Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ঠান্ডা আর কুয়াশায় ব্যাহত রেল-উড়ান

ঘন কুয়াশায় এক হাত দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। শুক্রবার মাঝরাত থেকে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতির জেরে শনিবার সকাল থেকে ব্যাহত হল রেল ও বিমান পরিষেবা। কিছু ট্রেন বাতিলও হয়েছে। চূড়ান্ত নাকাল যাত্রীরা। কুয়াশার জন্য এ দিন সকাল থেকে হাওড়া স্টেশনে দূরপাল্লার সব ট্রেন ঢুকতে দেরি হয়েছে বলে জানান পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র। প্রতিটি ট্রেন গড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে হাওড়া পৌঁছেছে বলে জানান রবিবাবু।

কুয়াশা ঘেরা হাওড়া স্টেশন। শনিবার।  নিজস্ব চিত্র

কুয়াশা ঘেরা হাওড়া স্টেশন। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৯
Share: Save:

ঘন কুয়াশায় এক হাত দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। শুক্রবার মাঝরাত থেকে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতির জেরে শনিবার সকাল থেকে ব্যাহত হল রেল ও বিমান পরিষেবা। কিছু ট্রেন বাতিলও হয়েছে। চূড়ান্ত নাকাল যাত্রীরা।

কুয়াশার জন্য এ দিন সকাল থেকে হাওড়া স্টেশনে দূরপাল্লার সব ট্রেন ঢুকতে দেরি হয়েছে বলে জানান পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র। প্রতিটি ট্রেন গড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে হাওড়া পৌঁছেছে বলে জানান রবিবাবু।

পাশাপাশি, অনেক দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়তেও দেরি হয়েছে। যার মধ্যে রাজধানী এক্সপ্রেসও রয়েছে। হাওড়ার মতো দেরিতে ছেড়েছে শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসও। পূর্বা এক্সপ্রেস এ দিন সকালের পরিবর্তে সন্ধ্যায় হাওড়া ছেড়েছে বলে জানান রবিবাবু। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, জনশতাব্দী, ইস্পাত ও ফলকনামা এক্সপ্রেসও দেরিতে রওনা দিয়েছে। প্রায় সব লোকাল ট্রেনই দেরিতে চলাচল করেছে। সকালে কুয়াশার জন্য একটি লোকাল ট্রেন বাতিল হয়েছে বলেও জানান সঞ্জয়বাবু।

উড়ান বাতিলের খবর অবশ্য নেই। কিন্তু দৃশ্যমানতা কম থাকায় সকাল সাড়ে আটটার আগে কোনও বিমানই উড়তে পারেনি বলে কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর। সাধারণত, ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত দৃশ্যমানতা থাকলে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামা করতে পারে। কিন্তু এ দিন সকালে তা ৫০ মিটারে কম দূরত্বে নেমে যায়। যার জেরে সকালের দিকে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে বিমানের ওঠা-নামা।

শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই বিমানবন্দর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় হাল্কা কুয়াশা জমতে থাকে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে দৃশ্যমানতা ৩০০ মিটারের নীচে নামতে থাকে। ক্রমেই তা পৌঁছে যায় ৫০ মিটারে। প্রায় এক ঘণ্টা পরে দৃশ্যমানতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অবশেষে সাড়ে ৮ টার কিছু আগে তা ৩০০ মিটারের উপরে ওঠে। তার পরে চালু হয় বিমান চলাচল।

কুয়াশার জেরে এ দিন সকালে এয়ার ইন্ডিয়া, জেট, ইন্ডিগো ও অন্যান্য সংস্থা মিলিয়ে ৩০-টিরও বেশি উড়ান নির্দিষ্ট সময়ের তিন ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ওড়ে। যার প্রভাব পড়ে সারাদিনের উড়ানের সময়সূচিতে।

কেন এত কুয়াশা? আবহবিদেরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়। তাতে উত্তুরে হাওয়ার চলাচল ব্যাহত হয়। যার প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে থাকা জলীয় বাষ্প সরতে না পারায় বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ও উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঘন কুয়াশা তৈরি হয়।

হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসকে সত্যি প্রমাণ করে এ দিনই আবার শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যের দুই জেলায়। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে শনিবার তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্নের থেকে পাঁচ ডিগ্রিরও বেশি নীচে নেমে যায়। শ্রীনিকেতনে এ দিন তাপমাত্রা ছিল ৭.৫ ডিগ্রি, বহরমপুরে ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দীঘা, ডায়মন্ড হারবারের মতো উপকূলবর্তী এলাকাতেও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে। কলকাতার তাপমাত্রা অবশ্য শুক্রবারের থেকে সামান্য বেড়ে এ দিন ১১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। আজ, রবিবারও মহানগরের তাপমাত্রা একই রকম থাকবে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে কাল, সোমবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহবিদেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE