বেঁধে রাখা ছাগল বাড়িতে আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ময়নাগুড়ির বড়কামাত গ্রামের কান্তেশ্বরবাবু। ঝড় উঠেছে দেখে ক্ষেত থেকে ফেরার সময় বাজ পড়ে মারা যান গোয়ালডাঙা গ্রামের ছানুরামবাবু। দু’মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ির বারান্দায় বসেছিলেন ভাণ্ডানি গ্রামের হেমন্তী রায়। তিনি বজ্রপাতের সময় ছিটকে পড়ে যান। বজ্রাঘাতে জখম হন রাজারহাট গ্রামের ১৮ বছরের প্রসেনজিৎ রায় এবং ওই এলাকারই বাসিন্দা ঊষা রায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy