বাড়তে বাড়তে বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৪৯ শতাংশ। কিন্তু আপাতত রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বুধবার আলিপুরদুয়ারে এক অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রথম থেকেই প্রতি বছরের (২০১২-’১৪) জানুয়ারি মাসে এক দফা ডিএ দিচ্ছিল। কর্মীদের আশা ছিল, এ বারেও ব্যতিক্রম হবে না। কিন্তু এ বার এখনও ডিএ নিয়ে কোনও ঘোষণা করেননি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। দু’লক্ষ কোটি টাকা দেনার কারণ দেখিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় এ দিন শিক্ষামন্ত্রী জানান, এখন ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়।
তৃণমূল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা ক্ষমতায় এলে সরকারি কর্মীদের সব দাবি পূরণ করবে। সরকারি কর্মী-নেতাদের অভিযোগ, মমতার সরকার সেই প্রতিশ্রুতি তো রাখেইনি। উল্টে কেন্দ্রের সঙ্গে ডিএ-র ব্যবধান বেড়েই চলেছে। নবান্নের খবর, এই আমলে গত তিন বছরে তিন কিস্তি ডিএ (বছরে এক বার) পেয়েছেন কর্মীরা, সব মিলিয়ে যা ২৩ শতাংশ। অথচ কেন্দ্র বছরে দু’বার ডিএ দেয়। বাম আমলেও মোটামুটি এই নিয়ম মানা হতো। কর্মী-নেতাদের বক্তব্য, ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও এই আমলেই বকেয়া ডিএ-র পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। তাঁদের কথায়, “এত দিন তবু বছরে এক বার ডিএ মিলত। সেটা বছরের গোড়া থেকেই। এ বার ঘোষণাই হল না।”
পার্শ্বশিক্ষক এবং এসএসকে (শিশু শিক্ষা কেন্দ্র) সহায়িকাদের সাম্মানিক বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন, “মাইনে দেওয়ার টাকা নেই। ডিএ দিতে পারছি না। তবে আপনাদের বিষয়ে ভাবা হবে।” তাঁর সংযোজন, শুধু শিক্ষক নয়, সরকারি কর্মীদেরও এ বার ডিএ হয়নি। রাজ্য দু’লক্ষ কোটি টাকার দেনায় রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে ডিএ বাড়ানো সম্ভব নয়। পার্থবাবুর কথায়, “সরকারি কর্মী ও শিক্ষকেরা তো ফি-মাসে মাইনে পাচ্ছেন। ডিএ নিয়েও ভাবছি।”
ডিএ নিয়ে শুধু বিরোধী দলের সমর্থক সরকারি কর্মী ইউনিয়ন নয়, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ কর্মী-নেতারাও অস্বস্তিতে রয়েছেন। গোষ্ঠী-কোন্দল এড়াতে তৃণমূলের চারটি সরকারি কর্মী ইউনিয়নকে মিলিয়ে দিয়ে একটি সংগঠন গড়া হয়েছে। ওই সংগঠনের মাথায় রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনিই এ দিন সরকারের মনোভাব জানানোয় কর্মী-নেতারা বিপাকে পড়েছেন। আড়ালে অনেকেই বলছেন, “ডিএ এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিয়ে সরকারের অবস্থান সমর্থন করা যাচ্ছে না। আবার প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করাও যাচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy